দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে পারছি না : দুদক চেয়ারম্যান

Slider জাতীয়

296875_138

 

 

 

 

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, দুর্নীতি দমনে গণমাধ্যম, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ জনসাধারণের সাহায্য দরকার। জনগণকে যদি সচেতন না করা যায়, তাহলে আমার মনে হয় যে গতিতে দুর্নীতি চলছে, সে গতিতে প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না। তিনি বলেন- দুর্নীতির নেপথ্যে আমরা সবাই। আপনি যদি প্রতিরোধ করতে না পারেন, আপনিও এর অংশ হবেন। দুর্নীতি হচ্ছে, প্রতিরোধ করতে পারছি না। দুর্নীতি দমন কমিশনও পারছে না, ব্যাপক জনগণের অংশগ্রহণও হচ্ছে না। রোববার দুপুরে সংস্থাটির নিজস্ব কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

টিআইবির রিপোর্ট সম্পর্কে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, অনেক দেশ দুর্নীতির সূচক কমাতে পারেনি। আবার কিছু দেশ এক পয়েন্ট কমিয়েছে। বাংলাদেশ সূচকে দুই পয়েন্ট নিচে নেমেছে। এটা অনেক বড় অর্জন, তবে আমি মনে করি এটা নিয়ে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। দুর্নীতিবাজ বড়-ছোট বলে কিছু নেই। সব দুর্নীতিই সমান। যে কোনো দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপনাকে ব্যবস্থা নিতে। এখানে বিভাজন করা যাবে না।

দুদক দুর্নীতি প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুদক ৩৭ শতাংশ থেকে ৭৪ শতাংশ দুর্নীতির দায়ে শাস্তি দিয়েছে, এটা আপনারাই পত্রিকায় লিখেছেন। দুদক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারছে। তবে কাঙ্খিত মাত্রায় কাজ করতে পারছি না।
বিদেশে অর্থ পাচারের কারণে অর্থনীতি শূন্য হয়েছে- এটা ঠিক নয় উল্লেখ করে ইকবাল মাহমুদ বলেন, যদি অর্থনীতি শূন্য হয়ে থাকবে, তাহলে দেশে গ্রোথ-ইকোনোমিক এক্টিভিটিস বাড়ছে কিভাবে। অর্থ পাচার হচ্ছে, এটা সত্য। তবে এ সমস্যা শুধু বাংলাদেশের নয়, এটা বৈশ্বিক সমস্যা। বিশ্বের সব জায়াগায় অর্থ পাচার হচ্ছে। এ বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধানের আইনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কারণ মানিলন্ডারিং আইনে দুদক কেবল সরকারি কর্মকর্তাদের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারে। বেসরকারি পর্যায়ে তদন্ত করবে এনবিআর, বাংলাদেশ ব্যাংকের এফআইইউ বা সিআইডি।

মালয়েশিয়া বা অন্য দেশে সেকেন্ড হোম বানানো হচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের বিষয়টি দেখার দায়িত্ব আমাদের। আমি তালিকা খতিয়ে দেখেছি, সেখানে সরকারি কর্মকর্তা দুইজনের বিষয়ে জানা গেছে, তাদের বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। আর ব্যাপক মানুষের যে বাড়ি তৈরি সে বিষয়ে সরকারের সিআইডি-এনবিআর দেখবে।

ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতির বিষয়ে দুদকের উদাসীনতার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইকবাল মাহমুদ বলেন, কমিশন কোনো ব্যক্তির সামাজিক বা রাজনৈতিক পরিচয় দেখে না। কমিশন কারো প্রতি অতি উৎসাহী বা অতি উদাসীনতা দেখায় না। মামলা হয় অনুসন্ধানের ভিত্তিতে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি পরিচয় কোনো বিষয় নয়। কমিশনের কার্যক্রমে কোনো রাজনৈতিকে ইস্যুকে বিবেচনা করা হয় না। ক্ষমতাসীন অনেকের বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে।

বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির চার্চশিটের ব্যাপারে তিনি বলেন, এটা অনেক পুরনো প্রশ্ন। আপনারা (সাংবাদিকরা) আমাদের সাথে যুক্ত হন এবং বের করেন বেসিক ব্যাংকের টাকাটা কোথায় গেছে? এটা আগে বের করতে হবে টাকা গেছে, বঙ্গোপসাগরে না আপনি বা অন্য কেউ নিয়েছে। এটা কোথায় গেছে, বিষয়টি এত সহজ না। আমরা ইনভেস্টিগেশন করছি। এটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোর্টে কোনো রিপোর্ট বা চার্জশিট দেবো না।

বিষয়টি নিশ্চিত না হয়ে মামলা করার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমরা মামলা করেছি দুর্নীতির বিরুদ্ধে, কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়। মামলা হওয়াটা স্বাভাবিক। দুর্নীতি খুঁজতে খুঁজতে ব্যক্তিকে পাওয়া যাবে। বেসিক ব্যাংকের বিরুদ্ধে ৬২টি মামলা হয়েছে আরো মামলা পাইপ লাইনে আছে। আপনারা যেমন দেখেন, কোনো মার্ডার হলে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *