দোকলাম তুলে দিতে ভুটানকে টোপ চীনের, অস্বস্তিতে ভারত

Slider সারাবিশ্ব

296487_170

 

 

 

 

চীন-ভুটান-ভারত সীমান্তে অবস্থিত দোকলামের নিয়ন্ত্রণ নিরঙ্কুশভাবে নিতে চায় চীন। এই ভূখণ্ড নিয়ে চীন ও ভুটানের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। কিন্তু ভারত তাতে নাক গলাতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তবে এবার চীন মালভূমিটির নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া চীন। এজন্য ভুটানকে বেশ লোভনীয় টোপ দিয়েছে চীন। এতে ভুটান যেমন লাভবান হবে, চীনের সাথে তাদের বিরোধেরও অবসান ঘটবে। তবে ভারত পড়বে অস্বস্তিতে। এ নিয়ে কলকাতাভিত্তিক আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন এখানে প্রকাশ করা হলো।

দোকলাম মালভূমি নিয়ে দীর্ঘ সংঘাতের পর জট খুলেছিল। কিন্তু ফের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, সম্প্রতি ভুটানকে প্রস্তাব দিয়েছে চীন— দোকলামের ২৬৯ বর্গ কিলোমিটার ভূখণ্ড তারা নিতে চায়। বিনিময়ে দক্ষিণ চীনের পাসামলুং এবং জাকারলুং উপত্যকার ৪৯৫ কিলোমিটার জমি তারা থিম্পুকে ছেড়ে দিতে তৈরি। এই দু’টি ভূখণ্ডের দখল কার, তা নিয়েও মতভেদ রয়েছে চীন ও ভুটানের। প্রস্তাবটি নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও আলোচনা এগোচ্ছে দু’দেশের মধ্যে।

দু’টি দেশের মধ্যে কোনো চুক্তি হলে, তৃতীয় দেশের কিছু বলার থাকে না। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে এ’টিই সব চেয়ে বেশি অসহায়তার ক্ষেত্র। কারণ বিষয়টি নিছক অন্য দু’টি দেশের হলেও বেইজিং যে ভূখণ্ডটি দখলে আগ্রহী, সেটি শিলিগুড়ি করিডর থেকে খুবই কাছে। গত বছর এখানেই ভারত ো চীনের সেনারা মুখোমুখি প্রায় তিন মাসেরও বেশি দাঁড়িয়েছিল। এই সংঘাতের ছায়া পড়ে ভারত চীন সম্পর্কেও। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের ‘কড়া কূটনীতি’ থেকে সরে এসে দিল্লি তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিব এস জয়শঙ্করের প্রস্তাবিত দৌত্যের পথে হাঁটায় জট ছাড়ে। কিন্তু ভারতের ঘাড়ের কাছে থাকা ওই ভূখণ্ডে চীনা সক্রিয়তা যে অদূর ভবিষ্যতে ফের মাথাব্যথার কারণ হতে পারে, ঘরোয়াভাবে তা স্বীকার করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

image৩৩৩

 

 

 

 

তাৎপর্যপূর্ণভাবে গত কাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী এই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করে অস্বস্তিতে ফেলে দেন সরকারকে। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রসবিচ বিজয় গোখলে। সূত্রের খবর— রাহুল জানতে চান, দোকলাম চীনের হাতে চলে গেলে নিরাপত্তার প্রশ্নে ভারত ওই অঞ্চলে কী ভাবে নিজেদের তৈরি করবে? স্পষ্ট কোনো উত্তর দিতে পারেনি পররাষ্ট্রসচিব বা প্রতিরক্ষা সচিবের পক্ষে।

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, দোকলামের দখল নিতে বেইজিং বহু দিন ধরেই সচেষ্ট। এই ভূখণ্ডের দখল পেলে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলে নজরদারি বাড়ানোই শুধু নয়, অবস্থানগত অনেক সুবিধাও আদায় করে নিতে পারবে চীন। ৬২ সালে ভারত-চীন যুদ্ধের ঠিক পাঁচ বছর পর ওই অঞ্চলে ভারতীয় সেনার হাতে পর্যুদস্ত হতে হয়েছিল

চীনের সেনাদের। তারও অনেক পরে ৮৬ সালের ‘অপারেশন ফ্যালকন’-এর মাধ্যমে অনুপ্রবেশকারী চীনা সেনাকে ফেরত পাঠায় ভারত। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে রাস্তা বানানো অথবা সামরিক ঘাঁটি তৈরির জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে চলেছে চীন। কিন্তু সীমান্ত নিয়ে বিতর্ক থাকায় সুবিধা করতে পারেনি।

কিন্তু দোকলাম চীনের দখলে চলে গেলে এই অঞ্চলে সতর্কতা অনেক গুণ বাড়াতে হবে— এমনটাই আশঙ্কা করছে কেন্দ্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *