শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি, যা বললেন ডেপুটি স্পিকার

Slider জাতীয়

291409_181

 

 

 

 

প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে ব্যর্থ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে সংসদে। গতকাল সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এ দাবি জানান জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। প্রশ্নপত্র ফাঁস মহামারি রূপ নিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, অবিলম্বে শিক্ষামন্ত্রী আপনার ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও অনিয়ম স্বীকার করে পদত্যাগ করুন, নতুবা প্রধানমন্ত্রী তাকে বরখাস্ত করে নতুন মন্ত্রী নিয়োগ করুন।

তার বক্তব্যের শেষে ডেপুটি স্পিকার মো: ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি শুনেছেন। তিনি তার বিবেক বিবেচনায় জাতির স্বার্থে যতটুকু করার প্রয়োজন অবশ্যই তিনি করবেন।

জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, প্রশ্নফাঁস মহামারি আকারে বিস্তার লাভ করছে। এটা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। গত রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছিল, প্রশ্নফাঁস ধরিয়ে দিতে পারবে তাকে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কৃত করা হবে। অথচ আজ সোমবার তুষার শুভ্র নামে একটা সাইটে বলা হয়েছে, ইংরেজি প্রশ্ন আছে সংগ্রহ করতে হলে এত টাকা লাগবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অনেক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হয়েছে, হচ্ছে। বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এই কয়েক বছরে আমাদের অনেক অর্জন হয়েছে; কিন্তু আগামী প্রজন্মকে যদি সত্যিকারের শিক্ষায় শিক্ষিত না করতে পারি তাহলে অর্থহীন। তিনি আরো বলেন, আগামী প্রজন্মকে যদি সত্যিকার শিক্ষায় শিক্ষিত করতে না পারি, আর শুধু সনদ বিক্রির জন্য যদি শিক্ষিত করি তাহলে তো কিছুই শিখবে না। এই শিক্ষা অর্থহীন। আমরা চাই সত্যিকার শিক্ষা। প্রধানমন্ত্রী চান জ্ঞানভিত্তিক সমাজ, আমরাও চাই জ্ঞানভিত্তিক সমাজ।

জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, আমরা আগামীতে কাদের হাতে দেশটা দিয়ে যাব। শিক্ষিত সমাজ ছাড়া সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারব না। কয়েক দিন আগে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা অধিদফতরের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, আপনারা ঘুষ খান সহনীয়পর্যায়ে। তিনি এও বলেছেন আমিও ঘুষ খাই, অন্য মন্ত্রীরাও ঘুষ খান। এটা বলার পরে উনি মন্ত্রী হিসেবে থাকতে পারেন? আর একজন মন্ত্রী একথা বলতে পারেন? এটা যখন ছাত্ররা শুনবে মন্ত্রী বলছেন সহনীয়পর্যায়ে ঘুষ খেতে তাহলে প্রশ্নফাঁস ঠেকাবেন কিভাবে। ওনার উচিত ছিল সেদিনই পদত্যাগ করা।

প্রধানমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে বাবলু বলেন, মন্ত্রী যখন বলে ঘুষ সহনীয়মাত্রায় খেতে তখন তার কথা তার সচিব শুনবে না, অধিদফতরের কর্মকর্তারা শুনবেন না, কেউ শুনবেন না। মন্ত্রী যেখানে ঘুষ খেতে উৎসাহিত করছেন, তাহলে কিভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ন্ত্রণ করবেন এটা আমার বোধদয় হয় না।

রবার্ট অসম্ভব বাজে, অপদার্থ ও বদমাইশ : অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

এবার বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট রবার্ট জোয়েলিকয়ের কড়া সমালোচনায় ‘তুলোধুনা’ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট রবার্ট জোয়েলিক একজন অসম্ভব বাজে, অপদার্থ ও বদমাইশ লোক। এ লোকটিও বিশ্বব্যাংকের তার চাকরির শেষ দিনে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন চুক্তি বাতিল করে দেন। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কার্যালয়ে গতকাল এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আসার দুই বছরের মধ্যে ২০১১ সালে একটি মহাসঙ্কটে পড়েছিলাম। বিশ্বব্যাংকের একজন সভাপতি ছিলেন, রবার্ট জোয়েলিক। অসম্ভব বাজে, অপদার্থ লোক। সেই অপদার্থটি চাকরির শেষ দিন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করল, পদ্মা সেতুতে কোনো একটি পরামর্শক নিয়োগ করার জন্য চক্রান্ত করছি। ঘুষ নেয়ার চক্রান্ত। ঘুষ-টুষ তো পায় নেই। কিন্তু চক্রান্ত হচ্ছে বলে পদ্মা সেতুর ঋণ বাতিল করে দিলো জোয়েলিক। বোর্ডের কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই সে কাজটি করল। আমাদের সৌভাগ্য, সেই বদমাইশটি সে দিনই বিদায় হয়।’
অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের সময় তার পাশে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা মশিউর রহমান, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, এনবিআর চেয়ারম্যান মো: মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের ঋণ বাতিলের ঘটনায় এই তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। পরে যা প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়টি উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা চারজন জোয়েলিকের চক্রান্তের মধ্যে পড়ে যাই। অবশ্য প্রকাশ্যভাবে পাঁচজন চিহ্নিত হই। প্রথমজন হলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। দ্বিতীয় আমি। তৃতীয় সৈয়দ আবুল হোসেন। চতুর্থ মশিউর রহমান। পঞ্চম মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তিনি ছিলেন যোগাযোগ সচিব। বিশ্বব্যাংককে সন্তুষ্ট করার জন্য আমরা অনেক কিছু করেছিলাম।’ তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ও আমি যুদ্ধ চালিয়ে যাই। অবশেষে বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রেসিডেন্ট এক থেকে দেড় বছর পর সিদ্ধান্ত বললেন, ঋণ বাতিল করা ভুল ছিল। তবে নতুন করে কিছু শর্ত দিলো। তাতে আরো এক বছরের বেশি লেগে যেত। তখন আমরা পদ্মা সেতুর প্রকল্পটি নিয়ে নিলাম। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, নিজেদের অর্থায়নে করব।’

নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেন, ‘খুশির খবর হলো পদ্মা সেতু নির্মিত হচ্ছে। আগামী বছরের জুনে আপনারা অবশ্যই পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যেতে পারবেন। যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব চেয়েছিলেন চলতি বছরের ডিসেম্বরে কাজ শেষ করতে। তবে সেটি সম্ভব হবে না। কারণ সব ক’টি স্প্যান এখনো বসে নেই।’

কর বাড়াতে আরো উদ্যোগী হওয়ার জন্য এনবিআর প্রতি আহ্বান জানিয়ে চান অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেন, দাতা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে সহায়তা কমে যাওয়ায় উন্নয়নের জন্য কর আদায় বাড়াতে আরো উদ্যোগী হতে হবে এনবিআরকে।
তিনি বলেন, ‘তখন (দেশের জন্মলগ্নে) দাতাদের কাছ থেকে আমরা যা পেতাম, সেটি আমাদের জাতীয় আয়ের প্রায় ৯-১০ শতাংশের মতো ছিল। এখন ১ দশমিক ৪ শতাংশ হবে। তবে গত কয়েক বছরে তা কিছুটা বেড়ে ২ থেকে আড়াই শতাংশের মতো হতে পারে। এখন আমরা ২০০ কোটি ডলারের মতো প্রতি বছর তাদের কাছ থেকে সাহায্য হিসেবে পাই।

বাজেটের আকার ৯৫ হাজার কোটি থেকে ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকায় উন্নীত করতে পারলেও জাতীয় আয়ের অনুপাত হিসেবে করের অবদান এখনো সারা বিশ্বের নি¤œতম পর্যায়ে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, করহার বাড়ানোর জন্য আরো কিছু উদ্যোগ নিতে হবে। করদাতাদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। যেটা বছর তিনেক আগেও ১৪ লাখ ছিল, সেটা এখন ৩৩ লাখ। অনুষ্ঠানে সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে ঢাকা জেলা ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের ‘কর বাহাদুর পরিবার’র সনদ দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদানকারী হিসেবে ১০ প্রতিষ্ঠানকে সনদ দেয়া হয়। শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে চারটিই প্রাণ গ্রুপের।

সনদ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, র্যাংগস ইলেকট্রনিকস, হাতিল কমপ্লেক্স, সিপি বাংলাদেশ, আরএফএল প্লাস্টিকস, বাটারফ্লাই মার্কেটিং, ডিউরেবল প্লাস্টিক, আকতার ম্যাট্রেস, রংপুর মেটাল ও এগ্রিকালচারাল মার্কেটিং কোম্পানি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *