কাল শুরু রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন, উদ্বেগ-অভিযোগ

Slider সারাবিশ্ব

101634_rohinga

 

ঢাকা: আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন। তবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে কাজ করছে উদ্বেগ, উত্তেজনা। রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন এমন কয়েকজন বলেছেন, তাদেরকে হুমকি দিচ্ছেন আইন প্রয়োগকারী একটি সংস্থার কর্মকর্তারা। ওইসব কর্মকর্তা বলছেন, যদি তারা (রোহিঙ্গারা) ফিরে না যান তাহলে তাদেরকে দেয়া খাদ্যের রেশন কার্ড কেড়ে নেয়া হবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে সিঙ্গাপুরের অনলাইন দ্য স্ট্রেইটস টাইমস ও ভারতের অনলাইন দ্য টেলিগ্রাফ। এতে বলা হয়, বয়স্ক রোহিঙ্গারা বলেছেন, গত দু’দিনে হয় তাদেরকে ডেকে নিয়েছে ওই সংস্থার কর্মকর্তারা, না হয় তারা নিজেরা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাত করেছে।

এ সময় রোহিঙ্গাদেরকে দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য তাদের পরিবারের সদস্যদের তালিকা করতে বলা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের ৭০ জনেরও বেশি ক্যাম্প নেতার মধ্য থেকে চারজন এমন কথা বলেছেন। এসব নেতা হাজার হাজার রোহিঙ্গার প্রতিনিধিত্ব করছেন। তারা শনিবার ঘুমধুমে আইন প্রয়োগকারী ওই সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। ঘুমধুম ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা মুসা বলেছেন, লোকজন দেশে ফিরে যেতে প্রস্তত নয়। এ জন্য আমরা তাদেরকে পরিবারের সদস্যদের তালিকা দিতে না পারি নি। ফলে তারা আমাদেরকে দেয়া ডব্লিউপি কার্ড ফেরত দিতে হবেলেছেন। উল্লেখ্য এই কার্ডটি রোহিঙ্গাদের দিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পক্ষ থেকে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের ওই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একজন মুখপাত্র বলেছেন, তার সংস্থার লোকজন এই কার্ড কেড়ে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে তার জানা নেই। এরই মধ্যে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবিরগুলো পরিদর্শন করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াংহি লি। তার সফরের সময় অনেক রোহিঙ্গা তাদের ফেরত পাঠানোর প্রতিবাদ জানিয়েছে নিজেদের পোশাককে ব্যানার হিসেবে ব্যবহার করে। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তার অধীনে বাংলাদেশ থেকে ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদেরকে দুটি রিসেপশন সেন্টারের মাধ্যমে গ্রহণ করার কথা জানায় মিয়ানমার। এরপর এসব রোহিঙ্গাকে একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে রাখার কথা বলা হয়। এ প্রক্রিয়া মঙ্গলবার শুরু হয়ে পরবর্তী দু’বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। রিপোর্টে বলা হয়, নিরাপত্তার বিষয়টিতে নিশ্চয়তা না দেয়া পর্যন্ত, তাদের পূর্ণাঙ্গ নাগরিকত্বের দাবি মিয়ানমার মেনে না নেয়া পর্যন্ত, তাদেরকে সংখ্যালঘু একটি জাতি হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চান না। এ ছাড়া তাদের যেসব বাড়িঘর, মসজিদ, স্কুল পুড়িয়ে দিয়েছে বা ধ্বংস করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তা পুনর্নির্মাণের দাবি করছে রোহিঙ্গারা। ওদিকে শরণার্থী বিষয়ক জাতিসংঘের হাই কমিশনার বার বার রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় ফিরে যাওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এ এজেন্সির নিরাপত্তা বিষয়ক সিনিয়র কর্মকর্তা ক্যারোলাইন গ্লুক গত শনিবার বলেছেন, এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের কোনো আলোচনার অংশীদার নয় ইউএনএইচসিআর। তবে রোহিঙ্গাদের কথা শোনার বিষয়টি নিশ্চিত করার প্রক্রিয়ায় তারা সমর্থন ব্যক্ত করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *