হোয়াটসঅ্যাপ নাকি ইনস্টাগ্রাম?

Slider তথ্যপ্রযুক্তি

b858ea728cb1aebf609633cadad58986-5a41b5d06980c

 

 

 

 

২০১৪ সালে ফেসবুক যখন ১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারে হোয়াটসঅ্যাপ কেনে, অনেকেই তখন রইরই করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। এক বছর পরই সেই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার অনেকটাই রূপান্তরিত হয়েছিল প্রশংসায়। তবে কারও কারও মনে একটু সংশয় থেকে গেল। অনেকেই ইনস্টাগ্রামের উদাহরণ টেনে বলেন, হোয়াটসঅ্যাপের ১৯ ভাগের ১ ভাগ মূল্যে কিনেও ইনস্টাগ্রাম থেকে ফেসবুকের আয় হোয়াটসঅ্যাপের তুলনায় ঢের বেশি।

কথা সত্য। আপাত দৃষ্টিতে দেখলে তা-ই মনে হবে। তবে হোয়াটসঅ্যাপ নিয়ে ফেসবুকের পরিকল্পনা দীর্ঘমেয়াদি। অন্তত তেমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির একজন সাবেক সফটওয়্যার প্রকৌশলী জেরেমি আর্নল্ড।

হোয়াটসঅ্যাপের তুলনায় বেশ সস্তায় ইনস্টাগ্রাম অধিগ্রহণ করে ফেসবুক। ২০১২ সালে, ‘মাত্র’ ১০০ কোটি ডলারে। এখন বছরে ১০০ কোটি ডলার নিট আয় আসে অ্যাপটি থেকে। দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারী ৩ থেকে ৫০ কোটিতে পৌঁছেছে। সব মিলিয়ে বললে ফেসবুকের জন্য চমৎকার বিনিয়োগ ছিল।

অন্যদিকে হোয়াটসঅ্যাপ চলছে অনেকটা ফেসবুকের শুরুর দিনগুলোর মতো। অর্থ আয়ের চেয়ে মনোযোগটা তাদের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে বেশি। অধিগ্রহণের পর থেকে এখন পর্যন্ত মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। এই ব্যবহারকারীদের বেশির ভাগের অবস্থান তথ্যপ্রযুক্তির উদীয়মান বাজারে। যেমন দক্ষিণ এশিয়া। এই অঞ্চলগুলোতে তাৎক্ষণিক বার্তা আদান-প্রদানের পাশাপাশি আরও অনেক ধরনের সেবা দেওয়ার সুযোগ আছে হোয়াটসঅ্যাপের।

আরেকটু পরিষ্কার করা যাক। হোয়াটসঅ্যাপের বড় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ‘লাইন’ এবং ‘উইচ্যাট’ তাদের প্রত্যেক ব্যবহারকারীর বিপরীতে বছরে যথাক্রমে ৭ ও ৯ ডলার করে আয় করে। একই হারে হিসাব করলে হোয়াটসঅ্যাপ বছরে ৯০০ কোটি থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারত। তবে বড় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বিজ্ঞাপন দেখালেও হোয়াটসঅ্যাপে কখনো বিজ্ঞাপন দেখাবে না বলে জানিয়েছে। তবে? মোবাইল পেমেন্ট!

চীনে উইচ্যাটের একটা বড় পরিচয় হলো দেশটির সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য লেনদেন অ্যাপ হিসেবে। অনলাইনে বিকিকিনি থেকে ঘরভাড়া দেওয়ার কাজও চীনারা উইচ্যাটের মাধ্যমে করে। ২০১৬ সালে শুধু উইচ্যাটের মাধ্যমে ২ লাখ কোটি ডলারের লেনদেন হয়েছে। সংখ্যাটা এত দিনে দ্বিগুণ হওয়ার কথা।

চীনের তুলনায় যদি দক্ষিণ এশিয়া কিংবা শুধু ভারতের কথা মাথায় নেওয়া হয়, তবে এই অঞ্চলে এখনো কোনো একক মোবাইল লেনদেন প্রক্রিয়াজাতকরণ অ্যাপ আধিপত্য বিস্তার করতে পারেনি। এখনো এই অঞ্চলে নগদ লেনদেনের পরিমাণ অনেক বেশি। আবার এই অঞ্চলে হোয়াটসঅ্যাপের আধিপত্য আছে। সুতরাং দক্ষিণ এশীয় বাজারে যদি জনপ্রিয়তম পেমেন্ট অ্যাপ বা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম হিসবে হোয়াটসঅ্যাপ আবির্ভূত হয়, তবে তা শুধু ফেসবুকের জন্য নয়, ইতিহাসের সবচেয়ে লাভজনক অধিগ্রহণের স্বীকৃতি পাবে।

মেহেদী হাসান, সূত্র: কোরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *