নদী ড্রেজিংয়ে ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন

Slider অর্থ ও বাণিজ্য

278287_180

 

 

 

 

দেশের নদীগুলোতে ড্রেজিংয়ে মাত্রাতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে। নদীভেদে ব্যয় পার্থক্য অনেক বেশি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বড় নদীর চেয়ে ছোট নদীর ড্রেজিং ব্যয় বেশি ধরা হচ্ছে। বছর বছর নদী ড্রেজিং কার্যক্রমের খরচ বাড়ছে। ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ে যমুনা নদীতে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় পড়ছে ১০ কোটি চার লাখ ৪৪ হাজার টাকা, অথচ ফরিদপুরের আড়িয়াল খাঁয় ড্রেজিং খাতে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অ্যাপ্রেইজাল সভায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছরই দেশের বিভিন্ন নদীর পেছনে ড্রেজিং কাজে অনেক অর্থ ব্যয় হচ্ছে। এমনকি ড্রেজিং কাজের জন্য বিদেশী উন্নয়ন সংস্থা বা উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণসহায়তা নেয়া হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ছোট-বড় ও মাঝারি আকারের প্রায় সাড়ে ৭০০টি নদী রয়েছে। কিন্তু ড্রেজিং ও অপরিকল্পিত ইন্টারভেনশনের কারণে দেশের প্রায় ২৩০টি নদী এখন মৃত। বর্তমানে নদীগুলো পলিউশন, সিলটেশন, তীর দখল, ব্লকেজ ইত্যাদির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আবার বেশির ভাগ শিল্প নদীর তীর ঘেঁষে স্থাপন করায় প্রতিদিন ১০০ টন শিল্পবর্জ্য নদীতে পড়ছে বলে নদী রক্ষা কমিশনের এক তথ্যে জানা গেছে।

পরিকল্পনা কমিশনে দেয়া প্রস্তাবনা থেকে জানা গেছে, ফরিদপুর জেলার আড়িয়াল খাঁর তীর সংরক্ষণ ও ড্রেজিং প্রকল্প ২৯৭ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সম্পূর্ণ সরকারি ব্যয়ে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এখানে ৫ দশমিক ৩৮০ কিলোমিটার নদীতীর সংরক্ষণ কাজ এবং ৬.৩০ কিলোমিটার নদী ড্রেজিংয়ের কাজ করা হবে। পাশাপাশি ঘাট নির্মাণ করা হবে ১০টি।

এ প্রকল্পে ৬.৩০ কিলোমিটার নদী ড্রেজিংয়ের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪৬ কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। আর প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় হবে ২৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এটাকে অত্যধিক বলে অভিমত প্রকাশ করেছে পরিকল্পনা কমিশন। তারা বলছে, ছোট নদীর বিবেচনায় এই ব্যয়; অথচ যেখানে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে যমুনা নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ে ৮ কিলোমিটারের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা। এখানে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় প্রাক্কলিত হয় ১০ কোটি টাকা। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, নির্ধারিত রেট শিডিউল অনুযায়ী এই ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে।

অন্য দিকে, নদী ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পে যেখানে বাঁধ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় প্রতি কিলোমিটারে ৩০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, সেখানে আড়িয়াল খাঁর ৫ দশমিক ৩৮০ কিলোমিটার তীর সংরক্ষণে ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ১৪০ কোটি ৭৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। এখানে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় পড়বে ২৬ কোটি ২০ লাখ টাকা। প্রতি মিটারে প্রাক্কলন করা হয়েছে দুই লাখ ৬২ হাজার টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *