মৌলভীবাজারে ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে আজ বৃহস্পতিবার কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সন্ধ্যার পর শহরে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে দুর্বৃত্তরা তাঁদের কুপিয়ে হত্যা করে চলে যায়।
নিহত দুজন হলেন মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সুলতান মো. সাবাব ও মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী নাহিদ আহমদ মাহী। সাবাব মৌলভীবাজার শহরের সৈয়দ মুজতবা আলী সড়কের আবু বকর সিদ্দিকীর ছেলে। নাহিদ মৌলভীবাজার সদর উপজেলার দুর্লভপুর গ্রামের বিল্লাল মিয়ার ছেলে।
কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সে বিষয়ে কেউ কিছু জানাতে পারেনি। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, সংগঠনের কোন্দল বা রাজনৈতিক কারণে এ ঘটনা ঘটেনি। অন্য কোনো কারণে এই জোড়া খুন হয়ে থাকতে পারে।
পুলিশ, হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্র বলেছে, সুলতান মো. সাবাব ও নাহিদ আহমদ মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের হোস্টেলের ফটকের সামনে দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন। দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁদের উপর্যুপরি আঘাত করে ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের মাঠে পড়ে থাকতে দেখে সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
সুলতান মো. সাহাবের এক মামা রাফাত চৌধুরী রাতে বলেন, ‘সাবাব আমার চাচাতো বোনের ছেলে। সে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের ছাত্র ছিল। ছাত্রলীগ করত। কী কারণে কী হয়েছে, এখন কিছুই বলতে পারছি না।’
হাসপাতালে নাহিদ আহমদের লাশের কাছে দাঁড়ানো তাঁর মামা মো. গোলাম ইমরান আলী বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমার ভাগনে খুব ভালো ছাত্র ছিল। আমি খুব কষ্ট করে পড়াচ্ছি। বিকেল পাঁচটায় একজনের কাছে প্রাইভেট পড়তে এসেছিল। আমি বিচার চাই না। আমার ভাগনেকে চাই।’
নাহিদের বাবা বিল্লাল মিয়া অঝোরে কাঁদছিলেন। কিছুই বলতে পারছিলেন না।
মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান রাতে বলেন, ‘নিহত দুজন ছাত্রলীগের কেউ না। কোনো কমিটি বা কোনো কিছুর সঙ্গে এরা জড়িত ছিল না।’
তবে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান বলেন, নিহত সাবাব ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। কিন্তু নাহিদ স্কুলছাত্র। রাজনৈতিক কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। এ ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ক্রিকেট খেলা-সংক্রান্ত একটা বিরোধ ছিল। ওই বিরোধের জের ধরে ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে।
স্থানীয় সূত্র বলেছে, ঘটনাস্থলে সন্ধ্যায় কেউ ছিল না। তাই দুর্বৃত্তরা কতজন ছিল বা তারা কীভাবে এসেছে এবং হত্যার পর কোথায় দিয়ে চলে গেছে তা কেউ দেখেনি।
মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুহেল আহাম্মদ বলেন, নিহত দুজনই ছাত্রলীগ করত। অভ্যন্তরীণ কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। এখনো বিস্তারিত কিছু পাওয়া যায়নি। পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।