পাকিস্তানে কট্টরপন্থীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ

Slider সারাবিশ্ব

4fd1aee6fd7b35f0895efec73e44adf7-5a19964513081

ঢাকা: পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে কট্টরপন্থী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ৬ নভেম্বর থেকে দেশটির আইনমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে আসছিল।
ইসলামাবাদে আজ শনিবার বিক্ষোভকারীদের সরাতে গিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পুলিশের ১ সদস্য নিহত ও ১৩৯ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে।

এএফপির খবরে বলা হয়েছে, রাজধানীর আশপাশের অন্যান্য শহরেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ইসলামাবাদেই সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছে। তেহরিক-ই-লাবাইক নামের একটি সংগঠনের হাজারেরও বেশি সদস্য এই শহরে জড়ো হন। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় চার হাজার সদস্য মাঠে নামেন। এরপরই সংঘর্ষের সূত্রপাত। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এ সময় কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়েন। বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় অবরোধ তৈরি করে এবং পুলিশের কিছু যানবাহনেও আগুন ধরিয়ে দেয়।

আইনমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে তিন সপ্তাহ ধরেই রাজধানীতে বিক্ষোভ করে আসছিলেন তেহরিক-ই-লাবাইকের নেতা-কর্মীরা। প্রধান সড়ক অবরুদ্ধ থাকায় শহরটি প্রায় অচল হয়ে পড়ে।

বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে মাঠে নামেন নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ৪ হাজার সদস্য। এ সময় কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়া হয়। ছবি: এএফপিএদিকে পাকিস্তানের গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলোকে সংঘর্ষের ঘটনার সরাসরি সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যদিও ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার চলছে।

ইসলামাবাদ পুলিশ বিভাগের মুখপাত্র জানান, সংঘর্ষে পুলিশের একজন সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া কমপক্ষে ১৩৯ জন আহত হয়েছে। হতাহত ব্যক্তিদের পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স নামের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৯৩ জনই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য বলে জানিয়েছেন ওই হাসপাতালের একজন মুখপাত্র।

তেহরিক-ই-লাবাইক একটি স্বল্পপরিচিত কট্টরপন্থী সংগঠন। ৬ নভেম্বর থেকে এই দলের নেতা-কর্মীরা ইসলামাবাদের প্রধান সড়ক অবরোধ করেছিলেন। এতে শহরের ট্রাফিক ও যাতায়াতব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছিল। দেশটির আইনমন্ত্রী জাহিদ হামিদের পদত্যাগের দাবিতে এই কর্মসূচি নেয় দলটি। নির্বাচনে প্রার্থীদের নেওয়া শপথে যে পরিবর্তন আনা হয়েছিল, তা বাতিল করার দাবি জানিয়েছিল দলটি। তাদের অভিযোগ, আহমাদিয়া সম্প্রদায়ের জন্য সুবিধাজনক ওই শপথে পরিবর্তন আনা ব্লাসফেমির শামিল।

এদিকে ইসলামাবাদের পর অন্যান্য শহরেও বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। করাচির পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, সেখানে প্রায় দুই শ বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে আসে। করাচিতে সংঘর্ষে আহত হয়েছে ৯ জন। সংঘর্ষের পর শহরটির বিভিন্ন বাণিজ্যিক স্থাপনা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া লাহোরেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসীকে ফোন করে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া পরিস্থিতি ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ সামাল দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর এক টুইট বার্তায় এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *