গভীর রাজনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে জার্মানি। মূলত নির্বাচনে কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্টতা না পাওয়ায় এ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।
জোট সরকার গঠনের আলোচনাও ব্যর্থ হয়েছে। এ অবস্থায় দাবি উঠেছে নতুন করে নির্বাচনের।সংখ্যাগরিষ্টতা ছাড়া সরকার গঠনের চেয়ে নতুন করে নির্বাচনে যাওয়াকেই শ্রেয় মনে করেন বলে জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল।
তবে জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক ভাল্টার স্টাইনমায়ার নতুন নির্বাচন এড়াতে সব দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি রাজনৈতিক সংকটের হাত থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শক্তিশালী অর্থনীতিকে রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফ্রাংক ভাল্টার স্টাইনমায়ার আগাম নির্বাচন দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। তাই সংকট উত্তরণে তিনিই এখন মূল কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। এ ছাড়া সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে কূটনৈতিক অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি সব রাজনৈতিক দলকে পুনরায় আলোচনার টেবিলেও বসাতে পারেন।
রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে প্রেসিডেন্ট সোমবার চ্যান্সেলর মার্কেলের সঙ্গে বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার গ্রিন পার্টি এবং আজ বুধবার সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটসদের (এসপিডি) সঙ্গে প্রেসিডেন্টের বৈঠক করার কথা। এ ছাড়া ফ্রি ডেমোক্র্যাটসদের (এফডিপি) সঙ্গেও তাঁর বৈঠকের কথা রয়েছে। তিনি সবাইকে ভোটারদের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতার কথা স্মরণ করিয়ে দেবেন।গত ২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত জার্মানির জাতীয় নির্বাচনে কোনো একক দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। বর্তমান জোট সরকারের বড় শরিক দল সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এসপিডি) পুনরায় জোটে না থেকে সংসদে বিরোধী দল হিসেবে থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় নতুন শরিকদের নিয়ে জোট সরকার গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এ লক্ষ্যে প্রায় চার সপ্তাহ ধরে আলোচনা চালিয়ে আসছিল মার্কেলের নেতৃত্বাধীন সিডিইউ-সিএসইউ জোট, এফপিডি ও গ্রিন পার্টি। কিন্তু রবিবার সন্ধ্যায় নতুন জোট সরকার গঠনের আলোচনা থেকে সরে যায় উদারপন্থী এফপিডি পার্টি; এতে আলোচনাটি ভেস্তে গিয়ে এই রাজনৈতিক সংকট শুরু হয়েছে।
জার্মানির সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচনের পর ৬০ দিনের মধ্যে সরকার গঠন করতে হবে অথবা নতুন করে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
এই পরিস্থিতিতে হয় গ্রিন পার্টিকে নিয়ে সংখ্যালঘু সরকার গঠন অথবা নতুন নির্বাচন, এই দুই বিকল্পের সামনে পড়েছেন গত ১২ বছর ধরে জার্মানির চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালন করে আসা মার্কেল। এ দুটির মধ্যে কোন পথে যাবেন—এ প্রশ্নের জবাবে সোমবার এআরডি টেলিভিশনকে মার্কেল বলেন, ‘নতুন নির্বাচনই উত্তম পথ, এই আমার মত। ’