‘ফেসবুকে মিথ্যা মৃত্যু সংবাদ’- কেন এই নোংরামি?

Slider বিনোদন ও মিডিয়া

172231fake_news

 

 

 

 

 

বারী সিদ্দিকী মারা গেছেন- সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এমন খবর। মুহূর্তেই মানুষের মানুষের মুখে পৌঁছে যায় বারী সিদ্দিকী মারা গেছেন।

সোশ্যাল মিডিয়া- বিশেষ করে ফেসবুকে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এই খবর। এরপর ক্রমাগত মোবাইল কল স্বজনদের ফোনে। ফোন আসতে থাকে পত্রিকা অফিসেও।

খ্যাতিমান সঙ্গীতশিল্পী ও বাঁশিবাদক বারী সিদ্দিকীর অবস্থা সংকটাপন্ন। গত শুক্রবার রাত থেকে তিনি স্কয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আছেন। এখন পর্যন্ত তাঁর অবস্থা অপরিবর্তিত। এরই মাঝে শনিবার ছড়িয়ে পড়ে তাঁর মৃত্যুর খবর।

সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো এইসব মিথ্যা বানোয়াট ও গুজব সংবাদে অনেক সচেতন মানুষেরও অসচেতনভাবে হাত থাকে। কীভাবে? বারী সিদ্দিকীর মৃত্যুর গুজবের খবর ফেসবুকে দিতে দেখা গেছে এদেশের সংগীত জগতের সাথে সংশ্লিষ্ট অনেককেই।

এর একমাত্র কারণ আমরা ‘ব্রেকিং’ এ অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি। খুব অল্প সময়েই সব কাজ শেষ করতে চাই- আর এজন্য সত্য মিথ্যা বিচার করার সময়টুকুও আমাদের হাতে থাকে না, মনের ভেতর বিরাজ করে অস্থিরতা।

একজন মনোবিদ এমনটাই জানিয়েছিলেন কিছুদিন আগে। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি চক্র সুকৌশলে গুজব ছড়িয়ে দেয়। এক্ষেত্রে ফেসবুক পেইজ কিংবা কোনো পোর্টাল ব্যবহার করা হয়। সংবাদটি কোনো পোর্টালে প্রকাশ হলো- পোর্টালের বিস্বস্থতা কতটুকু? এই বিষয়টি নিশ্চিত হবার মতো সময় নেই- যার কারণে সচেতনদের হাত ধরে গুজব ডালপালা ছড়াচ্ছে।

বছর তিনেক আগে প্রয়াত অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাকের মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে। রাজ্জাক তখন ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি। মধ্যরাতে রাজ্জাক পরিবারের সদস্যদের ক্রমাগত ফোন দিয়ে বিরক্ত করতে শুরু করে মানুষ। এটিএম শামসুজ্জামান একটি নাটকের মৃত্যু দৃশ্যে অভিনয় করেন। দেখা যায় তিনি খাটের ওপর শুয়ে আছেন। সেই ছবি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। মানুষ ধরেই নিয়েছিল এই অভিনেতা আর নেই।

মফস্বলের মানুষ ইন্টারনেটের বাইরে থাকলেও ভরসা করার মতো মানুষদের নিকট থেকে যখন এসব খবর শোনে তখন বিশ্বাস না করে উপায় থাকে না তাঁদের। অভিনেতা টেলিসামাদের মৃত্যু সংবাদও ছড়িয়ে পড়েছিল। সেসময় তিনি নিজেই সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমি বেঁচে আছি। ‘

সম্প্রতি চলচ্চিত্র অভিনেতা ডিপজলের হার্টের বাইপাস সার্জারি হয় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হোটেলে। সেখান থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আপডেট খবর জানাচ্ছিলেন তাঁর মেয়ে ওলিজা মনোয়ার। বাবাকে নিয়ে এতোই ব্যস্ত যে ওলিজা সবসময় ইন্টারনেটে থাকতে পারেন না। এরই মাঝে একদিন ছড়িয়ে পড়ে ডিপজল মারা গেছেন। সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে দ্রুত তাঁর মৃত্যু সংবাদে ছেঁয়ে যায়। অথচ ডিপজলেরে সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়।

মূলত একটি শ্রেণি যারা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নানা ধরনের ব্যবসা করে থাকেন। তাঁদের রিচ বাড়াতে টকিং এবাউট বাড়াতে এমন্সব বিভ্রান্ত খবর ছড়িয়ে পড়ে। লাইক ও কমেন্টসের ওপর নির্ভর করে ইনকাম। আর এসব কারণে একটি চক্র ক্রমাগত মিথ্যা খবর ছড়িয়ে সকলের অজান্তে আয় করে নিচ্ছে ডলার।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *