প্রশ্ন ফাঁস রোধে দরকার শিক্ষকদের নৈতিকতার উন্নয়ন : শিক্ষামন্ত্রী

Slider জাতীয়

ac2fdf139300927f7fa30e27a5e741c9-596de72540e2f

 

 

 

 

পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের জন্য কিছু শিক্ষককে দায়ী করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে তাঁরা শিক্ষকদের নৈতিকতার উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ার পর প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ ফজিলাতুন নেসার সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগে সরকারি ছাপা খানা বিজি প্রেস ছিল প্রশ্নপত্র ফাঁসের জন্য খুবই ‘রিস্কি’ জায়গা। এখন সেখান থেকে প্রশ্ন ফাঁসের কোনো সম্ভাবনা নেই। জেলা বা থানা থেকেও প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো সম্ভাবনা নেই। পরীক্ষার দিন সকালে শিক্ষকদের হাতে প্রশ্ন যাওয়ার পর কিছু শিক্ষক প্রশ্নপত্র ছাত্রদের দিয়ে দেন। তাঁরা আগ থেকেই সব ব্যবস্থা করে রাখেন।

নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘শিক্ষকের হাতে যখন প্রশ্নপত্রটি গেল তখন নিরাপত্তা ব্যাহত হলো। এ জন্য আমরা শিক্ষকদের নৈতিকতা উন্নতির বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সকালে পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা আগে শিক্ষার্থীরা হলে ঢুকবে। আধঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্রের খাম খোলা হবে। কিন্তু এ বছরও সকাল সাড়ে ৯টার পরে একটি প্রশ্ন ফেসবুকে দিয়ে দেওয়া হয়।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে শিক্ষক অধ্যাপকেরা জড়িত। প্রচণ্ড চাপ দিয়েও এটা বন্ধ করা যাচ্ছে না। কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করতে আইন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে যাঁরা দোষী সাব্যস্ত হবেন তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থের নাম সম্পর্কিত অনাকাঙ্ক্ষিত প্রশ্নটি দেওয়ায় জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি তদন্ত করে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না—জানতে চান বিরোধী দলের সদস্য পীর ফজলুর রহমান।

জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার মান, পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি জাতীয় স্বার্থ, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও স্বাধীনতার জন্য ছাত্র সংসদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে সামরিক শাসন কায়েম করার পর থেকে ছাত্ররা এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্বায়ত্তশাসিত। সরকার সেখানে অর্থ দেয়, কিন্তু হস্তক্ষেপ করতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেট আছে। সিন্ডিকেট এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বলছে, এখন নির্বাচন দেওয়ার পরিবেশ নেই। তবে তারা চেষ্টা করছে।

শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করার তাগিদ দিচ্ছেন। আশা করছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তা বিবেচনা করবেন। আর কলেজগুলোও নিজেরা দায়িত্ব নিয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করতে চায় না। তারপরও বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কলেজে নির্বাচন হচ্ছে।

এরপর জাতীয় পার্টির সাংসদ জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, সামরিক শাসন আমলে ছাত্র সংসদ নির্বচন হয়নি, তা সঠিক নয়। ১৯৮৮-৮৯ সালে এরশাদ সরকার ক্ষমতায় থাকতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন হয়েছিল। ১৯৯০ সালেও ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল। তিনি প্রশ্ন রাখেন এখন কেন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *