নতুন দল বিজেপির সভাপতি ও এক নেতার খোঁজ নেই

Slider রাজনীতি

bc192d42ab57f48d51ea19adac4bcfe6-59f92d5505ac1

 ঢাকা:  মিঠুন চৌধুরীনতুন গঠিত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জনতা পার্টির (বিজেপি) সভাপতি মিঠুন চৌধুরী ও তাঁর এক সহকর্মীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে তাঁর পরিবার। পরিবারের অভিযোগ, গত ২৭ অক্টোবর রাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে কয়েকজন ব্যক্তি রাজধানীর ফরাশগঞ্জ থেকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে ওই দুজন নিখোঁজ রয়েছেন।

মিঠুন চৌধুরীর স্ত্রী সুমনা চৌধুরী গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেছেন, মিঠুনের সঙ্গে নিখোঁজ সহকর্মী আশিক ঘোষ দলের যুব পার্টির সভাপতি। সুমনা চৌধুরী এ দুজনের সন্ধান পাওয়ার আকুতি জানিয়ে এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

গত ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান আদিবাসী পার্টি নামের সংগঠনের সভাপতি মিঠুন চৌধুরী বিজেপি গঠনের ঘোষণা দেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, নতুন এই দলে তাঁর সংগঠন ছাড়াও সমমনা অর্ধশতাধিক সংগঠন রয়েছে। নতুন দলটির সভাপতি ও মুখপাত্র মিঠুন চৌধুরী, মহাসচিব দেবাশীষ সাহা।

মিঠুন চৌধুরীর বাড়ি সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে। পরিবার নিয়ে তিনি বসবাস করেন সিলেট নগরের বালুচর এলাকায়।

সংবাদ সম্মেলনে মিঠুন চৌধুরীর স্ত্রী সুমনা অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামী ও স্বামীর সহকর্মী আশিক ঘোষকে ২৭ অক্টোবর দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে ঢাকার সূত্রাপুর থানার ফরাশগঞ্জের প্রিয় বল্লব জিউ মন্দিরের ফটক থেকে একটি কালো গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে সাধারণ পোশাকধারীরা ওই দুজনকে আটক করে নিয়ে যান। এখন পর্যন্ত তাঁদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাদের খোঁজে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থায় গিয়ে যোগাযোগ করলেও কেউ কোনো সন্ধান দিতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘আমি আমার স্বামীর সন্ধান চাই, তিনি কোথায় আছেন—অন্তত এটুকু কেউ বলুক।’

সুমনা চৌধুরী বলেন, দুজনের নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে সূত্রাপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা তাঁকে বলেছেন, এ ব্যাপারে জিডি নেওয়া সম্ভব নয়। স্বামী নিখোঁজের পর থেকে তিনি এবং তাঁর স্কুলপড়ুয়া দুই সন্তান মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন এবং নিরাপত্তাহীনতা ও উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন। তাঁর শাশুড়ি ও গ্রামের লোকজনও চরম দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। আশিকের পরিবারও উদ্বিগ্ন।

জানতে চাইলে সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আশরাফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মিঠুন চৌধুরীর পরিবারের কেউ কোনো অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেননি। এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।

সংবাদ সম্মেলনে সুমনা চৌধুরী বলেন, তাঁর স্বামী দৈনিক বাংলার মুক্তাঙ্গন নামে একটি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। ২০১৪ সালের ৯ মার্চ তিনি বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান আদিবাসী পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বলেন, তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে যদি কোনো মামলা থেকে থাকে, তাহলে অবশ্যই আইনিভাবে তা মোকাবিলা করবেন। কিন্তু তিনি জানেন না, কী অভিযোগে তাঁকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কিছু প্রকাশও করা হচ্ছে না।

সংবাদ সম্মেলনে সুমনা চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর ছেলে কৃষ্ণ রঞ্জন চৌধুরী, মেয়ে ঐশ্বরিয়া চৌধুরী, বিজেপির বিভাগীয় সমন্বয়কারী স্বপন বর্মণ, সৈয়দ হাসান আবদুল্লাহ, আবু মো. খালেদ ও নমী বর্মণ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *