গাজীপুরে জুয়া মাঠে দুটি মৃত্যু, হত্যা মামলায় আসামী নাই

Slider গ্রাম বাংলা সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

image-55397

 

 

 

 

গাজীপুর: জেলার সদর উপজেলার বাঘের বাজারে জুয়ার আসরে সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। মামলায় কাউকে সনাক্ত করে আসামী করা হয়নি।

আজ বৃহসপতিবার রাতে জয়দেবপুর থানার অফিসার ইন চার্জ আমিনুল ইসলাম গ্রামবাংলানিউজকে জানান, দুটি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত নামা আসামী করা হয়েছে। এর আগে সন্দেহজনক ভাবে ৪জনকে আটক করে  ৫৪ ধারায় জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত: গাজীপুরে জুয়ার আসরে দু’পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় নিহত আরো এক ব্যবসায়ীর লাশ বুধবার সন্ধ্যায় ডোবা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ । এনিয়ে মঙ্গলবার ভোর রাতের ওই ঘটনায় মোট দু’ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এদিকে সংঘর্ষের ওই ঘটনার পর বুধবার ভোর রাতে পুলিশ আগুন দিয়ে জুয়ার আসর পুড়িয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া ওই ঘটনার তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বুধবার উদ্ধারকৃত নিহতের নাম আব্দুল কাদের (৫৩)।

তিনি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী কেন্দুয়া এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। শ্রীপুর বরমী বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফল ও পানের ব্যবসা করতেন তিনি।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি গত কয়েকদিন ধরে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া খেলার আসরে জুয়ার বোর্ডে জমা দেয়া টাকা নিয়ে জুয়াড়ী ও বোর্ড পরিচালনা কারীদের সোমবার দিবাগত রাতে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় দৌড়ে পালাতে গিয়ে কয়েকজন পাশ্ববর্তী হাজেরার বাড়ির ময়লা পানি ও আবর্জনার গর্তে পড়ে যায়। ঘটনার পর পরই স্থানীয়রা ওই গর্ত থেকে গুরুতর আহ্ত অবস্থায় ১০/১২ জনকে উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ক্লিনিকে প্রেরণ করে।

এদের মধ্যে শহীদ তাজ উদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর আজিজুর রহমান নামের সাভারের এক ব্যবসায়িকের মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। তিনি সাভারের উত্তর রাজাসাম এলাকার মৃত মাইন উদ্দিনের ছেলে।

এদিকে সোমবার রাতে জুয়ার আসরে আসা শ্রীপুরের ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের ওই ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ হয়। স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি।

বুধবার সন্ধ্যায় স্থানীয়রা ময়লা আবর্জনার ওই ডোবা থেকে এক ব্যাক্তির লাশ দেখতে পায়। খবর পেয়ে নিহতের ছেলে আকতার হোসেন ঘটনাস্থলে এসে তার বাবার লাশ শনাক্ত করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজ উদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।

অপরদিকে হোতাপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজমুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর মঙ্গলবার রাতে পুলিশ ওই জুয়ার আসরে অভিযান চালিয়ে প্যান্ডেলের কিছু অংশ ভেঙে দেয় এবং আগুন লাগিয়ে পুড়ে দেয়।
এবাপারে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমাইয়ুন কবির জানান, সোমবার রাতের ওই ঘটনার ব্যাপারে এবং ঘটনায় নিহত এক ব্যক্তির লাশ কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়া হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা সম্পর্কে ও ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত সে বিষয়ে তদন্তের জন্য গাজীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাহেনুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি মঙ্গলবার গঠন করা হয়েছে।

কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- গাজীপুরের এনডিসি কুদরত-ই-খুদা জুয়েল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল মিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *