রহস্য উপন্যাসকেও হার মানাল যে হত্যাকাণ্ড

Slider টপ নিউজ

b90bd61b28676e18a8d68408ec990bfc-59f2f95decba5

 

 

 

 

গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মিজানুর রহমানকে। আর তার বান্ধবী সুমাইয়া নাসরিনকে হত্যা করা হয়েছিল ধর্ষণের পর বালিশ চাপা দিয়ে। প্রেমঘটিত কারণে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া চার তরুণ মিলে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছিলেন।
পুলিশের তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করেছে তারা। এর মধ্যে দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আরেকজনকে খুঁজছে পিবিআই।
অথচ পুলিশ তদন্ত করে আদালতে দেওয়া প্রতিবেদনে বলেছিল, মিজান তার বান্ধবীকে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যা করেছিলেন। পিবিআইর তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, ঘটনা তদন্তে থানা-পুলিশের গাফিলতি ছিল। তা ছাড়া ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এবং ডিএনএ পরীক্ষার ফলেও ত্রুটি ছিল।
পিবিআই প্রধান পুলিশের ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদনে যা বলেছিল দুই পরিবারও তা মেনে নিয়েছিল। পিবিআই মামলাটি পুনঃতদন্তের আগ্রহ দেখালে আদালত পাঁচ মাস আগে এ বিষয়ে পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
গত বছরের ২২ এপ্রিল রাজশাহীর হোটেল নাইসের ৩০৩ নম্বর কক্ষ থেকে মিজানুর রহমান ও তার বান্ধবী পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী সুমাইয়া নাসরিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মিজানুরের লাশ ওড়না দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝোলানো ছিল। আর সুমাইয়ার লাশ ছিল বিছানায়।
মিজানের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। তার বাবা উমেদ আলী একজন কৃষক। সুমাইয়ার পরিবার থাকে বগুড়ায়। তিন বোন, এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। তারা বাবা আবদুল করিম পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই)। ঘটনার পর তিনি বাদী হয়ে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত গ্রেপ্তার করা চার তরুণ হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাহাত মাহমুদ (২১), রাজশাহী কলেজের প্রাণীবিদ্যা চতুর্থ বর্ষের ছাত্র বোরহান কবীর ওরফে উৎস (২২), একই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আল-আমিন (২০) ও বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে ভর্তি প্রার্থী আহসান হাবিব ওরফে রনি (২০)। আহসান ও বোরহান ইতিমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আহসানের বাড়ি পাবনার ফরিদপুরের জন্তীহার গ্রামে, রাহাতের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়, আল আমিনের বাড়ি রাজশাহীর পবায় আর বোরহানের বাড়ি লালপুরের নাটোরে। পিবিআই কর্মকর্তারা ১৮ অক্টোবর আহসান হাবিবকে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরদিন রাজশাহীর দুটি ছাত্রাবাস থেকে বাকি তিনজনকে গ্রেপ্তার করেন।
পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, সুমাইয়ার সঙ্গে রাহাতের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর মিজানের সঙ্গে সম্পর্ক হয় তাঁর। বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হন রাহাত। এরপরই পরিকল্পিতভাবে হোটেলে কক্ষে গিয়ে দুজনকে হত্যা করা হয়। সবশেষে পুরো ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য মিজানের লাশটি ওড়না দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

526166183366e69f35aba4ab8ddd493e-59f2f978b4eda

 

 

 

 

যেভাবে পরিচয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মিজানুর রহমানের সঙ্গে আসামি আহসান হাবিবের পরিচয় হয় ২০১৪ সালে। সে সময় তিনি উল্লাপাড়ায় মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে গিয়ে একটি মেসে ওঠেন। তার পাশেই আরেকটি মেসে থেকে তখন উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনা করতেন মিজানুর। নিজের মেসের খাবার ভালো না হওয়ায় আহসান হাবিব তখন মিজানুরের মেসে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করতেন। সে সূত্রেই তাদের পরিচয় হয়।
উচ্চ মাধ্যমিক শেষে মিজানুর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। বরেন্দ্র কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য রাজশাহী যান আহসান হাবিবও। পূর্বপরিচিত মিজানুরের সঙ্গে সেখানে আবার তার যোগাযোগ হয়। রাজশাহীর রিলাক্স মেসে থাকতে গিয়ে আসামি রাহাতের সঙ্গে আহসানের পরিচয় হয়। আর নকশি ছাত্রাবাসের বাসিন্দা বোরহান কবীর ও আল-আমিন ছিলেন রাহাতের পূর্ব পরিচিত।

প্রেমের সম্পর্ক ও ছেদ
জিজ্ঞাসাবাদে রাহাত জানিয়েছেন, সুমাইয়ার সঙ্গে আহসান হাবিবের পরিচয় ছিল। আহসানের কাছে থেকে মুঠোফোন নম্বর নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন তিনি। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। চার থেকে পাঁচ মাস দীর্ঘ ছিল সেই সম্পর্ক।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আহসান হাবিব বলেছেন, হত্যাকাণ্ডের দুই থেকে তিন দিন আগে তিনি রাজশাহী নগরীর বিনোদপুরের বায়তুল আমান ছাত্রাবাসে যান। রাহাত তখন ওখানে থাকত। সেখানে আসামি আল আমিন ও বোরহান কবীরও ছিলেন। চারজন মিলে তাস খেলেন। খেলার এক ফাঁকে রাহাত জানান, সুমাইয়া তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েরই আরেক ছাত্র মিজানুর রহমানের সঙ্গে প্রেম করে। আহসান তখন রাহাতকে জানান যে মিজান তার পূর্বপরিচিত। রাহাত তখন দুজনকে হাতেনাতে ধরার জন্য উপস্থিত বাকি তিনজনের সাহায্য চান।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, হত্যাকাণ্ডের আগেরদিন আহসানকে ফোন দেন মিজান। তার ভাই ও ভাবি রাজশাহী আসছেন এবং তাদের থাকার জন্য ভালো আবাসিক হোটেলের সন্ধান চান তিনি। কিন্তু আহসান জানতে পারেন ভাই-ভাবি নয়, সুমাইয়া রাজশাহী আসছেন। এরপর বিষয়টি তিনি রাহাতকে জানান।
আহসান হাবিবের দেওয়া তথ্যের বরাতে তদন্ত কর্মকর্তারা বলেন, ঘটনার দিন রাহাত তাঁকে ফোন করে বলেন তিনি মিজান ও সুমাইয়াকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় দেখেছেন। রাহাত তাকে বিনোদপুর যেতে বলেন। সেখানে গেলে রাহাত, আল আমিন ও বোরহানের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। রাহাত একটু দূরে সুমাইয়া ও মিজানকে দেখিয়ে তাদের অনুসরণ করতে বলেন। মিজান ও সুমাইয়া একটি অটোতে ওঠেন। আরেকটি অটোতে করে চারজন তাদের অনুসরণ করেন। সুমাইয়া ও মিজান নাইস হোটেলের সামনে থামেন। তাঁরাও সেখানে নামেন।

b9f7742e6a18e139695df448bee80d38-59f2f9752b550

 

 

 

 

পাশের বিল্ডিং থেকে হোটেলে ঢোকেন চারজন
তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, রাহাত ও আহসান মিলে হোটেলের এক বয়কে হাত করেন। এরপর তারা চারজন নাইস হোটেলের পাশের তিন তলা একটি মার্কেটের ছাদে ওঠেন। সেখান থেকে হোটেল বয়ের সাহায্যে জানালা দিয়ে ৩০৩ নম্বর কক্ষে ঢোকেন। কক্ষে তখন শুধু সুমাইয়া ছিলেন। সুমাইয়ার সঙ্গে রাহাত ও আহসানের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। মিজানকে ফোন করে ডেকে আনার জন্য সুমাইয়াকে বলেন। সুমাইয়ার ফোন পেয়েই মিজান কক্ষে আসেন। মিজানকে তাঁরা বেধড়ক পেটান। একপর্যায়ে কেউ একজন হোটেলের টি টেবিল ভেঙে তার পায়া দিয়ে মিজানের মাথায় আঘাত করলে তিনি পড়ে যান। এরপর সুমাইয়ার একটি ওড়না দিয়ে তাঁর হাত বেঁধে ফেলা হয়। আরেকটি ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া তরুণদের তথ্যমতে, মিজানের লাশ কক্ষের মেঝেতে রেখেই সুমাইয়াকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন তাঁরা। এরপর বালিশ চাপা দিয়ে তাঁকে হত্যা করেন। দুজনকে হত্যার পর তাঁরা মিলিতভাবে মিজানের লাশ ওড়না দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেন। এরপর তাঁরা আবার জানালা দিয়েই পাশের মার্কেটের ছাদ হয়ে বেরিয়ে যান। ঘটনার পর কাউকে কিছু না বলতে রাহাত আহসানকে পাঁচ হাজার টাকা আর আল আমিনকে দশ হাজার টাকা দেন।

যেভাবে উদ্‌ঘাটিত হয় ঘটনাটি
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজশাহী পিবিআইর উপপরিদর্শক (এসআই) মহিদুল ইসলাম বলেন, এটি একটি ‘ক্লুলেস’ হত্যাকাণ্ড ছিল। থানা-পুলিশ তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলেছিল, সুমাইয়াকে মাথায় আঘাত করেছিলেন মিজান। এরপর বালিশ চাপা দিয়ে তাঁকে হত্যা করেন। মিজানের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এটাকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। আর সুমাইয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার আগে তাঁর সঙ্গ যৌন সংসর্গ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এমনকি ডিএনএ টেস্টেও সুমাইয়ার শরীরে শুধুমাত্র মিজানের ডিএনএ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে যাওয়া প্রথম পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে তিনিও একজন ছিলেন। ওই কক্ষে তিন ‘ব্র্যান্ডের’ সিগারেটের ফিল্টার পাওয়া যায়। তা ছাড়া ছেলেটার লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝোলানো থাকলেও তার দুই হাত ওড়না দিয়ে বাঁধা ছিল। তার প্যান্টটি কোমর থেকে ভাঁজের মতো করে নিচে নামানো ছিল। দেখেই মনে হচ্ছিল কেউ একজন টান দিয়ে নামিয়েছে। তা ছাড়া মিজানের গলার দুই পাশে দাগ ছিল। আত্মহত্যা করলে সেই দাগ একদিকে হওয়ার কথা।
মহিদুল বলেন, এসব চিহ্ন দেখে তখনই তিনি সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। কক্ষে পাওয়া তিন ধরনের সিগারেটের ফিল্টার তাকে তাঁকে সবচেয়ে বেশি ভাবায়। একজন মানুষ একই সঙ্গে তিন ধরনের সিগারেট খেতে পারে না। পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পর তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলার ভার পিবিআইকে দিলে তিনি তদন্ত করা শুরু করেন। তিনি বলেন, থানা-পুলিশ মামলাটিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়নি বলে তার মনে হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মিজানের মৃত্যুকে আত্মহত্যা এবং ডিএনএ পরীক্ষায় শুধুমাত্র মিজানের ডিএনএ উপস্থিত থাকার বিষয়টি আসায় পুলিশ হত্যাকাণ্ডের যথেষ্ট আলামত থাকা সত্ত্বেও আর খতিয়ে দেখেনি।
মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা পিবিআই সদর দপ্তরের বিশেষ পুলিশ সুপার আহসান হাবীব বলেন, তদন্ত শুরুর পর তারা অত্যন্ত নিবিড়ভাবে সুমাইয়া ও মিজানের সঙ্গে মুঠোফোনে কথোপকথনের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেন। সেখান থেকে তারা আহসানকে শনাক্ত করেন। তারপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকিদের শনাক্ত করা হয়। তিনি বলেন, থানা-পুলিশ যদি আরও দায়িত্বশীল হতো তাহলে প্রথমেই এই মামলা শনাক্ত করা সম্ভব ছিল। এত দিন অপেক্ষা করতে হতো না।

4344bb678527e284d279aa1fcc339403-59f2f976a3b10

 

 

 

 

থানা-পুলিশ ও ময়নাতদন্তকারী ডাক্তার এখন যা বলছেন
নাইস হোটেলের হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর এক বছর তদন্ত শেষে এ বছরের মে মাসে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন রাজশাহী নগরের বোয়ালিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম বাদশা। তদন্তে গাফিলতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত করতে গিয়ে তিনি যখন তৃতীয় কোনো ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা পাননি তখন ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন, সিআইডির ডিএনএ টেস্টের প্রতিবেদন এবং রাসায়নিক পরীক্ষার ভিত্তিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিলেন।
ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদনে ভুল ছিল কি না, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভুল ছিল না সঠিক ছিল সেই মন্তব্য তিনি করবেন না। তবে প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই তিনি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিলেন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রতিবেদনের প্রভাব ছিল।
মিজান ও সুমাইয়ার ময়নাতদন্ত করেছিলেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক এনামুল হক। তিনি বলেন, পুলিশ তাকে বলেছিল হোটেলের দরজাটি ভেতর থেকে বন্ধ ছিল এবং তার লাশটি ঝুলন্ত অবস্থায় অবস্থায় পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে তিনিও দেখেছেন তার গলায় যে দাগ আছে সেটা আত্মহত্যারই। তিনি পরীক্ষা করে যা পেয়েছেন তার ভিত্তিতেই প্রতিবেদন দিয়েছেন বলে জানান।

পরিবারের বক্তব্য
সুমাইয়ার বাবা পুলিশের উপপরিদর্শক আবদুল করিম এখন গাইবান্ধা বি সার্কেলে কর্মরত রয়েছেন। মুঠোফোনে তিনি বলেন, মেয়ে মারা যাওয়ার পর পর তিনি শারীরিক এ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। সেই অবস্থায় তিনি মামলার যে এজাহার লিখেছিলেন সেখানেই হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছিলেন। এরপর তদন্তের দায়িত্ব পুলিশের। তদন্ত করে তারা যা পেয়েছে তাই বলেছে।
মিজানের বাবা উমেদ আলী বলেন, মিজান আত্মহত্যা করতে পারেন না এটা তার বিশ্বাস ছিল। সেটাই প্রমাণিত হয়েছে। তিনি এখন ন্যায়বিচার অপেক্ষায় আছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *