মেডিকেলে পড়া নিয়ে শঙ্কায় শামীমা

Slider খুলনা

0cf3e91ca598b757b81ff4814ec530c5-59e8f3f101c12

 

 

 

 

 

 

 

শামীমা মায়ের মুখে হাসি ফোটানোর পাশাপাশি লেখাপড়া শেষ করে অসহায় মানুষের সেবা করতে চান। কিন্তু ইচ্ছা আর প্রত্যাশা পূরণে শামীমার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্থিক অনটন। তাহলে কি শেষ হয়ে যাবে সব প্রত্যাশা—এমন শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন শামীমা ও তাঁর মা।

পাঁচ বছর আগে থেকে বাবার আদর থেকে বঞ্চিত শামীমা খাতুন। মা-বাবার বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ায় বাবার ভিটায় জায়গাও হয়নি তাঁদের। একটি ভাড়া বাসায় থাকেন তাঁরা। মায়ের অক্লান্ত পরিশ্রম আর শামীমার অধ্যবসায়ে ইচ্ছা পূরণ হওয়ার সুযোগ এসেছে। শামীমা ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজে। কিন্তু আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় তাঁর ভর্তি ও লেখাপড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

রায়েবা বেগম জানান, পাঁচ বছর আগে তাঁর স্বামী তালা উপজেলার মাছিয়াড়া গ্রামের মোশারফ হোসেনের সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়। চার মেয়েকে নিয়ে তিনি পাশের কপিলমুনি এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেন। শুরু হয় তাঁর নতুন জীবন। তিনি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মানুষের বাড়ি বাড়ি ফেরি করে শাড়ি বিক্রি শুরু করেন। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থায় চলত শামীমাসহ চার বোনের পড়াশোনার খরচ। মেজ মেয়ে শামীমা এবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

শামীমা জানান, ২০১৭ সালে তালা মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪ দশমিক ৮৩ পেয়েছেন। এর আগে তিনি কপিলমুনি মেহেরুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে গোল্ডেন ‘এ’ প্লাস পেয়েছিলেন। এ বছর রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

শামীমা আরও জানান, তালা মহিলা কলেজে পড়ার সময় হোস্টেলে থাকা-খাওয়াসহ যাবতীয় খরচ দিত কলেজ কর্তৃপক্ষ। মা আর শিক্ষকদের সহযোগিতা ও নিজের প্রচেষ্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। শামীমা বলেন, ‘পারিবারিক দৈন্যের কাছে আমি হার মানতে চাই না। আমি ভবিষ্যতে একজন ডাক্তার হতে চাই। ডাক্তার হয়ে সেবা দিতে চাই সাধারণ দরিদ্র মানুষকে। আমার স্বপ্ন অঙ্কুরে বিনষ্ট হয়ে যাবে কি না, তা নিয়ে আমি শঙ্কিত। মায়ের পক্ষে আমাকে সামনের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’

তালা মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আবদুর রহমান বলেন, ‘শামীমা খাতুন একজন মেধাবী ছাত্রী। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রবণতা তার মধ্যে আছে।’ শামীমা সুযোগ পেলে অনেক দূর এগিয়ে যাবেন বলে তিনি মনে করেন।

সর্বশেষ জানা গেছে, সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন সাফল্যের কথা জানতে পেরে শামীমাকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে সহায়তা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *