একজন বৃক্ষপ্রেমী (বশেমুরবিপ্রবি) ভিসি প্রফেসর ডঃ খোন্দকার নাসিরউদ্দিন

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি শিক্ষা

photo-1
 

 

 

 

গোপালগঞ্জ : ‘পরিবেশ আজ মানুষের দুয়ারে কাঁদে’। বাঁচাও পরিবেশ বাঁচাও দেশ, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য বৃক্ষ ছাড়া কোন উপায় নেই। বিশ্বব্যাপি প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হওয়াতে প্রাণ ও প্রাণের উৎস ধ্বংশের ধারপ্রান্তে। জলবায়ু, খরা, বন্যা, ঝড়, ঝাপটা সহ ঋতু বদলের ঘূর্ণায়নের সব ক্ষেত্রে বদলে যাচ্ছে আমাদের সামাজিক পেক্ষাপট। মাত্রারিক্ত বৃক্ষ নিধন করার যে মহা ব্যস্থতা সর্বত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে তাতে ভিত সন্দিহান ও সংশয়ে ভুগছি আমরা কি অচিরেই অক্সিজেন অভাবে মৃত্যুর দুয়ারে দাড়িয়ে পড়বো? আমাদের দেশের ভুমির পরিমান যে দিন দিন কমে যাচ্ছে সে দিকে দেশের হর্তা কর্তাদের মাথাব্যাথা তো নেই বরং যারা বৃক্ষ রোপনে বা প্রাকৃতিক বনাঞ্চল, লতা-গুল্ম রক্ষার জন্য নিজ থেকে সচেতন কিংবা আন্দোলন করে তাদের থামিয়ে দিতে একশ্রেণী উঠে পড়ে লেগে যায় যোকের মতো।

আর সেই সময়ে প্রতি নিয়ত বৃক্ষরোপন ও সৃজন মাঠে থেকে কাজ করছেন, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ভিসি প্রফেসর ডঃ খোন্দকার নাসিরউদ্দিন । বৃক্ষরোপন ও সৃজন করা যার নেশা তিনি একজন সরকারী কর্মকর্তা। একাডেমীক ও কর্মক্ষেত্র কৃষি হওয়ায় এ যেন সোনায় সোহাগা। বৃক্ষের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা ও দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকেই তিনি দেশকে পরিবেশের ভয়াবহ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে বেছে নিয়েছেন বৃক্ষরোপন ও সৃজন। সফল হয়েছেন বটে। বৃক্ষকে তিনি অধিক ভালোবাসেন, একান্ত সময়গুলো পার করেন বৃক্ষ পরিচর্যা করে। দূর্গা পূজা ও আশুরা উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় পাঁচ দিনের বন্ধ থাকা স্বত্তেও ছুটির এই দিনগুলো নিজের পরিবারের সাথে ব্যয় না করে, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে প্রায় শতাধিক প্রজাতির কয়েক হাজার গাছ লাগিয়েছেন নিজে উপস্থিত থেকে।
প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত গাছ লাগিয়েছেন ও পরিচর্যা করেছেন নিজ হাতে দা, কোদাল ও কাচি নিয়ে। তার এই কাজে সহায়তা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ, রোভার স্কাউট, কর্মচারী ও মালীরা।

এতক্ষণ বলছিলাম গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ভিসি প্রফেসর ডঃ খোন্দকার নাসিরউদ্দিন স্যারের কথা, যিনি ঊষর মরুর বুকে প্রাণের সঞ্চারণ ঘটিয়েছেন। ২০ ফুট জলাশয়কে বালু ভরাট করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো তৈরির কাজ শুরু করা হয় ২০০৯ সাল থেকে। শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হ্য় ২০১২ সাল থেকে। এরপর কয়েক দফা গাছ লাগানোর কর্মসুচি গ্রহণ করা হলেও তা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থীরা স্বপ্নেও ভাবেনি এই ক্যাম্পাস একদিন মরুভূমি থেকে সবুজের ক্যাম্পাসে পরিণত হবে।

২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় ভিসি হিসেবে নিয়োগ পান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ডঃ খোন্দকার নাসিরউদ্দিন। যোগদানের প্রথমদিনে তিনি বলেছিলেন, এই মরুময় ক্যাম্পাসকে তিনি সবুজের ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তুলবেন। তিনি কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা সেটা করেছেন।

মাত্র দুই বছরে তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস দেশের সর্ববৃহৎ উদ্ভিদ সংগ্রহশালায় পরিণত হয়েছে। ক্যাম্পাসে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল, ফল, ঔষধি ও বনজ বৃক্ষ। সবুজের কার্পেটে ঢাকা এ শিক্ষাঙ্গনের ক্যাম্পাস এখন অযুত বৃক্ষরাজীর মেলা। প্রান ভরে যায় এর নৈসর্গিক পরিবেশ দেখলেই। এখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২৬ হাজার গাছ। এছাড়া গোপালগঞ্জ কৃষি প্রযুক্তি মেলা ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি নার্সারি প্রথম স্থান অধিকার করেছে এবং বৃক্ষরোপণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরষ্কার ২০১৬ এর খ শ্রেণীতে প্রথম স্থান লাভ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *