কে এই গণহত্যাকারী মিয়ানমারের সেনাপ্রধান

Slider সারাবিশ্ব
কে এই গণহত্যাকারী মিয়ানমারের সেনাপ্রধান

২০১৬ সালের সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক ধারা চালুর কথা বলা হলেও এখনও সামরিক ও প্রশাসনিক অনেক কিছুই সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। সে কারণে শান্তিতে নোবেল জয়ী অং সান সুচির দল ক্ষমতায় থাকলেও তিনি মূলত তার সরকারের পুতুলপ্রধান।

এখান থেকে দেখলে রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যার মূল হোতা হলেন সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয়াং। রোহিঙ্গা নির্যাতনের সঙ্গে অতোপ্রোতভাবে জড়িত এই জেনারেল সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারবাসী এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আলোচনায় আসেন।২০১১ সালে মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পান এই জেনারেল মিন অং হ্লাইয়াং। বতর্মানে মিয়ানমারের ১১ সদস্য-বিশিষ্ট জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা পরিষদের ৬ সদস্যই সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি হওয়ায় সুচি সরকারের পক্ষে স্বাধীনভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া অসম্ভব। সঙ্গে রয়েছে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার অতীত ইতিহাস। প্রতিবাদ করতে গেলে ক্ষমতা হারানোর ভয়ও কাজ করছে সুচির মধ্যে। আর এসব সুযোগ নিয়ে সেনাবাহিনী সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর একের পর অত্যাচার নিপীড়ন ও গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। আর শান্তিতে নোবেলজয়ী হয়েও মুখে কুলুপ এঁটে বসে রয়েছেন সুচি।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত ২৫ আগস্ট রাখাইনের একটি থানায় সন্ত্রাসী হামলার অযুহাত তুলে সেনাবাহিনীকে জোরদার অভিযানে নামান জেনারেল মিন অং হ্লাইয়াং। ওই আগ্রাসী অভিযান শুরুর পর ইতিমধ্যে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয় আসতে বাধ্য হয়েছে। আর গণহত্যার শিকার হয়েছে অন্তত ৫ হাজার মানুষ।

উইকপিডিয়ায় জাতিসংঘ রিপোর্টের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, মিন অং হ্লাইয়াং ক্ষমতায় আসার পর তার সৈন্যরা রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ করেছে, রাখাইন রাজ্যে বেসামরিক লোককে হত্যা করেছে এবং গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে। এই মানবাধিকার লঙ্ঘন যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শামিল হতে পারে।

রাখাইনের স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য অনুযায়ী, অভিযানের নামে সেখানে ভয়ঙ্করভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়ে চলেছে। চলছে ধর্ষণ, নির্যাতন, জীবন্ত পুড়িয়ে মারা, হত্যা ও গণহত্যা।

কিন্তু এই গণহত্যায় যখন বিশ্ব সম্প্রদায় মিয়ানমারের ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’ বলে পরিচিত সুচি’র দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তোলে, তখন আড়ালে থেকে যান মূল হোতা সেনাপ্রাধন হ্লাইয়াং। সুচি এক তরফা সমালোচনার মুখে পড়লেও সংবিধান অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনীর ওপর তার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, এমনকি তিনি বর্তমান সরকারের স্টেট কাউন্সেলর বা কার্যত প্রধান হলেও। কারণ সামরিক বাহিনী তার বেসামরিক রাজনৈতিক নেতৃত্বের সরকারের থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন। আবার তারাই দেশটির পুলিশ, অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী, কারাগার, সীমান্ত সমস্যা ও অন্যান্য বেসামরিক সংস্থা-দফতরের নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। ফলে সবকিছুর মূল হোতা হ্লাইয়াং।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *