“সুচি সরকারের,,আগ্রাসনের প্রতিবাদে উপশহরের তৌহিদী জনতার প্রতিবাদ ও দো’আ মাহফিল সম্পন্ন

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয়
20170915_210055
.
হাফিজুল ইসলাম লস্কর :: মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর পৈশাচিক নির্যাতন ও গণহত্যার প্রতিবাদে সিলেট শহরের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী অভিজাত আবাসিক এলাকা শাহজালাল উপশহর’র তৌহিদী জনতার উদ্যোগে মাও.সিরাজুল ইসলাম সিরাজীর আহবানে গতকাল রাত ৮-৪০মিনিট’র সময় সিলেট শহরের অন্যতম হাফিজিয়া মাদ্রাসা তারতীলুল ক্বোর’আন হাফিজিয়া মাদ্রাসার হলরুমে প্রতিবাদ সভা ও দো’আ মাহফিল অনুষ্টিত হয়েছে।
মাও. শাহ নজরুল ইসলাম, ইসলামী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, সিলেট’র সহপরিচালকের সভাপতিত্বে, মাও. রেজওয়ান ও মাও.মাশহুদ আহমদের যৌথ সঞ্চালনায়, তারতীলুল কোর’আন হাফিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র হা. তাজুল ইসলাম পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে প্রতিবাদ সভা শুরু হয়। সভার শুরুতেই ইসলামী সংগীত পরিবেশন করেন উক্ত মাদ্রাসার ছাত্র জাহেদুল ইসলাম।
প্রতিবাদ সভা ও দো’আ মাহফিল’র সুচনাতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন সভার
আহবায়নকারী মাও.সিরাজুল ইসলাম সিরাজী। মায়ানমারে “সুচি সরকার’র,, আগ্রাসন, গনহত্যা ও আমাদের করণীয় বিষয়ে গুরুত্বপুর্ণ দিক নির্দেশনা প্রধান করেন, জননন্দিত আওয়ামীলীগ নেতা শাহজালাল উপশহরের সাবেক কাউন্সিলর, বিশিষ্ট আইনজীবি, জননেতা এড. সালেহ আহমদ সেলিম।
এছাড়া উক্ত প্রতিবাদ সভা ও দোয়া মাহফিলে মুক্ত আলোচনায় অংশ গ্রহন করেন মাও.ছানাউল্লাহ, হাফিয আবুল হোসেন সুফি, মাও.মুফিজুল ইসলাম চৌধুরী, উপশহর ডি-ব্লক জামে মসজিদ’র পেশ ইমাম ও খতিব মাও.আব্দুস সালাম, উপশহর বি-ব্লক জামে মসজিদ’র ইমাম ও খতিব হা.মাও.বিলাল আহমদ, মাও. ফজলুর রহমান, লুগাতুল আরাবিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাও. তহুল হক, তারতিলুল ক্বোর’আন মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাও. জিয়া উদ্দীন, দারুল আযহার ক্যাডেট মাদ্রাসার সহপরিচালক মাও.জাকারিয়া আল হাসান, মাদ্রাসাতুল খাইরের শিক্ষক মাও.আব্দুল মুক্তাদির।
মাও. হান্নান আহমদ, মাও. ঈসমাইল আহমদ চৌধুরী, সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কামাল আহমদ, মহানগর যুবলীগ নেতা জাহিরুল ইসলাম, ফাষ্টসান24.কম’র সম্পাদক মাও.আবুবকর, সাপ্তাহিক ইউনানী কন্ঠের নির্বাহী সম্পাদক, হলিবিডি24.কম’র প্রধান সম্পাদক ও জামেয়া দারুল উলুমের শিক্ষক হা.মাও. হাফিজুল ইসলাম লস্কর, মাও.আব্দুল হালিম, মাও.নজরুল ইসলাম, মাও.আকবর হোসেন, আলহাজ্জ আবুল কালাম, হাফিজ আমিনুর ইসলাম শামিম, মাও.জাহেদুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান, হা.মাও.কুতুবুদ্দীন।
এছাড়া উক্ত প্রতিবাদ সভা ও দো’আ মাহফিলে আরো উপস্থিত ছিলেন, সরওয়ার হুসেন তালুদার, সাজু, সৈয়দ হাসান আহমদ, তমরিজান হায়দার, দিদার ইসলাম, সাইফুল, বাহার, তামিম, তাজিম, ইয়াহইয়াহ, ফয়ছল, জামাল, আফছার, মোহাম্মদ উল্লা, মোসাদ্দেক, আয়াতুল্লাহ, মামুন এবং তারতীলুল কোর’আন হাফিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্রবৃন্দ।
সভায় বক্তারা বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মুসলমানদের উপর যেভাবে গণহত্যা চালানো হয়েছে তা বিশ্বসভ্যতার ইতিহাসে এক কলঙ্ক জনক অধ্যায় রচিত হয়েছে। রোহিঙ্গাদের উপর বর্বোরুচিত ন্যাক্কার জনক দমন নিপীড়ন, পৈশাচিক কায়দায় গণহত্যা, ধর্ষণ, শিশুদের পুড়িয়ে হত্যার পর উল্লাস ও হাজার হাজার বাড়ি ঘর ও শত শত গ্রামের আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে রোহিঙ্গাদের নিশ্চিহ্ন করার মিশন অব্যাহত থাকলেও অদ্যবধি পর্যন্ত জাতিসংঘ, বিশ্বমোড়ল শক্তির নিরবতায় বিষ্ময় প্রকাশ ও নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়। সেইসাথে মিয়ানমারের উপর আর্ন্তজাতিক হস্তক্ষেপ না করায় এ ধরনের পৈশাচিক ঘটনা সেখানে বারবার সংঘটিত হচ্ছে বলে অভিমত ব্যক্ত করা হয়।
বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে জোর কুটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিজভূমিতে ফিরিয়ে নেয়া ও হতাহতসহ আক্রান্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে মায়ানমার সরকারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করতে হবে।
প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে মায়ানমারের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা ভূ-রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাই স্বার্থের কারণে ভারত ও চায়না চুপ করে রয়েছে এবং জাপানও কিছু বলছে না।
বক্তারা আরো বলেন, রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার ফেরত দিতে হবে। তাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ আমাদের সার্বভৌমত্বের উপর পরোক্ষ আঘাত। বিশ্বের সকল দেশকে রোহিঙ্গাদের উপর বর্বরতার জন্য মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।
সমগ্র বিশ্ব সর্বোপরি মুসলিম রাষ্টসমুহকে মিয়ানমারের মুসলমানদের হত্যা, নারী ধর্ষণ ও শিশু হত্যা চালিয়ে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও সন্ত্রাসী বৌদ্ধদের বর্বরতার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে হত্যা, নির্যাতন বন্ধে বাধ্য করতে হবে। অন্যথায় তাদের সঙ্গে সকল ধরনের কূটনীতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। বক্তারা মিয়ানমারের সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বেঁচে আসা নির্যাতিত মুসলমানদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে তাদেরকে মিয়ানমারের নাগরিত্ব ফিরিয়ে দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কূটনীতিক তৎপরতা চালিয়ে যাওয়ার আহবান জানান।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অধিবাসী মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রথম পরিচয় তারা মানুষ-এ কথা বিশ্বকে ভাবতে হবে। মানুষ হিসেবে নূন্যতম মানবিক আচরণ পাওয়ার অধিকার রোহিঙ্গা মুসলিমদের রয়েছে। কিন্তু মিয়ানমার সরকার রহস্যজনক কারণে রাখাইন রাজ্যে নির্বিচারে তাদের বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে, লুট-তরাজ, খুন-ধর্ষণ করে গণহত্যা চালাচ্ছে।
মিয়ানমারের নিরীহ মুসলমানদেরকে যেভাবে নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে নির্মমভাবে বৌদ্ধ সন্ত্রাসী ও সেনাবাহিনী হত্যা করছে, বর্তমান সভ্যতার যুগে তা আদৌ কল্পনা করা যায় না। যাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে তাদের কি অপরাধ? তাদের আপরাধ একটাই যে, তারা মুসলমান। তাদের উপর যে অকথ্য নির্যাতন চালানো হচ্ছে এমনকি জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। এমতাবস্থায় বিশ্বের মানবাধিকার সংঘঠনগুলো এর বিরুদ্ধে তেমন সোচ্চার না হওয়া দুঃখজনক। এধরণের নির্যাতন-নিপীড়ন দেখে কোন বিবেকবান মানুষ নিরব ভূমিকা পালন করতে পারে না। তাই কূটনীতিকভাবে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক চাপ ও নির্যাতিত মিয়ানমারের মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিশ্বনেতৃবৃন্দ’র প্রতি আহবান জানান। মিয়ানমার সরকার ধর্মীয় ঈর্ষাপ্রবণ হয়ে ৩৪ বছর যাবত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়ে আসছে।
বক্তারা বলেন, মুসলিম রোহিঙ্গাদের রক্ত নিয়ে হুলিখেলা বিশ্বের মুসলিম আর সহ্য করবে না। রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রতি ফোটা রক্তের দাম মিয়ানমারের খুনি সরকার এবং জাতিসংঘকে দিতে হবে। মিয়ানমারে মুসলিম গণহত্যা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এই অমানবিক গণহত্যা প্রতিরোধে আন্দোলন গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি। মিয়ানমারের নিরীহ মুসলিমদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দেশের সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহবান জানান। সেই সাথে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের পাশে দাড়িয়ে তাদের সহযোগিতা ঘোষণা করায় ধন্যবাদ জানান বক্তারা।
সভায় বক্তারা বলেন, এই বিশাল সংখ্যক রুহিঙ্গা শরনার্থীর চিকিৎসা, খাদ্য, সাময়িক আবাসন সরকারের একার পক্ষে বহনকরা কষ্টসাধ্য, তাই আমাদের উচিত সরকারের পাশাপাশি আমাদেরও সাধ্যমত রুহিঙ্গাদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসা।
সভায় রুহিঙ্গাদের পাশে সহযোগিতার হাত পসারিত করার জন্য মাও.সিরাজুল ইসলাম সিরাজীকে আহবায়ক ও এড.সালেহ আহমদ সেলিমকে সদস্য সচিব করে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
যুগ্ন আহবায়ক: হা.আবুল হোসেন সুফি, মাও.মঞ্জুরে মাওলা, মাও. মুফিজুল ইসলাম, মাও.তহুরুল হক, মাও.ছানাউল্লাহ।
যুগ্ন সচিব: মাও.জিয়া উদ্দীন, মাও.আবু বকর, মাও.আব্দুল মুক্তাদির, হা.মাও. হাফিজুল ইসলাম লস্কর, মাও.ঈসমাইল চৌধুরী, মাও.রেজওয়ান আহমদ, মাও.জাকারিয়া আল হাসান, আব্দুল হালিম।
এছাড়া উপদেষ্টা মনোনিত করা হয়, মাও. শাহ নজরুল ইসলাম, কাউন্সিলর সৈয়দ মিছবাহ উদ্দীন, মাও.আব্দুস সালাম, হা.মাও.বিলাল আহমদ, মাও.আব্দুল্লাহ ও হা.মাও.আসাদ বিন সিরাজ।
উক্ত সভার শেষ পর্যায়ে রুহিঙ্গা মুসলিমসহ বিশ্বের সকল মুসলমান ও বিশ্ব শান্তির জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
.
বার্তা প্রেরক
হাফিজুল ইসলাম লস্কর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *