হাসি যখন ওষুধ : ভিন্ন সাতটি প্রয়োগ

লাইফস্টাইল
image_155639.laughingহাস্যরস যে কত কাজের ওষুধ হতে পারে তা সবাই কমবেশি জানে। হাসিতে বহু উপাদান রয়েছে, যার প্রয়োগে অনেক অসাধ্য সাধন করা সম্ভব। তবে হাসি শুধু অন্যকে পটানো বা পরিস্থিতি অনুকূলে আনার জন্যই নয়। আরো সাতটি ভিন্ন ধাঁচের বিষয়- যা হাসির দ্বারা অনায়াসে করা সম্ভব।
১. হাসি সব সময় কৌতুকের জন্য নয়
বিষয়টা যৌক্তিক- হাসি সব সময় কৌতুকের সঙ্গে যুক্ত নয়। হাসি মানুষের শক্তিশালী আবেগের প্রকাশ। এটি গভীর যোগাযোগের মাধ্যম। এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা পরিচিত বা অপরিচিতদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
২. হাসি সংক্রমক
মস্তিষ্ক স্ক্যান করে দেখা গেছে, হাসি বিষয়টি ভাইরাসের মতো সংক্রমিত হয়। চোখ ও ঠোঁটের কিছু পেশির নড়াচড়া ও দৈহিক অঙ্গভঙ্গির সমন্বয়ে মস্তিষ্কের নির্দেশের মাধ্যমে হাসির উদ্রেক ঘটে। আপনার মাঝে হাসি যত বেশি সংক্রমিত হবে, মেকি ও সত্যিকার হাসির পার্থক্য তত বেশি অস্পষ্ট হয়ে উঠবে।
৩. ইচ্ছাকৃত ও স্বতঃস্ফূর্ত হাসির ভিন্নতা
ব্রিটিশ মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক সোফি স্কট জোরপূর্বক হাসি ও প্রাণবন্ত স্বাভাবিক হাসির মধ্যে পার্থক্য নিয়ে গবেষণা করেছেন। প্রত্যেকের ক্ষেত্রে ভিন্ন দৈহিক আচরণ লক্ষ করা যায়। যখন মানুষ জোর করে হাসে, তখন মস্তিষ্কের একটি অংশ অন্যের আবেগ পরিষ্কারভাবে বুঝতে সক্ষম হয়। তখন এ হাসির কারণ বুঝতে বেশ ব্যস্ত থাকে মগজ। এমনকি আমরা সচেতন না থাকা অবস্থায়ও এসব ঘটতে পারে।
৪. স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের জন্য হাসি
এর মাধ্যমে আমরা অন্যের সঙ্গে আরো গভীরভাবে মিশতে পারি। বাজে পরিস্থিতি ও মন খারাপ থাকলে সহসা হাসি আসে না। আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষক অধ্যাপক রবার্ট লেভিনসন গবেষণায় দেখেছেন- কোনো জুটি যখন একে অন্যের সঙ্গে যাঁর যাঁর অস্বস্তিকর বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন, তখন তাঁদের মাঝে ক্রমাগত হাসি দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে সম্পর্ক আরো গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী হয়। আলোচনার মাঝে হাসির অস্তিত্ব থাকলে সেখানে আলোচকদের সম্পর্ক ভালো হয়।
৫. হাসি কোনো ব্যায়াম নয়
হাসির নানা গুণ থাকলেও এটি ব্যায়াম নয়। হাসি আপনাকে সুস্থতা দেবে ও সুখী করবে। কিন্তু একে শরীরচর্চার কোনো অংশে ফেলা যায় না। এক প্যাকেট আলুর চিপস থেকে পাওয়া শক্তি খোয়াতে আপনাকে টানা তিন ঘণ্টা হাসতে হবে। হাসির কারণে আপনার মস্তিষ্ক সুস্থ বোধ করবে এবং হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাবে।
৬. হাসি আকর্ষণ বাড়ায়
হাসিকে অনেকে ‘সেক্সি আচরণ’ বলে মনে করে। চমৎকার সেন্স অব হিউমারের মাধ্যমে যেকোনো মানুষকে সহজে পটানো যায়। অনলাইন ডেটিং সাইটগুলোয় দেখা গেছে, যাঁর সেন্স অব হিউমার যত বেশি, তিনি তত দ্রুত সঙ্গী বা সঙ্গিনীর কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছেন।
৭. সঠিক সময়ে আবেগের প্রকাশ
কৌতুক অভিনেতারা কোনো জাদুমন্ত্রে দর্শকদের হাসাতে সফল হন তা কিন্তু নয়। বরং তাঁরা সঠিক সময়ে সেন্স অব হিউমার প্রয়োগে এ কাজটি করেন। হাস্যাস্পদ কোনো বিষয় কোন পরিস্থিতিতে এবং কোন মুহূর্তে উপস্থাপন করতে হবে তা আগে বুঝতে হয়। হাসির দ্বারা অন্যের কাছ থেকে সঠিক প্রতিক্রিয়া আদায় করতে হলে তা সঠিক সময়ে প্রয়োগ করতে হবে।
সূত্র : হাফিংটন পোস্ট অবলম্বনে সাকিব সিকান্দার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *