লন্ডন থেকে কী বার্তা নিয়ে ফিরছেন খালেদা

Slider রাজনীতি
লন্ডন থেকে কী বার্তা নিয়ে ফিরছেন খালেদা

নেতা-কর্মীদের জন্য কী বার্তা বয়ে আনছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া— সেই অপেক্ষায় বিএনপি। বিশেষ করে প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারতসহ কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিএনপি প্রধানের বৈঠকের খবরে দলের ভেতরে-বাইরে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

এছাড়া একাদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দলীয় নেতা-কর্মীদের কৌতূহলের শেষ নেই। বিশেষ করে উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন দলের সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। তারা মনে করছেন, লন্ডনে অবস্থানরত দলেরসিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে আলাপচারিতায় আগামী নির্বাচনের মনোনয়ন চূড়ান্ত করবেন বিএনপি-প্রধান। এ সম্ভাবনা থেকেই সেদিকে নজর মনোনয়নপ্রত্যাশীদের। দলীয় নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, এবার একঝাঁক তরুণ নেতা মনোনয়নযুদ্ধে মাঠে নেমেছেন। ৩০০ সংসদীয় আসনে নবীনসহ সহস্রাধিক নেতা-কর্মী এবার মনোনয়নপ্রত্যাশী। সবাই লন্ডন থেকে নতুন বার্তার অপেক্ষায়। দলীয় টিকিট পেতে অনেকেই এরই মধ্যে লন্ডনে দৌড়ঝাঁপের চেষ্টাও করেন। তবে কেউই সফল হননি বলে লন্ডনসূত্র জানায়। এদিকে ১২ সেপ্টেম্বর লন্ডনে দলের নেতা-কর্মীসহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের সম্মানে অনুষ্ঠেয় সুধী সমাবেশে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে বেগম জিয়ার। সেখানে তারেক রহমানও অংশ নেবেন। তবে এ সমাবেশের তারিখ পেছানোও হতে পারে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি চেয়ারপারসনকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক উল্লেখ করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘তার (বেগম জিয়া) ফেরার অপেক্ষায় শুধু বিএনপি নেতা-কর্মীই নয়, গোটা জাতি। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষায় বেগম জিয়ারই অবদান সবচেয়ে বেশি। লন্ডনে তিনি এখন চিকিৎসা নিচ্ছেন। সুস্থ হয়েই দেশে ফিরবেন। আশা করছি, এ মাসের মধ্যেই দেশে ফিরবেন। ’ তবে লন্ডন বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র দাবি করেছে, চলতি মাসে বেগম জিয়ার দেশে ফেরার সম্ভাবনা খুবই কম। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে অক্টোবরের প্রথম সপ্তায় তিনি দেশে ফিরতে পারেন। বিলম্ব হওয়ার কারণ হিসেবে সূত্রটি বলছে, চিকিৎসা ছাড়াও দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে মা-ছেলে কথা বলছেন। সেখানে কিছু কূটনৈতিক যোগাযোগও রাখছেন বিএনপি-প্রধান। তবে আগামী নির্বাচন ঘিরে বিএনপির প্রস্তুতি কী ধরনের হতে পারে তা নিয়েই দলের দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে কথাবার্তা হচ্ছে। একাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীর খসড়া তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে। তবে তালিকা যাই হোক, পরবর্তীতে পরিবেশ-পরিস্থিতির আলোকে কিছু প্রার্থী পরিবর্তনও হতে পারে। এদিকে বিএনপি-প্রধানের অনুপস্থিতিতে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে বন্যায় বিএনপির পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। এ নিয়ে দলের উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটিও গঠন করা হয়। বন্যাদুর্গত এলাকায় নেতা-কর্মীরা ছুটে যান। বিএনপি মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক-সহ সাংগঠনিক সম্পাদকদের অংশ নিতে দেখা যায় ত্রাণ বিতরণ কর্মকাণ্ডে। বিএনপির মধ্যম সারির তরুণ এক নেতা বলেন, ‘একাদশ জাতীয় নির্বাচনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে কাজ করছি। এখন অপেক্ষা করছি ম্যাডামের। তিনি দেশে ফিরে সবুজ সংকেত দিলেই পুরোদমে মাঠে নেমে যাব। বন্যায় ত্রাণ বিতরণসহ দলের সব কর্মসূচিই পালন করছি। অতীতে যারা এমপি হয়েছেন, তাদের কোনো তত্পরতা নেই। আশা করি, দল আমাকে মনোনয়ন দিলে এ আসনটি বিএনপিকে উপহার দিতে পারব। ’ লন্ডনসূত্র জানায়, ১২ সেপ্টেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সমাবেশের চিন্তাভাবনা রয়েছে। সেন্ট্রাল লন্ডনের  রিজেন্সি কনভেনশন সেন্টারে এই সমাবেশ হতে পারে। তবে তা এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি বিএনপি। যুক্তরাজ্য বিএনপির কোন্দলের কারণে লন্ডন বিএনপির সমাবেশ কিছু দিন পেছানোও হতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে লন্ডন বিএনপিতে কোন্দল প্রকাশ্য রূপ নেয়। সর্বশেষ তারেক রহমানের কারামুক্তি দিবস ও এম সাইফুর রহমানের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় দুই গ্রুপে মারামারি হয়। যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক ও সাধারণ সম্পাদক এম কয়সর আহমদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরেই। তবে প্রকাশ্যেই দ্বন্দ্ব  চলছে এম কয়সর আহমদের সঙ্গে সহসভাপতি আক্তার হোসেনের। সাম্প্রতিক সময়ের অনুষ্ঠানগুলোয় হাতাহাতিতে দুই পক্ষের সমর্থকরাই জড়িত বলে দলীয় একটি সূত্রে জানা গেছে। তবে সমাবেশ যখনই হোক, লন্ডনে ব্যাপক শোডাউনের চিন্তাভাবনা চলছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘চিকিৎসা শেষে বিএনপি চেয়ারপারসন যথাশিগগির দেশে ফিরবেন। তবে দীর্ঘদিন পর মা-ছেলে একসঙ্গে হয়েছেন। তাদের মধ্যে পারিবারিক কথাবার্তা হবে। দলের কর্মকাণ্ড নিয়েও কথাবার্তা হওয়াটাই স্বাভাবিক। দেশে ফেরার সময় নির্ধারিত হলে গণমাধ্যমকে জানানো হবে। ’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *