মেরামতির গাফিলতিতেই উত্তর প্রদেশে ট্রেন দুর্ঘটনা, নিহত ২৩

সারাবিশ্ব

79654_uttor

ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের মুজফ্ফরপুরের কাছে পুরী থেকে হরিদ্বারগামী কলিঙ্গ-উৎকল এক্সপ্রেস শনিবার সন্ধ্যায় এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পড়েছে। এই দুর্ঘটনায় এক্সপ্রেসের ২৩টি কামরার মধ্যে ১৪টি ছিটকে যায় লাইন থেকে। সরকারি সূত্রে এ পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছে। স্থানীয়দের মতে, মৃতের সংখ্যা ৪০। আহত অন্তত ৪০ জন। তবে প্রাথমিকভাবে রেলওয়ে কর্তারা মেরামতির গাফিলতিকেই দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যে  খতৌলিতে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেখানকার স্টেশন সুপারিনটেন্ডেন্ট রাজেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন, স্টেশন মাস্টারকে রেল লাইনের মেরামতি সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। বস্তুত তাঁকে অন্ধকারে রেখেই লাইন মেরামত করছিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। তিনি বলেন, ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ যদি আগে থেকে তাঁকে এ ব্যাপারে জানাত, তবে ট্রেন থামিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারতেন তিনি। এড়ানো যেত দুর্ঘটনা। রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে রেল বোর্ডের ট্রাফিক সদস্য মহম্মদ জামশেদ বলেছেন, সোমবার থেকে শুরু হবে উৎকল-কলিঙ্গ এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার তদন্ত। তিনি বলেছেন, রেলমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে দুর্ঘটনায় কারও গাফিলতি প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ, রেলের প্রতিটি কাজের লিখিত বিবরণী থাকে। তা দেখলেই বোঝা যাবে খতৌলিতে নিয়ম ভাঙা হয়েছিল কিনা। প্রতিটি তথ্যই খতিয়ে দেখা হবে। স্থানীয় মানুষ জানিয়েছেন,  দ্রুত গতিতে আসা এক্সপ্রেস ট্রেনটি যখন আসছিল তখন লাইনের একটি অংশ খেলা অবস্থায় ছিল। ফলে একের পর এক কামরা ছিটকে পড়েছিল। সাংবাদিকরাও ঘটনাস্থলে গিয়ে লাইন মেরামতির নানা যন্ত্রপাতি পড়ে থাকতে দেখেছেন। রহস্য দানা বেঁধেছে কেন মেরামতির কথা নিকটবর্তী স্টেশন মাস্টারকে জানানো হয় নি। অবশ্য শনিবার রাতে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এডিজি আনন্দ কুমার জানিয়েছিলেন, আচমকা ব্রেক কষাতেই এই দুর্ঘটনা। রাতেই রেল প্রতিমন্ত্রী মনোজ সিন্হা উদ্দারকাজ দেখতে সেখানে হাজির হয়েছিলেন। রেলওয়ের পক্ষ থেকে নিহতদের সাড়ে তিন লক্ষ রুপি এবং আহতদের ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ দেবার কথা ঘোষনা করেছে। রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু টুইটারে জানিয়েছেন, তিনি পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছেন। শোক প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী ও সহসভাপতি রাহুল গান্ধী। সাবেক রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে বলেছেন, প্রিয়জন হারানো সব পরিবারকে সমবেদনা জানাই। রেলে নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। এই দুর্ঘটনার পেছনে জঙ্গি নাশকতার সম্ভাবনা নিয়ে তদন্ত করছে এটিএস। একটি সূত্রের মতে, দুর্ঘটনার সময়ে গতি ছিল ঘণ্টায় ১০৫ কিলোমিটার। ওই গতিতে ট্রেন ছোটানোর অনুমতি চালকের ছিল কি না, তাও দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *