সময় বাঁচানোর সহজ কিছু কৌশল

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

456সময় নিয়ে আক্ষেপ আমাদের সকলের মধ্যেই দেখা যায়। সারাদিন কাজ করার পরও অনেকগুলো কাজ থেকে যায়। তখন মনে হয়, ইশ দিনটা যদি আরেকটু বড় হতো! দিনটা যদি ২৪ ঘণ্টা না হয়ে ৪৮ ঘন্টা হতো তাহলে অনেক ভাল হতো! এ কথা সত্য, আপনি সময়কে পরিবর্তন করতে পারবেন না, কিন্তু সময়কে আরো দক্ষতার সাথে ব্যবহার ক্ষমতা আপনার আছে। আর এই দক্ষতা দিয়ে আপনি বাঁচিয়ে ফেলতে পারেন আপনার সময়। তবে আর দেরি না করে চলুন জেনে নেই সময় বাঁচানোর সহজ কিছু কৌশল সম্পর্কে।

১। ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগান
যেকোনো কিছুর সাফল্যের পেছনে রয়েছে ইচ্ছাশক্তি। ইচ্ছাশক্তিই পারে দক্ষভাবে কাজ সম্পূর্ণ করতে। ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির মনস্তত্ত্ববিদ রয় বোমিস্টার কিছু মানুষকে সাধারণ কিছু কাজ ইচ্ছাশক্তি দিয়ে করার জন্য বলেন এবং তিনি দেখেন তারা আগের চেয়ে আরো বেশি দক্ষতার সাথে কাজগুলো করতে পারছেন। জটিল কাজগুলো সম্পূর্ণ করার ক্ষেত্রে নিজের ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগান। দিনের কঠিন সিদ্ধান্তগুলো সকালে নেওয়ার চেষ্টা করুন। এইসময় আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন।

২। সহজ কাজগুলো আগে করুন
প্রথমে যে কাজগুলো করতে সময় কম লাগে সেগুলো আগে শেষ করে ফেলুন। তারপর একে একে বড় কাজগুলো করা শুরু করুন। একটি সময় একটি কাজ করুন।  “একজন মানুষের মস্তিষ্ক একই সময়ে সাত ধরণের তথ্য রাখতে পারে” এমনটি মনে করেন  মনস্তত্ত্ববিদ ডেভিড ক্রসওয়েল। “আপনি যখন অন্য কোনো কাজ শুরু করেন তখন আগের কাজের তথ্য মস্তিষ্ক মুছে ফেলে। আর এটি আপনার সময় নষ্ট করে দেয়। তাই একসাথে দুইটি কাজ করা থেকে বিরত থাকুন”। এতে আপনার সময় বাঁচবে তার সাথে সাথে কাজও দক্ষতার সাথে করা সম্ভব হবে।

৩। ক্যালেন্ডার ব্যবহার করুন
গুরুত্বপূর্ণ দিন, কাজ বা কোন তথ্য ক্যালেন্ডারে মার্ক করে রাখুন। এতে আপনি দু’টি সুবিধা পাবেন- এক আপনি কোন কিছু ভুলে যাবেন না আর দুই আপনার নিত্যদিনের কাজের তালিকা সহজে তৈরি করে নিতে পারবেন।

৪। পছন্দে সীমাবদ্ধতা আনুন
আপনি আপনার চাকরির ধরণ পরিবর্তন করতে পারবেন না কিংবা ঘরের কাজ কমিয়ে ফেলতে পারবেন না। তাই পছন্দের সীমাবন্ধতা নিয়ে আসুন। খুব বেশি অপশন আপনাকে বিভ্রান্ত করবে, এর বেশি কিছু নয়। বারাক ওবামা পরিধান করতেন শুধুমাত্র নীল এবং ছাই রঙয়ের স্যুট। যাতে তার পোশাক পছন্দে বেশি সময় ব্যয় না হয়। “খুব বেশী বাছবিচার আপনাকে পঙ্গু করে দিবে” কলেম্বিয়া ইউনিভার্সিটির বিজনেস প্রফেসর শিনা আইঙ্গার এমনটি ধারণা করেন। তাই পছন্দে সীমাবদ্ধতা নিয়ে আসুন।

৫। কঠিন কাজের সময় বিরতি নিন  
কঠিন ও সময়সাপেক্ষ কাজ করার সময় কিছুটা বিরতি নিয়ে তারপর আবার কাজ শুরু করুন। কাজের মাঝে ২ মিনিটের বিরতি কাজকে দ্রুত করতে সাহায্য করে। “কাজের বিরতির সময় আপনার মস্তিষ্ক কাজের তথ্যগুলো সাজিয়ে ফেলে, যা আপনার কাজকে আরও সহজ করে তোলে” ক্রসওয়েল এমনটি ধারণা করেন। তবে তিনি মাল্টি টাস্কিং থেকে বিরত থাকতে বলেছেন।

৬। আগের রাতে কাজের প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন
পরের দিনের কাজের কিছু প্রস্তুতি আগের রাতে করে রাখুন। এতে করে আপনার সময় বাঁচার পাশাপাশি কাজের দক্ষতাও বৃদ্ধি পাবে। একটি সুন্দর দিন শুরু করার জন্য রাতের ঘুম অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি কাজ কিছুটা করে রাখেন, তবে রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবেন। তবে হ্যাঁ ঘুমের মধ্যে মস্তিষ্ক সমস্যার সমধান করে থাকে। তাই ঘুমাতে যাওয়া আগে পরের দিনে কাজের সমস্যার কিছুটা চিন্তা করে রাখেন, দেখবেন দারুন একটা সমাধান পেয়ে গেছেন ঘুমের মধ্যে।

৭। ইন্টারনেটে দক্ষতা
গুগল আমাদের অনেক সময় বাঁচিয়ে দিয়েছে। একটি তথ্য বা প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য এখন আর ফোন করতে হয় না। গুগলে সার্চ দিলে সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়। কিন্তু এই গুগল পরিচালনায় আরো বেশি দক্ষ হতে হবে আপনাকে, তবেই আপনি আপনার কাজগুলো আর দ্রুত এবং দক্ষতার সাথে করতে পারবেন।

সূত্র: হাফিংটন পোষ্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *