১৩ বছর বয়সেই অন্তঃসত্ত্বা অতঃপর…

Slider বিচিত্র সারাবিশ্ব

75665_qqqমাত্র ১৩ বছর বয়সেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে এক বালিকা। ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এই বালিকাকে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেয়া হয়েছে তার প্রেমিকের সঙ্গে। তারও বয়স ১৩ বছর। চীনের এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে। তাতে দেখা যাচ্ছে ওই বালক ও বালিকার বিয়ের আয়োজন। চীনের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী তারা একে অন্যের সামনে মাথা নত করে। উপস্থিত অভিভাবকরা তাদেরকে উৎসাহিত করেন। এ বিয়ের পাত্র ও পাত্রীর নাম প্রকাশ করা হয় নি। কিন্তু ভিডিওটি নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এত কম বয়সে বাচ্চাদের বিয়ে দেয়া নিয়ে। এমন কি পাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে আরো উদ্বেগ। এ নিয়ে সচিত্র রিপোর্ট প্রকাশ করেছে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল। এতে বলা হয়, চীনের হাইনান প্রদেশের ডিংয়ান কাউন্টি এলাকায় বসবাস করে ওই বালক ও বালিকা। বেইজিং নিউজকে স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছেন, গত মাসে ওই বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে সরকারিভাবে এ বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয় নি। কারণ, পাত্র-পাত্রী এখনও সরকার নির্ধারিত বিয়ের বয়সের অনেক নিচে। তাই তাদের বিয়ে আয়োজন করা হয় পারিবারিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রি ছাড়াই তাদেরকে বিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ভিডিওটি দেখে চেরি হ্যানবাও নামে একজন ওয়েইবো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করেছেন, ওরা তো এখনও শিশু। ভবিষ্যতে কিভাবে তারা একে অন্যের দায়িত্ব বহন করবে? জিঙ্গবাও বেবি নামের আরেকজন লিখেছেন, এই দম্পতি যখন ভাল করে বোঝা শিখবে তখন তারা ভীষণ অনুশোচনা করবে। তবে চীনের গ্রাম এলাকায় এখনও সেই পুরনো দিনের রীতি রয়েছে গেছে। সেখানে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের শিক্ষা দেয়ার চেয়ে বিয়ে দেয়াকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেন। এই ধারণাটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বয়ে আসছে। উল্লেখ্য, চীনে বিয়ের জন্য সরকার নির্ধারিত বিয়ের বয়স নারীদের জন্য ২০ বছর। ছেলেদের ক্ষেত্রে ২২ বছর। তা সত্ত্বেও সেখানকার গ্রামীণ জীবনে বাল্যবিয়ে একটি সাধারণ চর্চায় পরিণত হয়েছে। এর কারণ, অনেক অভিভাবক তার বাড়ি থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরের শহরে বসবাস করেন এবং সেখানে কাজ করেন। তারা তাদের টিনেজ সন্তানকে বাড়িতে রেখে যান। বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব সন্তান তাদের দাদী, নানীদের কাছে বড় হতে থাকে। ফলে তারা যৌনজীবন সম্পর্কে যথাযথ কোনো শিক্ষা পায় না। অল্প বয়সেই যৌনজীবনে আসক্ত হয়ে পড়ে। ফলে তারা বিয়ে হওয়ার বয়সে পৌঁছার আগেই অথবা বিয়ে হওয়ার আগেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এ জন্য অভিভাবকরা তাদেরকে বিয়ে দিয়ে দেন। গত বছর ইউনান প্রদেশে এক টিনেজ দম্পতির বিয়ের ঘটনায় পুরো চীনকে নাড়া দিয়েছিল। এক্ষেত্রে কনের বয়স ছিল ১৩ বছর। তার নাম জি। তার প্রেমিকের নাম ওয়েন। তার বয়স তখন ১৮ বছর। ওয়েনের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার তিন দিন পরেই তাকে বিয়ে করে জি। এর অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে সে। এ জন্য স্কুলের পড়াশোনা বাদ হয়ে যায় তার। ওই সময় পিকিং ইউনিভার্সিটিতে সমাজবিজ্ঞানের প্রফেসর লিউ নেং বলেছিলেন, চীনের গ্রাম এলাকায় টিনেজারদের বিয়ে একটি সংস্কৃতিতে রূপ নিয়েছে। তারা যখন বয়ঃসন্ধিক্ষণে পৌঁছে তখন তাদের কিছুই করার থাকে না। আবার কেউ কেউ বাল্য বিয়ের জন্য চীনের এক সন্তান নীতিকে দায়ী করেন। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে চীনে এই রীতি মানতে বাধ্য করা হচ্ছে দম্পতিদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *