Slider গ্রাম বাংলা

Sirajgonj_Photo-_4_(Ersn)_14.07_.17_সিরাজগঞ্জের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাহুকায় দুই পয়েন্টে প্রায় ৫০ মিটার এলাকা জুড়ে ভেঙে যাওয়ায় বাহুকা-পূর্ব বাহুকা-গজারিয়া, চিলগাছা ও ইটালী গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক বসতবাড়ী প্লাবিত হয়েছে। প্রবল স্রোতে পানি প্রবেশ করায় ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গেছে। আকস্মিক প্লাবিত হওয়ায় আসবাবপত্রসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসসহ ফসলের ক্ষতি হয়েছে। আতঙ্কিত লোকজন আসবাপত্র নিয়ে বাড়িঘর ছেড়ে ওয়াপদা বাঁধ ও স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, মাত্র একমাস আগে বাহুকা থেকে টুটুলের মোড়ের মাঝামাঝিতে সিরাজগঞ্জ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যায়। এ কারণে পানি যাতে লোকালয়ে প্রবেশ না করতে না পারে সে জন্য পানি উন্নয়ণ বোর্ড আধা কিলোমিটার পিছনে নতুন মাটির বাঁধ নির্মাণ শুরু করে। কিন্তু কাজ ধীরগতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে নতুন বাঁধের বাহুকা পয়েন্টে প্রথমে নতুন-পুরাতন বাঁধের মাঝে লিঙ্কবাঁধে ২৫ মিটার ভেঙে যায়। তাৎক্ষনিক পাউবো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রবল স্রোতে নতুন বাধের ২৫ মিটার এলাকা ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ শুরু করে। এতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

২৪ ঘন্টার ব্যবধানে বাহুকা-পূর্ব বাহুকা-ইটালী, গজারিয়া গ্রামের সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। প্রবল স্রোতে ঘরবাড়ি ভেঙে যায়। আতঙ্কিত হয়ে আসবাবপত্র নিয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে উচু স্থানে আশ্রয় নিতে শুরু করে, অনেকে আসবাবপত্র রেখেই জীবন বাঁচাতে বসতবাড়ীতে ছেয়ে যায়। বিকেল পর্যন্ত লিঙ্ক বাঁধের প্রথম অংশ সংস্কারের চেষ্টা করেও কোন সুরাহা না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে আরো আতঙ্ক ছড়িয়ে। আতঙ্কে বিকেল থেকে ভাঙা অংশের কাছ থেকে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়ে যায়।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম জানান, ইদুরের গর্তের কারণে প্রথমে সামান্য পানি লিক করে। এক পর্যায়ে বাঁধটি ভেঙ্গে যায়। পরে নতুন রিং বাঁধটিও ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। রাত ২টা থেকে ভাঙা অংশ সংস্কার কাজ শুরু করা হয়েছে। সকালে সেনাবাহিনীর ১১ পদাতিক ডিভিশনের রিভার কোরের মেজর সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে সেনা সদস্যরা সংস্কার কাজে সহায়তা করে।

জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জানান, বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতের জন্য পাউবোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও তাৎক্ষনিক উচুবাঁধে ও স্কুলে আশ্রয় নেয়া মানুষের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে যমুনার পানি ৪ সে.মি. কমে বিপদসীমার ৬৯ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমলেও পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ এখনো কমেনি। জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩০টি ইউনিয়নের ২৩০টি গ্রাম প্লাবিত প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। আর নদী ভাঙনে প্রায় ৫ শতাধিক বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। পানিবন্দী এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট।

অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ওয়াপদা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে নারী-পুরুষদের প্রাকৃতিক কর্ম সারতে পড়তে হচ্ছে নানা সমস্যায়। এদিকে এমন দুর্যোগের সময় জন প্রতিনিধিরা তাদের পাশে না দাঁড়ানোয় পানিবন্দী মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। আর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৩৮ মেট্টিক টন চাল ও ৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *