এবারের বোরো মৌসুমে সরকারকে চাল সরবরাহ করেননি ১৫ হাজার ৩৭০ মিলার। চুক্তিযোগ্য হওয়ার পরও চাল সরবরাহ না করায় এসব মিলারকে কালো তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী আগামী তিন বছর এসব মিলারের কাছ থেকে কোনো চাল কিনবে না সরকার।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে সরকারের সঙ্গে চুক্তিযোগ্য হাসকিং ও অটোরাইস মিল রয়েছে ২২ হাজার ৬৫৪টি। এর মধ্যে চুক্তি করেছেন ৭ হাজার ২৮৪ মিল মালিক। বাকি মিলাররা খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কোনো ধরনের চুক্তি করেননি। চাল সরবরাহও দেননি। যদিও গত বছর বোরো মৌসুমে দেশের সাত বিভাগের ২০ হাজার ৪৫১টি চালকলের সঙ্গে চুক্তি করেছিল সরকার। এসব মিল থেকে চাল সংগ্রহ হয়েছিল ৬ লাখ ২৯ হাজার ৯৪৮ টন।
চুক্তিযোগ্য হওয়ার পরও যেসব মিলার চাল সরবরাহ করেননি, তাদের কালো তালিকাভুক্ত করার কথা জানিয়ে গতকাল সংবাদ সম্মেলন করেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অনেক মিলার চাল মজুদ করেছিলেন জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, যারা মজুদ করেছিলেন ও এত দিন পর্যন্ত চুক্তি করেননি, তারা এখন পস্তাচ্ছেন। যারা মজুদ করেছিলেন, তারা তা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। ক্রমান্বয়ে ছেড়েও দিচ্ছেন।
আমদানির বিষয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, চাল আমদানির জন্য দরপত্র কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ৪ লাখ ৫০ হাজার টন চাল পাইপলাইনে রয়েছে। আগামী আগস্টের মধ্যে এসব চাল সরকারের গুদামে উঠবে। ১৬ জুলাই ভারতের একটি সরকারি প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছে। তাদের সঙ্গে জিটুজি পদ্ধতিতে চাল আমদানির চুক্তি হবে। থাইল্যান্ডের সরকারি প্রতিনিধি দলও ঢাকায় আসছে। সেখান থেকেও একই পদ্ধতিতে চাল আমদানি করা হবে। পাশাপাশি কম্বোডিয়া থেকে চাল আমদানির জন্য সমঝোতা স্মারকের খসড়া তৈরি করা হয়েছে।
বর্তমানে দেশে কী পরিমাণ চাল মজুদ রয়েছে— সাংবাদিকরা জানতে চাইলে এর কোনো পরিসংখ্যান দেননি খাদ্যমন্ত্রী। তিনি শুধু বলেন পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। মজুদ কম থাকায় চালের দাম বেড়েছে কিনা— এমন প্রশ্নের উত্তরে কামরুল ইসলাম বলেন, এটা যারা বলছে, তারা ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে। আমরা শুধু সরকারি বিতরণ ব্যবস্থায় চাল সরবরাহ করি।
সিদ্ধ ও আতপ মিলিয়ে এবার বোরো মৌসুমে চাল সংগ্রহের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল আট লাখ টন। এর মধ্যে ২ লাখ ১০ হাজার টনের চুক্তি হয়েছে বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, পরিস্থিতির কারণে অনেকেই নতুন করে চুক্তি করছেন। তিন-চার মাসের মধ্যে অভ্যন্তরীণ চাল গুদামে আসবে। বর্তমানে সরকারের ত্রাণসহায়তা ছাড়া অন্য কোনো কর্মসূচি নেই।