এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জ পৌরসভার ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ১শ’ ৩২ কোটি ৮৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জ সুইমিংপুল ও জিমনেশিয়াম অডিটোরিয়ামে পৌর মেয়র কাজী লিয়াকত আলি এ বাজেট ঘোষণা করেন।
বাজেটে মোট আয় দেখানো হয়েছে ১শ’ ৩২ কোটি ৮৫ লক্ষ ৩৮ হাজার ৩১১ টাকা ৬৪ পয়সা। এর মধ্যে উন্নয়ন আয় ধরা হয়েছে ১শ’ ২০ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা এবং রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১২ কোটি ৪ লক্ষ ৩৮ হাজার ৩১১ টাকা ৬৪ পয়সা। বাজেটে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১শ’ ৩২ কোটি ৮৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এর মধ্যে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ১শ’ ২০ কোটি ৮০ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং রাজস্ব ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ কোটি ৪ লক্ষ টাকা। বাজেটে ৮৮ হাজার ৩১১ টাকা উদ্বৃত্ত দেখানো হয়েছে।
এ সময় কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্ল¬াহ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার, পুলিশ সুপার মো: সাইদুর রহমান খান, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, সদর থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ রফিকুল ইসলাম মিটু, সাংবাদিকগন, ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
গোপালগঞ্জের ঈদ বাজারে এবার অগ্নি-২ ও মোদি কোটের চাহিদা বেশি
এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের ঈদ বাজারে এবার মেয়েদের কাছে অগ্নি-২ ও শিশুদের কাছে মোদি কোটের চাহিদা বেশি। এবার যেন ভারতীয় এবং চাইনিজ পোশাকই দখল করে নিয়েছে এখানকার বাজার। তবে সুতি কাপড়ের কদরও কমেনি।
এবারের ঈদে পোশাকের দাম গত বছর থেকে বেশি এমনই অভিযোগ ক্রেতাদের।
অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, অত্যাধুনিক ডিজাইনের পোশাক আনায় দামটাও একটু বেশি।
জেলা শহরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি দোকানে পুরুষের চেয়ে নারী ক্রেতার সংখ্যাই বেশি। শুধু বড়রাই নয় পছন্দ মত পোশাক কিনতে শিশুদের নিয়েও দোকানে ভিড় করছেন মা-বাবা। এবারের ঈদে নতুনত্বের ছোঁয়া এসেছে বাজারে। দোকানগুলোতে রাখা হয়েছে নতুন নতুন ডিজাইনের নানা রঙের পোশাক। তবে দামে সাশ্রয়ী আর আরামদায়ক হওয়ায় ক্রেতার প্রথম পছন্দই দেশি সুতির পোশাক। বাড়তি দামের কারণে ছেলে-মেয়েদের চাহিদা পূরণ করতে মধ্যবিত্ত ও নি¤œবিত্ত পরিবার গুলোকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এবারের ঈদে বাজারে নরমাল, নবাব, প্রিন্ট, বুটিক ও হাতে কাজ করা সহ বাহারি ডিজাইনের নানা বৈচিত্রের পাঞ্জাবি বেশি বিক্রি হচ্ছে। পাঞ্জাবির পাশাপাশি তরুণদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ফিটিং হাফ শার্ট, ফুল শার্ট, শর্ট পাঞ্জাবি, জিন্স প্যান্ট, চায়না গ্যাবাডিন, ফরমাল প্যান্ট, টি-শার্ট, ফরমাল শার্ট, শেরোয়ানি।
অন্যদিকে, মেয়েদের জন্য নামি-দামি ঈদের পোশাকের ছড়াছড়ি রয়েছে বড় বড় বিপণী বিতান গুলোতে। এবারে ভারতীয় পোশাক অগ্নি-২ নারী ক্রেতাদের দৃষ্টি কেড়েছে। লং গাউনের মতো লং ফ্রগ ড্রেসও বেশ আকর্ষণ করছে তাদের। তবে এবারও মেয়েদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে লেহেঙ্গা। আর সেই সাথে চাহিদা রয়েছে জামদানি, টাঙ্গাইল ও সুতি জামদানি শাড়ির। বাচ্চাদের মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে মোদি কোট।
নতুন পোশাক কিনতে আসা সদ্য বিবাহিত দম্পতি আরমান খান ও মেহজাবিন মিম জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর পোশাকের দাম বেশি।
গোপালগঞ্জের নাম মুজিবগঞ্জ করার দাবি বঙ্গবন্ধু গবেষণা ফাউন্ডেশনের
এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের নাম মুজিবগঞ্জ করার দাবিতে বঙ্গবন্ধু গবেষণা ফাউন্ডেশন দেশব্যাপী মানববন্ধন ও আলোচনা সভার আয়োজন করছে। ইতোমধ্যে ঢাকা, খুলনা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর ও কিশোরগঞ্জে এ বিষয়ে মানববন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এই প্রস্তাবের প্রস্তাাবক বঙ্গবন্ধু গবেষণা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব শেখ ওয়াহিদুজ্জামান আল ওয়াহিদ ইতোমধ্যে প্রস্তাবটির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে পত্র প্রেরণসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে তা প্রচারের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
বঙ্গবন্ধু গবেষণা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব শেখ ওয়াহিদুজ্জামান আল ওয়াহিদ বলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির জন্য যে অতুলনীয় অবদান রেখে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ ও এদেশের বাঙালি জাতিকে স্বাধীন জাতি হিসেবে সগৌরবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার দূর্লভ মর্যাদা দিয়ে গেছেন, তাঁর জন্মভূমিটি তাঁর নামেই পরিচিতি লাভ করবে এটাই স্বাভাবিক। এটি তাঁর কর্মের নূন্যতম স্বীকৃতি আর ইতিহাসের ন্যায্য দাবি।
বিশ্বের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এর বহু নজির রয়েছে সারা বিশ্বে। যুগে যুগে এই জনপদ নানা নামে পরিচিত ছিল। কালের বিবর্তনের প্রেক্ষাপটে সময়ের ন্যায্য দাবী অনুযায়ী বাঙালি জাতির পিতার নামানুসারে তাঁর জন্মভূমি পরিচিতি লাভ করলে সেটাই হবে আমাদের জন্য তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং ইতিহাসের ন্যায্য দাবীও এতে প্রতিষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি বাঙালি ও বাংলাদেশ নামটির সাথে অবিচ্ছেদ্য ভাবে চিরস্মরণীয় ও একাকার হয়ে আছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম। তথাপি এ কাজটি এখন সময়ের খুবই ন্যায্য দাবী। কারণ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সরকার গঠিত হয়েছিলো যে স্থানে সে স্থানের নাম ছিল বৈদ্যনাথতলা যা সেদিন থেকে মুজিব নগর নামে পরিচয় লাভ করে। তেমনি এদেশের অবৈধ সামরিক শাসকগণ ও তাদের শাসনামলে এদেশের বহু স্থানের নামকরণ করেছেন জিয়া নগর, এরশাদ নগর, এমনকি পাকিস্তানি অনেক শাসকদের নামেও এদেশে এখনও রয়েছে বহু স্থান, মহল্লা, রাস্তা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম। স্থানের নাম পরিবর্তন বা সংস্কার ইতিহাসের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া যুগের প্রয়োজনে যা ঘটে থাকে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন করে বাংলা রাখা হয়েছে। তাতে ভারতীয় বাঙালিদের কারও আপত্তি বা অনাপত্তি গ্রহণ করা হয়নি। এটা নিয়ে কারও মাথা ব্যাথাও নেই। যে অঞ্চলে আমাদের জাতির পিতার জন্ম সে ভূখন্ডের মানুষকে আজ এদেশের স্বাধীনতা বিরোধীচক্র গোপালী বলে গালি দেয় বা ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে, এর চেয়ে দূর্ভাগ্য জনক আর কি হতে পারে ? প্রকাশ্যে গণমাধ্যমে গোপালগঞ্জের নাম মুছে ফেলারও হুমকি দিয়েছে। কিন্তু কত বড় অকৃতজ্ঞ ও আহম্মক হলে একথা কেউ বলতে পারে। কারণ অঞ্চলের নাম পরিবর্তন করলেও তার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যে কোন ভাবেই পরিবর্তন করা যায় না তা তাদের বোধগম্য নয়। বিদ্যা-বুদ্ধি ও যথাযথ জ্ঞানের চরম অনটন থাকলে এমন ধৃষ্টতাপূর্ণ কথা কেউ বলতে পারে। এ বিষয়ে বাংলা একাডেমী প্রণীত বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালার জেলা পরিচিতি মূলক গ্রন্থ গোপালগঞ্জ জেলার নামকরণ অধ্যায়টি বারংবার পাঠ করে গভীর ভাবে অনুধাবন করে দেখা গেল গোপালগঞ্জের নাম সম্ভাব্য যাদের নামানুসারে নামকরণ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে বাঙালি জাতির জন্য, স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য তাদের এমন কোন অবদান নেই যা বঙ্গবন্ধুর সাথে কোন ভাবেই তুলনার যোগ্য। এ ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর অবদান তাদের তুলনায় লক্ষ কোটি গুণ বেশি।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু গোপালগঞ্জের পূর্ব নাম ছিলো রাজগঞ্জ সেহেতু এদেশের গণমানুষের রায়ে ও ভালবাসায় সিক্ত তাদের হৃদয়ের মণি কোঠার সিংহাসনে বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুই ছিলেন ও আছেন এদেশের মানুষের কাছে রাজা-রাজাধিরাজ। পূর্বের সেই রাজগঞ্জই এদেশের প্রকৃত রাজার নামে মুজিবগঞ্জ হবে এটাই এদেশের আপামর বাঙালির প্রত্যাশা, অভিমত ও ইতিহাসের ন্যায্য দাবী। তাছাড়া গোপালগঞ্জের মাটিতেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম এবং তাঁর সমাধিসহ অন্তত সাত পুরুষের সমাধি রয়েছে এখানে। এ বিষয়ে শুধু গোপালগঞ্জের সচেতন নাগরিকদের পক্ষেই নয় এদেশের বিবেকবান, কৃতজ্ঞ, দেশপ্রেমিক নাগরিকদের পক্ষে বঙ্গবন্ধু গবেষণা ফাউন্ডেশন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে সনির্বন্ধ আবেদন জানায় যে, বর্তমান সরকারের শাসনামলেই এই ঐতিহাসিক কাজটি অর্থাৎ গোপালগঞ্জের নামটি মুজিবগঞ্জ করে এবং প্রধানমন্ত্রীর জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়াকে হাসিনা নগর নামকরণ করে সময়ের দাবিকে ইতিহাসের পাতায় স্থান দিয়ে তাদের প্রত্যাশা পূরণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বঙ্গবন্ধু গবেষণা ফাউন্ডেশনের এই প্রস্তাবে সহমত পোষণ করে সমর্থনদানকারী সংস্থাসমূহ হলো, বঙ্গবন্ধু চেতনালীগ, সেলিব্রেটি রিসার্চ ফাউন্ডেশন, সাউথ এশিয়ান কালচার সোসাইটি, সোসাইট ফর ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস অব বাংলাদেশ, সেভ দ্যা ওয়ার্ল্ড এনভার্নমেন্ট এন্ড হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন, মাদার তেরেসা রিসার্চ এন্ড ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন, সাউথ এশিয়ান ক্রাইম ওয়াচ সোসাইটি, হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন, আলোড়ন সাহিত্য সংসদ, খুলনা সাহিত্য একাডেমী, লেখক কল্যাণ সংস্থা, বাংলাদেশ সাংবাদিক সংস্থা (বাসাস), জাতীয় দৈনিক সবুজ বিপ্লব, জাতীয় দৈনিক কথাবার্তা, জাতীয় সাপ্তাহিক নতুন শতাব্দীর আলোড়ন, জাতীয় সাপ্তাহিক বাংলাদেশ পরিক্রমা, ত্রৈমাসিক কলম সৈনিক, ত্রৈমাসিক লেখক কন্ঠ।