পাহাড়ধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৩৭

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

c20377289eca4e4f703ae9474b0454fd-59403fed4f6ef

 

 

 

চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৩৭-এ পৌঁছেছে। অনেকে এখনো নিখোঁজ। তাদের সন্ধানে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও স্থানীয় লোকজন কাজ করছেন।

রাঙামাটি থেকে ১০৬ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ২১ জন, চন্দনাইশে তিনজন, বান্দরবানে ছয়জন এবং খাগড়াছড়ি থেকে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রবল বর্ষণে গত সোমবার মধ্যরাত ও গতকাল মঙ্গলবার ভোরে পাহাড়ধসে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। পাহাড়ধসে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে রাঙামাটিতে। গতকাল ভোর পাঁচটা থেকে রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ধস শুরু হয়। বেলা ১১টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টায় শহরের ভেদভেদি, রাঙ্গাপানি, যুব উন্নয়ন, টিভি স্টেশন, রেডিও স্টেশন, রিজার্ভ বাজার, মোনঘর, শিমুলতলি ও তবলছড়ি এলাকায় পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে। সেখানে এখনো অনেকে লোক মাটিচাপা পড়ে আছে। গতকাল পর্যন্ত রাঙামাটির বিভিন্ন স্থান থেকে ৯৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সেনাবাহিনীর দুই কর্মকর্তা ও দুই সৈনিক। পাহাড়ধসে বন্ধ হয়ে যাওয়া রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক চালু করতে গিয়ে প্রাণ হারান তাঁরা। আজ সেখান থেকে আরও আটজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক প্রকাশ কান্তি চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, আজ বুধবার রাঙামাটি থেকে আরও আটজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ভেদভেদি থেকে মা-মেয়েসহ পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মায়ের নাম পন্তি সোনা চাকমা (৩৫) ও মেয়ের নাম সান্ত্বনা চাকমা (৯)। যুব উন্নয়ন এলাকা থেকে একই পরিবারের তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন রুপালি চাকমা (৩৫) ও তাঁর দুই মেয়ে জুঁই চাকমা (১২) ও ঝুমঝুমি চাকমা (৭)। তিনি জানান, রাঙামাটিতে মৃতের সংখ্যা ৯৮ থেকে বেড়ে ১০৬-এ পৌঁছেছে। এ সংখ্যা বাড়তে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ২১ জন ও চন্দনাইশ উপজেলায় তিনজন এবং বান্দরবানে পাহাড়ধসে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ বেলা দুইটার দিকে বান্দরবানের লেমুঝিরি আগাপাড়া এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে আজিজুর রহমানের নিখোঁজ স্ত্রী কামরুন্নাহার (৪৫) ও মেয়ে সুখিয়া আক্তারকে (১৪) উদ্ধার করা হয়। তাঁদের উদ্ধারে সকাল থেকে অভিযান চলে সেখানে।

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ধসে একজন নিহত হয়েছেন। খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার বর্মাছড়ি ইউনিয়নের পরিমল চাকমা গতকাল সকাল সাতটায় গরু আনতে গিয়ে পাহাড়ধসে মারা গেছেন। তাঁর তিনটি গরুও মরেছে।

লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমা পরিমল চাকমার মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পাহাড়ধসে আহত সাতজনকে লক্ষ্মীছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেওয়া হয়েছে।

ইইউ রাষ্ট্রদূতের শোক
চট্টগ্রাম ও পার্বত্য তিন জেলায় পাহাড়ধসে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনায় ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদুন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। আজ এক বিবৃতিতে তিনি নিহত ব্যক্তিদের আত্মার শান্তি কামনা করেন। প্রয়োজনে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব উপশমে ইইউ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন এই রাষ্ট্রদূত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *