নতুন ভ্যাট আইনের কারণে মুদ্রাস্ফীতি হবে না

Slider অর্থ ও বাণিজ্য জাতীয় ঢাকা

101049nbr

 

 

 

 

ঢাকা ; নতুন ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) আইনের কারণে পণ্যমূল্য বাড়বে না বলে মনে করছে রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আগামী জুলাই থেকে কার্যকর হবে নতুন এই ভ্যাট আইন। এ বিষয়ে এনবিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সঠিকভাবে হিসাব রাখলে এবং উপকরণ কর রেয়াত নিতে পারলে বরং কিছু ক্ষেত্রে পণ্যমূল্য কমতে পারে। অবশ্য রডসহ কিছু নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বাড়তে পারে।

গতকাল শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবি ভবনে নতুন ভ্যাট আইন নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে এনবিআর। এতে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান। এ সময় সাংবাদিকরা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে ভ্যাটের হার নির্ধারণের পক্ষে  মত দেন।

তারা বলেন, নতুন ভ্যাট বাস্তবায়ন শুরু হওয়ার আগেই মূল্যস্ফীতির আতঙ্ক সৃষ্টি হয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা ভ্যাটের কারণে জুলাই থেকে পণ্য ও সেবার মূল্য বাড়াবে বলে আগাম ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। তারা দরবৃদ্ধির আগাম প্রচারণাও চালাচ্ছেন। মূল্যস্ফীতির হাত থেকে ভোক্তাকে রক্ষা করতে এনবিআরের প্রস্তুতি কী, তা পরিষ্কার করার আহ্বান জানান সাংবাদিকরা।

আলোচনায় অংশ নিয়ে এনবিআর সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, হিসাব রাখলে উত্পাদন বা ব্যবসায়ের প্রতিটি স্তরে কেবল সংযোজিত মূল্যের উপর ভ্যাট দিতে হবে। এছাড়া কৃষিসহ বেশকিছু খাত ভ্যাট অব্যাহতির তালিকায় থাকায় তাদের ভ্যাট দিতে হবে না।

তিনি বলেন, কোনোভাবেই মূল্য বাড়বে না। অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে মূল্য না বাড়িয়ে দিতে পারে, সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। অবশ্য ইস্পাত ও রডসহ নির্মাণসামগ্রীর দর বাড়বে স্বীকার করে তিনি বলেন, বর্তমানে ট্যারিফ মূল্যের আওতায় প্রতিটন রডের ভ্যাট ৯শ’ টাকা। নতুন আইন বাস্তবায়ন হলে এই ভ্যাট বেড়ে সাড়ে সাত হাজার টাকা হতে পারে।

এ সময় এনবিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়, ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় না আসলে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা থেকে ছিটকে পড়বেন। এ পর্যন্ত প্রায় ৯ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় এসেছেন। যারা নিবন্ধনে আসেননি, তাদের আসতে হবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলা হয়, ভ্যাটের হার এখনো ১৫ শতাংশ। ভ্যাটের হার নিয়ে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে বহুস্তরের ভ্যাট ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চাই না।

এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যানও বলেন, নতুন আইনে মূল্যস্ফীতি হওয়ার সুযোগ নেই। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার উপর নির্ভর করবে নতুন আইনের সাফল্য। অনুষ্ঠানে নতুন আইনের বিভিন্ন সুবিধা তুলে ধরে নিবন্ধ উপস্থাপন করেন ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের উপ-পরিচালক জাকির হোসেন।

প্রসঙ্গত, সরকার ২০১২ সালে নতুন ভ্যাট আইন পাস করেছে। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আগামী জুলাই থেকে আইনটি কার্যকর হতে যাচ্ছে। কিন্তু নতুন আইনের শুরু থেকেই কয়েকটি বিষয়ে ব্যবসায়ীদের আপত্তি রয়েছে। সম্প্রতি এনবিআর ও এফবিসিসিআইয়ের বাজেট আলোচনায় এ নিয়ে হট্টগোলও হয়। এমন পরিস্থিতিতে ভ্যাটের হার কমিয়ে আইনটি সংশোধন করা হবে বলে সমপ্রতি জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *