বজ্রপাত কেড়ে নিল ১৮ প্রাণ

Slider সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী সারাদেশ

220941bajropat_kalerkantho_pic

 

 

 

 

ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় ধান কাটতে গিয়ে দুই সহোদর ভাই এবং স্কুল মাঠে খেলতে গিয়ে এক ছাত্র বজ্রপাতে মারা গেছে। এ ছাড়া একই দিন সুনামগঞ্জের হাওর, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, চাঁদপুর, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা, কুড়িগ্রামের রৌমারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর, হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা, গোপালগঞ্জ সদর, ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু ও কালীগঞ্জে বজ্রপাতে ১৫ জন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

ময়মনসিংহ : ধোবাউড়া উপজেলার ৪ নম্বর পোড়াকান্দুলিয়া ইউনিয়নের রাউতি গ্রামে সকালে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই সহোদর নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, রাউতি গ্রামের মালেক মৌলভীর দুই কৃষক ছেলে এংরাজ মিয়া (৪০) ও আসাদ মিয়া (৪৫) বাড়ির পাশের খেতেই ধান কাটছিলেন। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মারা যান দুই ভাই। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এদিকে দুপুরে স্কুল মাঠে খেলার সময় বজ্রপাতে মারা যায় জিলা স্কুলের নবম শ্রেণির দিবা শাখার ছাত্র মাহমুদুল হাসান তামিম (১৪)। তামিমদের বাসা শহরের জামতলা মোড়ে। তার বাবার নাম নূর মোহাম্মদ।

সুনামগঞ্জ : হাওরে হাঁস চড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে কৃষ্ঞনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সাইফুল ইসলাম (১৪) মারা গেছে। আহত হয়েছেন তার আপন বড় ভাই ডালিম মিয়া (২০)। মঙ্গলবার দুপুরে সদর

উপজেলার সাহেবনগরের কাউয়ার হাওরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, সাহেবনগর গ্রামের আসাদ আলী একজন হাঁসের খুদে খামারি। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর দুই ছেলে ডালিম ও সাইফুল ইসলাম হাঁসের পাল নিয়ে কাউয়ার হাওরে যায়। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সাইফুল ইসলাম। গুরুতর আহত বড় ভাই ডালিম মিয়াকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সকরা তাঁকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

চুয়াডাঙ্গা : দামুড়হুদার কানাইডাঙ্গা গ্রামে মঙ্গলবার বজ্রপাতে আবদুল মালেক নামের এক কিশোর মারা গেছে। দামুড়হুদা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী ডা. রোকনুজ্জামান জানান, কানাইডাঙ্গা গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে মাঠ থেকে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনার আগেই সে মারা যায়।
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) : রৌমারীর ব্রহ্মপুত্র নদে মাছ ধরতে গিয়ে সকালে বজ্রপাতে আনার আলী (৬০) নামের এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। আনার আলীর বাড়ি আমবাড়ী গ্রামে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোরে তিনি নদীতে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে যান। এ সময় হঠাত্ বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : নবীনগরে বজ্রপাতে খোদেজা বেগম নামের এক নারীর মৃতু্য হয়েছে। দুপুরে উপজেলার শ্যামগ্রাম ইউনিয়নের শ্রীঘর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খোদেজা বেগম ওই গ্রামের কবির মিয়ার স্ত্রী। শ্যামগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আমীর হোসেন বাবুল জানান, বৃষ্টির শুরুতে ওই নারী তঁার শিশুকে ডেকে আনতে ঘরের বাইরে বের হলে বজ্রপাতে মারা যান।

হবিগঞ্জ : বানিয়াচংয়ে বজ্রপাতে বাছিত মিয়া (৩০) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন। বাছিত মিয়া উপজেলা সদরের জাতুকর্ণপাড়ার (চান্দের মহল্লা) মজম উল্লার ছেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাছিত সকালে ধান উঠানোর জন্য জাতুকর্ণপাড়ার হাওরে কাজ করতে যান। দুপুরে আকস্মিক বজ্রপাতে তিনি গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সক মৃত ঘোষণা করেন।

গাইবান্ধা : গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামদিয়া ইউনিয়নের টিয়ারগাঁও গ্রামে নবচন্দ্র চন্দ (২৭) নামের এক ভ্যানচালক বজ্রপাতে মারা গেছেন। নবচন্দ্র ওই গ্রামের প্রেমাচন্দ্র চন্দের ছেলে। এলাকাবাসী ও গোবিন্দগঞ্জ পুলিশ জানায়, নবচন্দ্র সকালে ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী দিঘিরহাট বাজারে যাওয়ার জন্য বের হন। বাড়ি থেকে সামান্য কিছু দূর যাওয়ার পর হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এ সময় তাঁর ভ্যানটিও পুড়ে যায়।

চাঁদপুর : চাঁদপুরে মেঘনা নদীর দুর্গম চর রাজরাজেশ্বরে বজ্রপাতে মা-ছেলে প্রাণ হারিয়েছেন। এ সময় আরো তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে ওই চরের ঢালিকান্দি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন দুলাল সর্দারের স্ত্রী সেলিনা বেগম (৪৫) ও তাঁর ছেলে আল আমিন (১৪)। রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারি জানান, বিকেলে মা-ছেলে ঘরের পাশে টিউবওয়েলে পানি আনতে গেলে বজ্রপাতে তাঁরা ঘটনাস্থলেই মারা যান। এদিকে একই সময় পাশের গোয়ালনগর এলাকায় উঠানে ধান মাড়াইয়ের সময় গৃহবধূ ফাতেমা বেগম (৩৫), লিপি আক্তার (৩২) ও আমেনা বেগম (২৮) বজ্রপাতে আহত হন।

নারায়ণগঞ্জ : আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ছোট মনোহরদী ও মাহমুদপুর ইউনিয়নের মরদাসাদী গ্রামে বজ্রপাতে দুজন নিহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন- মরদাসাদী গ্রামের সুবেদা বেগম (৩০) ও মনোহরদী গ্রামের জমির হোসেন (৪২)।

সিরাজগঞ্জ : সলঙ্গায় বজ্রপাতে কোহিনূর বেগম (৫০) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে হাটিকুমরুল ইউনিয়নের মাছুয়াকান্দি গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। কোহিনূর ওই গ্রামের আবদুল হালিমের স্ত্রী।

গোপালগঞ্জ : সদর উপজেলার নিজরা বটবাড়ি গ্রামে বজ্রপাতে শামীম খন্দকার (২৬) নামের এক যুবক মারা গেছেন। শামীম ওই গ্রামের আক্রাম খন্দকারের ছেলে।

ঝিনাইদহ : হরিণাকুণ্ডু ও কালিগঞ্জ উপজেলায় বজ্রপাতে তিনজন মারা গেছেন। তাঁরা হলেন-হরিণাকুণ্ডুর পোলতাডাঙ্গা গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে মিরাজ হোসেন (৫০) ও আমের চারা গ্রামের ইমদাদুল হকের ছেলে মো. আমানুল্লাহ (৪০) এবং কালীগঞ্জ উপজেলার মোল্লাডাঙ্গা গ্রামের মো. ফসিয়ার রহমানের স্ত্রী আঞ্জুরা বেগম (৪৫)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *