আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুল প্রদর্শন করে জৈন্তাপুরে চলছে টিলা কাটার মহোৎসব

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী সিলেট

IMG-20170430-WA0001

হাফিজুল ইসলাম লস্কর ::
পরিবেশ আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় অবাধে পাহাড়-টিলা কাটার আগ্রাসন চালাচ্ছে ‘পাহাড়-টিলাখেকোরা’। পাহাড়-টিলা কাটা বন্ধে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ না থাকায় এই অপকর্ম রীতিমতো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। অনেক সময় প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিদের চোখের সামনেই ধ্বংস করা হচ্ছে পাহাড়-টিলা। রীতিমতো পাহাড়-টিলা কাটার উৎসব চলছে উপজেলার সর্বত্র।

উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্তেও অসাধু প্রভাবশালীরা একের পর এক টিলা কেটে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার সৌন্দর্যকে কেড়ে নিচ্ছে। ফলে জীববৈচিত্র মারাত্বক হুমকির পড়ছে।

পাহাড় টিলা কাটা বন্ধে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতার কথা বলা হলেও মাটি কারবারী তথা ভূমি খেকোদের কাছে এসব শুধুই নীতিবাক্য।

বাড়ি ঘর তৈরীর জন্য সরকারি ও বেসরকারি মালিকানাধীন টিলা কেটে ধ্বংশ করা হচ্ছে। প্রকল্পে বালুর বিকল্প হিসেবে ভরাটের জন্য ঢালাও ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে টিলার মাটি।

এক সময় সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলর হরিপুর, বাগেরখাল, শ্যামপুর, চিকনাগুল, চারিকাটা, জৈন্তাপুর, সারীঘাট, নলজুরি, ৪নং জৈন্তা ও শ্রীপুরসহ বেশ কিছু এলাকায় প্রচুর পাহাড় ও টিলা থাকলে ও এখন টিলার বৈশিষ্ট্য হারিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।

পরিবেশবাদীদের আশঙ্কা, যে হারে টিলা কাটা হচ্ছে তাতেই অচিরেই টিলা শূন্য হতে পারে জৈন্তাপুর উপজেলা।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর  উচ্চ আদালত সিলেট জেলার ৬ টি উপজেলার পাহাড় টিলা কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার পরও থেমে নেই টিলা কাটা।

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কিছু ব্যক্তি মালিকানাধীন টিলার মাটি ট্রাকে করে বিভিন্ন আবাসন কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে অসাধু টিলা খেকোরা। তারা পাহাড় টিলা কাটার মতো লাভ জনক ব্যবসা যে ছাড়তে নারাজ। এই ব্যবসায়ের সাথে জড়িতরা অনেকেই এখন কোটিপতি।

জৈন্তাপুরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রচুর পাহাড় টিলা, আর এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানেই ছুটে আসেন পর্যটকেরা ভিড় করে থাকেন এই ভূস্বর্গে। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়িদের কারণে জৈন্তাপুরের নৈসর্গিক সৌন্দর্যও হারিয়ে যেতে বসেছে।

প্রশাসনের নাকের ডগায় পাহাড় কেটে মাটি বিক্রয় করছে অসাধু ব্যবসায়িরা, তাই স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগছে নীরব কেন প্রশাসন? পরিবেশ অধিদপ্তরের নিষেধ সত্ত্বেও সম্প্রতি জৈন্তাপুরে একটি টিলা কাটার দৃশ্য সচেতন মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে।

উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নে একটি টিলা কাটা হচ্ছে। এক সময় টিলাটি তার অস্তিত্ব হারাবে এমন আশংকায় স্থানীরা।

এলাকাবাসী বলছেন, পাহাড়-টিলাগুলো দ্রুত রক্ষায় এগিয়ে না আসলে পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। অচিরেই হারিয়ে যাবে জৈন্তাপুরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *