মহিউদ্দিন-নাছির এক মঞ্চে

Slider চট্টগ্রাম

5c3e923ca8b0b4b30424385d9612c199-58f4d1726da7a

চট্টগ্রাম;  শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। এ দুজন একসঙ্গে হলে নেতা-কর্মীরা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দেন। নগর আওয়ামী লীগ সোমবার এ সভার আয়োজন করে। ছবি: সৌরভ দাশজাতির ঐক্যে ফাটল না ধরাতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে নগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় আজ সোমবার বিকেলে তিনি এ আহ্বান জানান।নগরের শহীদ মিনার চত্বরের আলোচনা সভায় সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনও বক্তব্য দেন।

বিকেলে আলোচনা সভার শেষ মুহূর্তে মেয়র নাছির উদ্দীনকে মাইক্রোফোনের সামনে ডেকে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘নাছির ভাই, ইক্কা আইয়ুন।’ (নাছির ভাই, এদিকে আসুন)। জবাবে মেয়র বলেন, ‘উনার (মহিউদ্দিন চৌধুরী) সঙ্গে কাজ করব উনার নেতৃত্বে।’ এ সময় উপস্থিত নেতা-কর্মীরা ‘জয় বাংলা’ এবং ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়েন।

আলোচনা সভাকে ঘিরে নগরে টান টান উত্তেজনা এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল ছিল। কারণ, ১০ এপ্রিল লালদীঘি মাঠে পূর্বের হারে নগরের গৃহকর বহাল এবং মৎস্যজীবীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে সমাবেশে সিটি মেয়র নাছির উদ্দীনকে ‘খুনি’ অভিহিত করে বক্তব্য দিয়েছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। তাঁর এই বক্তব্য ‘পাগলের প্রলাপ’ বলে পাল্টা মন্তব্য করেছিলেন নাছির উদ্দীন। নগর আওয়ামী লীগের এই দুই শীর্ষ নেতার পাল্টাপাল্টি বাগ্‌বিতণ্ডার কারণে নেতা-কর্মীরাও ছিলেন অস্বস্তিতে।

আলোচনা সভায় মেয়র নাছিরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, সদস্য বেলাল আহমেদ, জামালখান ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলমসহ নগর ও ওয়ার্ডের ১৫-১৬ জন নেতা শহীদ মিনারে যান। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

মেয়রের অনুসারী বেলাল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুজনের মধ্যে বিভাজনের কারণে নেতা-কর্মীরা শঙ্কিত ছিলেন। আমাদের এই দুই নেতার ঐক্যে আওয়ামী লীগ ও সভানেত্রী লাভবান হয়েছেন।’

আলোচনা সভায় মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘সাংবাদিক ভাইয়েরা, আবেদন করব, আপনাদের লেখনীতে জাতির ঐক্য যেটা হচ্ছে, তাতে যেন ফাটল না হয়। গভীর আগ্রহ নিয়ে ফাটল ধরিয়ে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখে আমাদের খাটো করার চেষ্টা করবেন না আল্লাহর ওয়াস্তে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভুল আমরা করতে পারি। সংশোধন করে দেবেন।’ এরপর আঞ্চলিক ভাষায় মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘খালি ইক্কার ল ইক্কা গরিয়েরে লেখের। (শুধু এদিক-ওদিক করে লিখে দিচ্ছে।) এটা ঠিক নয়। আমাদের সন্তান অনেকে সাংবাদিক। ভেদাভেদ সৃষ্টি করে কোনো লাভ হবে বলে মনে হয় না।’ এরপর মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়রকে ডেকে বলেন, ‘ভাই, নাছির ভাই ইক্কা আইয়ুন।’ মেয়র নাছির উঠে এসে মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে হাত মেলান।

এর আগে মেয়র নাছির উদ্দীন বলেন, পাকিস্তানি শোষণ ও শাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছিলেন। তাঁকে রাষ্ট্রপতি করে প্রবাসী মুজিবনগর সরকার গঠন করা হয়েছিল। স্বাধীনের পর তিনি দেশে ফিরে বলেছিলেন, ‘রাজনৈতিক স্বাধীনতা আমি চাইনি, চেয়েছি অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেন। তাঁর মেয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *