আগামীকাল চৈত্রসংক্রান্তি নগরীজুড়ে বর্ষ বিদায়ের অনুষ্ঠান

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি গ্রাম বাংলা সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী সারাদেশ

images

বিশেষ প্রতিবেদন :  আগামীকাল বৃহস্পতিবার চৈত্রসংক্রান্তি। বাংলা ১৪২৩ সালের শেষ দিন।

কবির ভাষায় ‘জীর্ণ পুরাতন যাক ভেসে যাক, মুছে যাক গ্লানি…’ বিদায়ী সূর্যের কাছে কাল এমনই প্রণতি জানাবে বাঙালী। আর সেই সঙ্গে মহাকালের অতলগর্ভে হারিয়ে যাবে আরও একটি বাংলা সন।

আগামীকাল সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদায়ী বছরের সমস্ত চাওয়া পাওয়া, হতাশা ও অপ্রাপ্তির সাঙ্গ হবে। তবে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী বাঙালী জাতি বিভিন্ন চাওয়া পাওয়ার সাথে বছরের শেষ দিনেও একটি দাবিতে থাকবে অনড়, আর তা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার প্রেরণা।

দিবসটি পালনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচী গ্রহণ করেছে।
বিদায়ী বছর সম্পর্কে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, জাতীয় জীবনে ১৪২৩ সনে দেশের মানুষ বর্তমান সরকারের নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে ব্যাপক উন্নয়নের ছোঁয়া পেয়েছে। রাজনীতি, অর্থনীতি, সাংস্কৃতিক, কূটনেতিক, বৈদেশিক বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারি কাজের সফলতায় দেশের উন্নয়ন ঘটে চলেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং বিদেশী সংস্থাসমূহ এখন বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল বলে চিহ্নিত করে থাকে। আগামী বছরটাও এমনই সম্ভাবনাময় হয়ে থাকুক, তা-ই বাঙালী প্রত্যাশা করবে।

চৈত্রসংক্রান্তি প্রসঙ্গে বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক রশীদ হায়দার বলেন, বিশেষ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা চৈত্রসংক্রান্তির উৎসবটি নানা পুজো অর্চণার মধ্যদিয়ে পালন করে থাকেন। সূর্যের কৃপা প্রার্থনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের কৃষককুল পুরো চৈত্রমাস জুড়েই পালন করেন প্রার্থনা উৎসবের। হিন্দু ব্যবসায়ীরা আয়োজন করেন জড়ক পুজোর।

তিনি বলেন, চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে লোকমেলার আয়োজন গ্রামগঞ্জেই বেশি হয়। মেলা, গান-বাজনা, যাত্রাপালাসহ নানা আয়োজনে উঠে আসে লোকজ সংস্কৃতির নানা সম্ভার। অনেক জায়গায় ইতোমধ্যে চৈত্রসংক্রান্তির মেলা বসে গেছে। সে দিক থেকে শহরাঞ্চলে চৈত্রসংক্রান্তির চিরন্তন আবেদন বলতে গেলে তেমন নেই, গান-বাজনার কিছু অনুষ্ঠান ছাড়া।

প্রতি বছরের মত এবারও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বর্ষবরণেল পাশাপাশি বর্ষ বিদায়ের অনুষ্ঠানের আযোজন করেছে। এ উপলক্ষে বিকেল ৪টায় একাডেমির ভবনসমূহের ছাদে ঘুড়ি উৎসব ও একাডেমি প্রাঙ্গণে লাঠি খেলার আয়োজন রাখা হয়েছে। এছাড়া ৫টায় পুঁথি পাঠ, সোয়া ৫টায় পুতুলনাট্য, পৌনে ৬টায় পালা গান, সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় গম্ভীরা ও পৌনে ৭টায় রায়বেশে পরিবেশিত হবে।
বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান আগামীকাল জাতীয় নাট্যশালায় সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় চৈত্রসংক্রান্তির বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে বর্ষবিদায়ের সূচনা সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে শুরু হবে অনুষ্ঠান। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও বর্ষবিদায়ের শুভেচ্ছা বক্তৃতা দেবেন সাংস্কৃতিক অঙ্গণের বিশিষ্টজনেরা। বর্ষ বিদায়ের অনুষ্ঠানে শিল্পীরা পরিবেশন করবেন গান। আলোচনা ও গানের ফাঁকে ফাঁকে চলবে আবৃত্তি। এছাড়া বাঙালীর ঐতিহ্যবাহী শুকনো খাবার মুড়ি মুরকীর আয়োজনও রেখেছে ফেডারেশান।

গেন্ডারিয়ার সীমান্ত খেলাঘর আসর ও সীমান্ত গ্রন্থাগার যৌথভাবে চৈত্র সংক্রান্তি ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। চৈত্রসংত্রান্তি উপলক্ষে ‘আঁকবো আমরা রাঙাবো গেন্ডারিয়া’ এ স্লোগানকে শিরোনাম করে গত দু’বছরের মতো এবারও বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় “আল্পনা উৎসব-১৪২৪” এর আয়োজন করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *