স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের শৈলকুপায় একমাত্র ছেলের হাতে প্রায় মার খেতে হয় এক অসহায় বাবার। এমনই এক হতভাগ্য বাবা কাঁদতে কাঁদতে ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। তিনি সোমবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. উসমান গনির কাছে এ লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগকারী উপজেলার বগুড়া ইউনিয়নের বারইহুদা গ্রামের তোয়াজ উদ্দিন বিশ্বাস। লিখিত অভিযোগে তিনি জানান, একমাত্র ছেলে ছোবহান তাকে খেতে দেয় না। জোর করে ৩ বিঘা জমি ভোগদখল করে। প্রায়ই মারধর করে, গালিগালাজ করে। তার ছেলের সাথে ভাতিজা আলমগীরও তাকে নির্যাতন করে। ছেলের কাছ থেকে তার জমি দখল অবমুক্ত করতে ও ভরন পোশনের দাবিতে তিনি অভিযোগ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. উসমান গনি জানান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ অভিযুক্ত ব্যক্তি ও অভিযোগকারীকে শুনানীতে উপস্থিত হতে বলেছেন। কিন্তু কোন আইন দ্বারা এমন অপরাধ বন্ধ করা কঠিন। এর জন্য দরকার ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধকে জাগ্রত করা।
ঝিনাইদহে এমপির অভিযোগ ইউএনও’র বিরুদ্ধে !
স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহ-৩ আসনের (কোটচাঁদপুর-মহেশপুর) সংসদ সদস্য মো. নবী নেওয়াজ অভিযোগ করেছেন, ‘মহেশপুরের ইউএনও আশাফুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অমান্য করে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। জনগণের কাছে সরকারের কর্মকান্ড তুলে ধরা সরকারি দলের এমপিদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। কিন্তু ইউএনও তাঁর সঙ্গে আলাপ না করে গত বৃহস্পতিবার মহেশপুরকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করা অনুষ্ঠান করেছেন। ওই অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
মো. নবী নেওয়াজ বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছেন সংসদ সদস্যরা এলাকায় ভিক্ষুকদের তালিকা করে তাদের পুনর্বাসন করবে। মহেশপুরের ইউএনও আশাফুর রহমান সেই নির্দেশ অমান্য করে ঔদ্ধ্যত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন। তিনি জনপ্রতিনিধিদের বাইপাস করে আমলাতান্ত্রিক মনোভাব প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছেন।’ এতে সাধারণ জনগণ ক্ষুব্ধ হয়েছে। ইউএনওর আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে কিছু কর্মচারী ছাড়া কেউ ছিল না। তিনি ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনকে কেন্দ্র করে সামনে রেখে ব্যাপক চাঁদাবাজি করছেন।’’
ইউএনও’র চাঁদাবাজিতে তিনি সমর্থন দেননি উল্লেখ করে সরকার দলীয় এ সংসদ সদস্য বলেন, ‘তিনি বিষয়টি সরকারের উপর মহলে জানিয়েছেন।’‘একজন অতিরিক্ত সচিব ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসককে ফোনে বলেছেন মহেশপুরের ইউএনও যা করছেন তার দায়-দায়িত্ব ডিসির ওপরও বর্তায়। ওই কর্মকর্তা আরো বলেছেন আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী এর অতিরিক্ত কিছু নয়’ বলেন মো.নবী নেওয়াজ। তবে এ বিষয়ে মহেশপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুস সামাদের নির্দেশ বিভাগের ১০ জেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে সরকারি ভাবে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলা ও ৬৭ টি ইউনিয়নকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে নিরলসভাবে কাজ করছেন সকলে। জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় ঝিনাইদহ জেলা ভিক্ষুকমুক্ত হওয়ার পথে।
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক আরো বলেন, খুব শিগগিরই অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে ঝিনাইদহ জেলাকে ভিক্ষুক মুক্ত ঘোষণা করা হবে। বিভাগিয় কমিশনার মো. আবদুস সামাদের উপস্থিতিতে সেই অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্যরা অতিথি থাকবেন।
শৈলকুপায় প্রাথমিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দের এক দিনের বেতনে ভিক্ষুকমুক্ত করার সিদ্ধান্ত !
স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহ শৈলকুপাকে ভিক্ষুক মুক্ত করণের লক্ষ্যে একদিনের বেতনের টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। মঙ্গলবার সকালে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি মিলনায়তনে ১৮০টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে মাসিক সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
মাসিক সমন্বয় সভায় উপস্থিত সকল শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী মাসের বেতন উত্তোলনের পূর্ব মুহুর্তে উপজেলার সকল প্রাথমিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক দিনের বেতন কর্তণ করা হবে। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জাহিদুল ইসলাম।
উপজেলার সকল প্রাথমিক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর ১ দিনের বেতন কর্তণ করলে প্রায় ৪ লাখ টাকা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। কর্তণকৃত টাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ উসমান গনির হাতে তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিক্ষকদের এই মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন মহল। তাদের এই ত্যাগ উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত করণে সহায়ক হবে।