মেয়র নাছির হেসে হেসে লোককে গুলি করতে পারেন—মহিউদ্দিন চৌধুরী

Slider চট্টগ্রাম টপ নিউজ

61080_thumbM_x7

চট্টগ্রাম; জনসভা করে নিজ দলের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনকে ‘খুনি’ বললেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী।
গতকাল সোমবার বিকেলে নগরীর লালদীঘি ময়দানে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সোনালী যান্ত্রিক মৎস্য শিল্প সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে একটি সমিতির ব্যানারে এই জনসভার আয়োজন করা হয়। জনসভায় মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘তিনি নাকি (মেয়র নাছির) হেসে হেসে লোককে গুলি করতে পারেন। তিনি পারেনতো। ১২টা লোককে হত্যা করেছেন। এই খুনি মেয়রের দায়িত্বে বসে আছেন।’ দলের সভা করে মেয়রকে অপসারণে প্রস্তাব নিয়ে তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে বলেও হুঁশিয়ার করে দেন তিনি। জনসভায় চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য শামসুল হক চৌধুরী, এমএ লতিফ ও দিদারুল আলমকে একহাত নেন। চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম ও খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী নেতা ছগীর আহমদের কড়া সমালোচনা করেন তিনি। বর্তমান মেয়র নাছিরকে উদ্দেশ্য করে সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একজন মেয়রকে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যদা দেন। কিন্তু আপনাকে দেয়া হয়নি। কারণ আপনি অথর্ব, অযোগ্য বলে এনএসআই, ডিজিএফআই রিপোর্ট দিয়েছে। আপনার আচরণ শোভন নয়। নাছিরকে হুমকি দিয়ে মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, নাছির সাহেব আপনি আওয়ামী লীগ করেন। দলের সাধারণ সম্পাদক। নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) আপনাকে মনোনয়ন দিয়েছেন বলে আমরা আপনাকে মেয়র বানিয়েছি। তাই বলে, আপনি মানুষের ওপর জুলুম করতে পারেন না। এই জনসভার পর থেকে আপনার অসৎ চিন্তা, চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র পরিহার করুন। না হয়, আপনাকে কী করতে হবে মহিউদ্দিন চৌধুরীর তা জানা আছে।
মেয়র ছাড়াও চট্টগ্রামের দলীয় সংসদ সদস্য শামসুল হক চৌধুরী, এমএ লতিফ ও দিদারুল আলমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা এমপি, মন্ত্রী ও মেয়র হন। সংসদে না গিয়ে বন্দরে বসে থাকেন।
বিচ্ছু (শামসুল হক), লতিফ, সাবেক মেয়র মঞ্জুরের ভাতিজা (দিদারুল আলম) সংসদে না বসে বন্দর চেয়ারম্যানের রুমে বসে থাকেন। তাদের লজ্জা করে না। মেয়র নাছির সাহেবও গিয়ে বসে থাকেন। নাছিরতো দরজায় তালা মেরে বন্দর চেয়ারম্যানের অফিসে বসে থাকেন। বন্দরে চারটি স্টিভেডোর লাইসেন্স নিয়েছেন। তিনি বলেন, উন্নয়ন হলে আমরা ট্যাক্স দিতে রাজি। কিন্তু উন্নয়ন না করে ট্যাক্স চাইলে দেয়া হবে না। ট্যাক্সের নামে আমরা ডাকাতি করতে দেবো না। জনসভায় আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নগরবাসীর ওপর চাপিয়ে দেয়া বর্ধিত হোল্ডিং ট্যাক্স প্রত্যাহারের আলটিমেটামও দেন মহিউদ্দিন। তবে বিজ্ঞ লোকদের পরামর্শ নিয়ে ভালোভাবে সিটি করপোরেশন পরিচালনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যদি আপনি আমাকে ডাকেন তাহলে আমিও যাবো। সিটি করপোরেশনকে পাগলের আড্ডাখানা বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেখানে একজন স্টেট অফিসার রয়েছেন। একজন সিআরও রয়েছেন। দুইজন চিফ ইঞ্জিনিয়ার রয়েছেন। ৭/৮টি পদ খালি।  মেয়র তল্পিবাহকদের দিয়ে সিটি করপোরেশন চালাচ্ছেন। ব্যবসায়ী নেতা মাহবুবুল আলম ও ছগীরকে উদ্দেশ্য করে মহিউদ্দিন বলেন, আপনারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিদেশ গিয়ে মানুষকে দেখান। রমজানে চক্রান্ত করে দাম বাড়াচ্ছেন। মনে রাখবেন, খাতুনগঞ্জ চুরি-ডাকাতির জায়গা নয়।’ সমিতির নেতা শামসুল আলমের সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য রাখেন- নগর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, নগর মহিলা লীগ নেত্রী মমতাজ খান, শ্রমিক লীগ নেতা মাহবুবুল হক এটলী, নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু, যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর, হোসনে আরাসহ সমিতির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *