আইপিইউ সম্মেলনেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে বিতর্ক

Slider সারাদেশ

60267_f1

 

ঢাকা; বাংলাদেশে ফেসবুক বন্ধ করা না করা নিয়ে চলা বিতর্কের মধ্যে ঢাকায় অনুষ্ঠিত আইপিইউ সম্মেলনেও এর প্রভাব নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। অনেক এমপি সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব ইতিবাচক বলে মনে করেন। আবার কয়েকজন এমপি এর বিরোধিতা করে বলেন, এসব মিডিয়ার ক্ষতিকর দিক অনেক বেশি। তাই এসব মাধ্যমে কি প্রচার হলো বা হলো না তা খুব বেশি গুরুত্ব দেয়ার প্রয়োজন নেই।
গতকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের কার্নিভাল হলে পার্লামেন্টারিয়ানস অ্যান্ড সোস্যাল নেটওয়ার্কস, মেকিং ইফেক্টিভ ইউজ অব সোস্যাল মিডিয়া শীর্ষক বিষয়ের ওপর বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন দেশের প্রায় ২০ জন এমপি অংশ নেন। অনুষ্ঠানে স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভালো ও খারাপ দুটি দিকই রয়েছে। তবে এ মাধ্যমটি ব্যবহারে সবারই সতর্ক থাকা উচিত। তিনি বলেন, এই ফোরামে আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের খারাপ দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারি। খারাপ দিকগুলো কিভাবে ভালোর দিকে নেয়া যেতে পারে সেসব নিয়ে কাজ করা যেতে পারে। এরপরই বিতর্কে অংশ নিয়ে সৌদি আরবের একজন নারী এমপি বলেন, এখানে যুগোপযোগী একটি বিষয়ের ওপর সুন্দর আলোচনা হচ্ছে। আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলছি। কাজ করার প্রক্রিয়া খুঁজছি। গালফ এরিয়ায় সৌদি আরব সবচেয়ে বড় দেশ, যেখানে সবচেয়ে বেশি মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছেন। এখন আমাদের সময় এসেছে পুরাতনকে ফেলে নতুনকে নিয়ে এগিয়ে চলার। আধুনিকভাবে এগিয়ে যাওয়া। তিনি বলেন, আমরা সংসদে এমন সব বিষয় উত্থাপন করি যেসব বিষয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেশি। সৌদি আরবের আরেক এমপি বিতর্কে অংশ নিয়ে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঙ্গে আমরা যুক্ত থাকলে বিশ্বের অনেক কিছুর অগ্রগতির সংবাদ পাওয়া যায়। নিজেরা আধুনিকভাবে এগোচ্ছি কিনা তা নিশ্চিত হতে পারি। বিতর্কে অংশ নিয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, সোস্যাল মিডিয়ার অনেক ক্ষতিকারক দিক রয়েছে, যেমন- সন্ত্রাসবাদ, ভোগান্তি, বিরক্ত করা, অপ্রয়োজনীয় তথ্য জানানো ইত্যাদি। যেসব বিষয় আমরা দেখতে চাই সোস্যাল মিডিয়ায় শুধু সেসব বিষয়ই থাকুক, যেমন- শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য বিষয়। তিনি বলেন, আমরা যারা রাজনীতিবিদ বা এমপি তারা এসব মাধ্যমে যখন কথা বলি তখন স্পষ্ট করে বলা উচিত। আমাদের অস্পষ্ট কোনো বক্তব্য বা কথা বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে। গায়ানার একজন এমপি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে আমরা অন্যান্য স্বাভাবিক মাধ্যমের মতো মনে করি। কিন্তু এটা অনেক শক্তিশালী। যুবসমাজ সবচেয়ে বেশি এ মাধ্যম ব্যবহার করেন। তাদের এ অংশগ্রহণ রাজনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তিনি বলেন, তারপরও এ মাধ্যম নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ফেসবুকে নকল প্রোফাইল, নকল অ্যাকাউন্ট খোলা সবচেয়ে খারাপ দিক। এতে একজন মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি হতে পারে। নামিবিয়ার একজন এমপি বলেন, সোস্যাল মিডিয়া কি কারণে ব্যবহার করবো এ প্রশ্ন আমার। নামিবিয়ায় সম্প্রতি এটা খুব বেশি ব্যবহার হচ্ছে। সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করা না হলে ভায়োলেন্সের মতো ক্ষতির মুখোমুখি হতে পারেন যে কেউ। সোস্যাল মিডিয়ার বিরোধিতা করে বাহরাইনের এক এমপি বলেন, এ মাধ্যমের অনেক খারাপ দিক রয়েছে। এগুলো আমাদের জীবনে খারাপ ভূমিকা রাখতে পারে। নির্বাচন কাছে এলে অনেকে রাজনীতিবিদের ব্যক্তিগত জীবনের গোপন কিছু ছড়িয়ে দিতে পারে। এর বাইরেও অনেক বাজেভাবে এর ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে খুব বেশি গুরুত্ব দেয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। বলিভিয়ার এমপি বলেন, সোস্যাল মিডিয়া নিয়ে সতর্ক থাকা উচিত। এখানে অনেক সময় মিথ্যা সংবাদ দেয়া হয়। সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহারে কিছু নিয়ম-নীতি আছে। এগুলো সবার মেনে চলা উচিত। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, একটি ছুরি তৈরি করা হয় মাংস কাটার জন্য। আমাদের জানা দরকার কিভাবে এর ব্যবহার করা উচিত। প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নিয়ে আইনগত কিছু করা যায় কিনা তা নিয়ে কেন আমরা কোনো কথা বলছি না?

ইতালির একজন এমপি বলেন, সরাসরি আমার একটি পরামর্শ হচ্ছে ফেসবুক বা সোস্যাল মিডিয়ার পেছনে কেউ যেন বেশি টাকা পয়সা খরচ না করেন। কারণ, এর কিছু ইতিবাচক দিকের পাশাপাশি অনেক  নেতিবাচক দিক রয়েছে। নেদারল্যান্ডের এমপি বলেন, ইন্টারনেটের সব খবরকে মানুষ আসলে বিশ্বাস করে। আমাদের শিশুরা কিভাবে সোস্যাল  মিডিয়া ব্যবহার করবে, কোনটি সত্য, কোনটি মিথ্যা সেটা তাদের শেখানো উচিত। কারণ, বর্তমানে তারাই সবচেয়ে বেশি সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে। এদিকে বিতর্ক সম্পর্কে আইপিইউ সম্মেলনে বাংলাদেশের ১৭ সদস্যের প্রতিনিধি দলের প্রধান ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া মানবজমিনকে বলেন, সোস্যাল মিডিয়ার ইতিবাচক ভূমিকার চেয়ে নেতিবাচক ভূমিকা বেশি। এটাকে কোনোভাবে উৎসাহিত করা উচিত নয় বলে মনে করি। আমরা যারা রাজনীতিবিদ তাদের সম্পর্কে অনেক সময় প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যক্তি কুৎসা রটাতে পারেন। আবার তার প্রতিশোধ নিতে আমিও একই কাজ করতে পারি। এটা নিশ্চয় ভালো কিছু নয়।

অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বন্ধে প্রস্তাব গ্রহণ
এদিকে স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য কোনো দেশের হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে আইপিইউ সম্মেলনে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। এরমধ্যে দিয়ে আইপিইউভুক্ত দেশের আইন প্রণেতাদের বেশিরভাগ অঙ্গিকার করেছেন অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। বিশেষ কোনো কারণে যদি প্রয়োজনও হয় তাহলে জাতিসংঘের আইন অনুযায়ী করার ওপর মত দেন এসব আইন প্রণেতা। গতকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রের সেলেব্রিটি হলে ‘স্ট্যান্ডিং কমিটি অন পিস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি’ বিষয়টির খসড়া প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়। কমিটিতে প্রস্তাবটি গ্রহণ করার পর এক্সিকিউটিভ কমিটিতে যাবে। ১৭ সদস্যের ওই এক্সিকিউটিভ কমিটির সভাপতি আইপিইউ প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী। এছাড়া ৬ জন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ১০ জন সদস্য রয়েছে এক্সিকিউটিভ কমিটিতে। সেখানেই চূড়ান্ত হবে প্রস্তাবটি। আজ প্রস্তাবটি চূড়ান্ত করা হবে। অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বন্ধে আনীত এই খসড়া প্রস্তাবটির ওপর গত দুদিন বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্যরা তাদের মতামত তুলে ধরেন। এ সময় এক দেশ অন্য দেশের দোষারোপ করতে থাকেন। প্রস্তাবটি আলোচনা শেষে স্ট্যান্ডিং কমিটিতে গ্রহণের আগে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। সেই ভোটে বাংলাদেশ, ভারতসহ ৪৪টি দেশ পক্ষে মত দেয়। অন্যদিকে ১০টি দেশ এ প্রস্তাব সরাসরি বাতিলের পক্ষে মত দেয়। একটি দেশ ভোটদান থেকে বিরত থাকে। বিপক্ষে ভোট দেয়া রাষ্ট্রগুলো হলো জার্মানি, যুক্তরাজ্য, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, কানাডা, তুরস্ক, আইসল্যান্ড, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড ও ইউক্রেন। ভোট না দেয়া দেশটি হলো বেলজিয়াম। বিপক্ষে ভোট দেয়া দেশ ফিনল্যান্ডের প্রতিনিধি বলেন, প্রস্তাবটি আমরা ঠিকমতো বুঝতে পারিনি। যে কারণে আমি মনে করি অনেক দেশের প্রতিনিধিই এ প্রস্তাব বুঝতে না পেরে ভোট দেয়নি। বাংলাদেশ ডেলিগেশন টিমের প্রধান ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, এটা সত্য কোনো দেশই অন্য দেশের ওপর হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। এটা করাও উচিত না। আইপিইউ যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, তাহলে আমি মনে করি কিছুটা হলেও ওইসব মোড়ল দেশের ওপর বৈশ্বিকভাবে চাপ সৃষ্টি করা যাবে। প্রস্তাবটি গ্রহণ করায় চায়নার প্রতিনিধি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমরা খুব খুশি যে প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়েছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য ভালো। ভোট প্রদানের পর বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য মঈনুদ্দিন খান বাদল বলেন, আমরা কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে খোঁচাই না। এ সম্মেলনে আমরা বলতে চাই, সবশেষে গণতন্ত্রকে সমর্থন দিতে হবে।

আইপিইউতে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে বিতর্ক
ইন্টার পার্লামেন্ট ইউনিয়নে (আইপিইউ) বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ’কে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হলে কাজের পরিধি কি হবে তা নিয়েও। কারণ, আন্তর্জাতিক সংস্থা দুটির ঋণ দেয়ার বাইরে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত দেয়ার সক্ষমতা নেই। তবে চাইলে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ তাদের দেয়া ঋণের বিষয়ে তদারকি করতে পারেন। গতকাল সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ইউনাইটেড নেশন অ্যাফেয়ার্স শীর্ষক সম্মেলনে আন্তর্জাতিক সংস্থাটির অবস্থান নিয়ে আলোচনা করতে অনুষ্ঠানের চেয়ারপারসন সুইডেনের এমপি এন্টি আভসান এ মন্তব্য রাখেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সেলেব্রিটি হলে এ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। বিতর্কে জাতিসংঘের আগের সম্মেলনে এসডিজির অর্জনে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা যে বদ্ধপরিকর ছিল তার বাস্তবায়ন কতটুকু, ঢাকায় আইপিইউ সম্মেলনে তা উঠে আসে। ওই সম্মেলনের বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি কতটুকু তা-ও আলোচনার বাইরে ছিল না। এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের অংশীদারিত্ব আরো বাড়ানোর তাগিদ দেন বিতর্কে অংশ নেয়া প্রতিনিধিরা। সিদ্ধান্ত হয়, এসডিজি বাস্তবায়নের আরো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার।

বিশ্বে ৩০ বছরের কম বয়সী এমপি প্রায় দুই শতাংশ
বিশ্বে ১২০ কোটি তরুণ ভোটার রয়েছে। যাদের ৫৭ শতাংশের বয়স ২০ থেকে ৪৪ বছরের মধ্যে। কিন্তু বৈশ্বিকভাবে ৩০ বছরের কম বয়সী সংসদ সদস্য মাত্র এক দশমিক ৯ শতাংশ। যাদের বেশিরভাগই রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। এই সংখ্যা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে ‘ফোরাম অব ইয়ং পার্লামেন্টারিয়ানস’। গতকাল আইপিইউ সম্মেলনের চতুর্থ দিনে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। যুব সংসদ সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে গত দুদিন বৈঠক শেষে এ তথ্য তুলে ধরেছেন। ফোরাম অব ইয়ং পার্লামেন্টারিয়ানস-এর প্রেসিডেন্ট মাউরিন অসোরু জানান, সংসদে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব খুবই নগণ্য, যা খুবই হতাশাজনক। আইপিইউ সম্মেলনে মাত্র ৩০ বছরের নিচে পার্লামেন্টারিয়ান রয়েছেন ১২ জন।

দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের সহায়তা
তীব্র খরায় ইয়েমেন, দক্ষিণ সুদান, সোমালিয়া ও উত্তর কেনিয়ার দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের সাহায্যে দ্রুত এগিয়ে আসার জন্য আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ)। মঙ্গলবার আইপিইউ সম্মেলনে এ বিষয়ে একটি জরুরি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। গত দুদিন বিষয়টির ওপর আলোচনা হয়। বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য ও কেনিয়ার প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে প্রস্তাবটি আইপিইউ অধিবেশনে উত্থাপন করা হয়। দুর্ভিক্ষ সম্পর্কিত প্রস্তাবে বলা হয়, ইয়েমেন, দক্ষিণ সুদান, সোমালিয়া ও উত্তর কেনিয়ায় চলমান দুর্ভিক্ষের ফলে এই অঞ্চলসমূহে চরম মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে। গত ১০ই মার্চ জাতিসংঘও এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সতর্ক করে দিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এ প্রস্তাবনা গ্রহণের মাধ্যমে আইপিইউ সদস্যরা নিজ নিজ সরকারকে জরুরি ত্রাণ সহায়তা দিতে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে দাবি করা হয়েছে। এদিকে ওই বৈঠকে মেক্সিকোর দেয়া ‘বিশ্বজুড়ে কঠোর অভিবাসন নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি’ এবং আরব গ্রুপের পক্ষে ফিলিস্তিনের দেয়া ‘বসতি স্থাপন প্রক্রিয়াকে ইসরাইলের আইনি বৈধতা ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন’ শীর্ষক দুটি প্রস্তাব ভোটে নাকচ হয়ে যায়।

রাশিয়ায় হামলার ঘটনায় শোক প্রস্তাব
রাশিয়ায় বোমা হামলা ও হতাহতের ঘটনায় আইপিইউ সম্মেলনের সাধারণ অধিবেশনে শোক প্রস্তাব প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে অধিবেশন শুরুর আগে আইপিইউ প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন। পরে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অধিবেশন শেষে ওই সভার সভাপতি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, রাশিয়ার হামলার ঘটনায় শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। এ সময় আইপিইউ প্রেসিডেন্ট সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাদের জোরালো অবস্থানের কথা তুলে ধরেছেন। তিনি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় সদস্য দেশগুলোকে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী কন্যার ‘অনন্য ছবি’র মোড়ক উন্মোচন
প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের সম্পাদনায় প্রকাশিত বই ‘অনন্য ছবি’র মোড়ক উন্মোচন করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু কনভেনশন সেন্টারে ১৩৬তম আইপিইউ সম্মেলনে দেশি-বিদেশি অতিথিদের সামনে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন  স্থান থেকে বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন (অটিস্টিক) শিশু শিল্পীদের ২৬০টি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে এ বইতে। অনুষ্ঠানে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন বলেন, বইটি এসব শিল্পীর স্বপ্ন। এ বইয়ের মাধ্যমে তারা পুরো বিশ্বকে দেখছে। এসব ছবি থেকে তাদের চিন্তার জগতকে চেনা যাবে। বছরের পর বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব শিল্পীর আঁকা চিত্রকর্ম সম্বলিত যেসব গিফট কার্ড পেয়েছেন সেখান থেকে বইয়ের অনেক ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে। বই বিক্রির টাকা সূচনা ফাউন্ডেশনকে দেয়ার কথা ঘোষণা দেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের একজন লাইসেন্সপ্রাপ্ত স্কুল সাইক্লোজিস্ট সায়মা ওয়াজেদ হোসেন বলেন, বিশেষভাবে সক্ষম সমাজের এ সকল ব্যক্তিদের জন্য আমাদের অনেক কিছুই করার রয়েছে। তাদের প্রতি সহযোগিতা ও সহমর্মিতা প্রকাশ মানবতার প্রতি দায়িত্ব পালন বলে তিনি মন্তব্য করেন। শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, এদের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। এদের সমাজের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে হবে। এ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি কথা বলার সুযোগ রয়েছে সাংসদদের। তিনি বলেন, আর্ট পুস্তকের রঙিন রঙের মতো রাঙিয়ে আমরা সারা পৃথিবীর সঙ্গে একইভাবে রঙিন বিশ্ব বিনির্মাণে কাজ করে যাবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *