ঢাকা; সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক বন্ধে নানামুখী তৎপরতা শুরু হয়েছে। রাতে শিক্ষার্থীদের ফেসবুক ‘নেশা’ থেকে দূরে রাখতে ছয় ঘণ্টার জন্য তা বন্ধ রাখার চিন্তা করছে সরকার। এ বিষয়ে করণীয় জানতে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। যদিও গতকাল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফেসবুক বন্ধে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
এদিকে মন্ত্রণালয়ের চিঠির জবাবে বিটিআরসি বলছে এই মুহূর্তে ফেসবুক বন্ধ করা সমীচীন হবে না। এর আগে ২০১৫ সালে ফেসবুক বন্ধ করেছিল সরকার। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি এড়ানো ও কর্মক্ষমতা যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ফেসবুক বন্ধ রাখা যায় কিনা- এ বিষয়ে টেলিযোগাযোগ বিভাগের কাছে মতামত জানতে চেয়েছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ বিষয়ে মতামতটি টেলিযোগাযোগ বিভাগ বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) পাঠিয়ে দেয়। বিটিআরসি ওই চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ফেসবুক বন্ধের বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে খবর আসার পর গতকাল গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠায় টেলিযোগাযোগ বিভাগ। ফেসবুক বন্ধের খবরটি সঠিক নয় দাবি করে টেলিযোগাযোগ বিভাগের বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার ফেসবুক বন্ধের বিষয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। এ বিষয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে টেলিযোগাযোগ বিভাগ। এ প্রসঙ্গে বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, আমরা চিঠি পেয়েছি। এটা যেহেতু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তাই এ বিষয় ইতিবাচক। আমরা শুধু কারিগরি দিকটাই পর্যালোচনা করেছি। তিনি বলেন, আমরা আমাদের বিশ্লেষণ করে দেখেছি ওই সময়টাকে ফেসবুক শিশুরা ব্যবহার করে বিষয়টা তেমন নয়। বাইরের দেশে সেসময়টা ‘ওয়ার্কিং আওয়ার’। ফলে এটি বন্ধ রাখা সম্ভব না। চিঠির মাধ্যমে আমাদের বিশ্লেষণ জানিয়ে দেয়া হয়েছে। একই প্রসঙ্গে বিটিআরসির সচিব ও মুখপাত্র মো. সারোয়ার আলম মানবজমিনকে বলেন, চিঠিতে আমরা জানিয়েছি ফেসবুক বন্ধ করা সমীচীন হবে না। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বিষয়ে অভিভাবকদের পরিচর্যার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা গতকাল মানবজমিনকে বলেন, এক বছর আগে ডিসিদের দেয়া ‘মধ্যরাতে ফেসবুক বন্ধের’ সুপারিশকে আমলে নিয়ে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিকে দ্বিতীয় দফা চিঠি দিয়েছে সরকার। এ চিঠিতে কেবল ফেসবুক নয়, কার্টুন চ্যানেল বন্ধের বিষয়েও বিটিআরসির মতামত চাওয়া হয়। আগের চিঠির জবাব না পাওয়ায় আবারও এ চিঠি পাঠানো হয় সংস্থাটিকে। কার্টুন দেখে আর ফেসবুক ব্যবহার করে শিশুরা তাদের সময় নষ্ট করছে এবং রাত জেগে থাকছে। এ কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের পারফরম্যান্স ভালো হচ্ছে না। এই দুই যুক্তিকে সামনে রেখে ফেসবুক বন্ধ করা জরুরি বলে ডিসিরা সুপারিশ করায় বিটিআরসির মতামত চেয়েছে সরকার। ২০১৬ সালের ডিসি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে শিশুদের কার্টুন ও ফেসবুকে আসক্তি বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ডিসিদের পক্ষ থেকে এগুলো কিছু সময়ের জন্য বন্ধের আবেদন জানানো হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সেসময় মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিটিআরসিকে জানানো হলেও বিটিআরসি তার জবাব দেয়নি। আগামীতে ডিসি সম্মেলনের প্রস্তুতিকালে সেই বিষয়টি নজরে এলে আবারও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিটিআরসিকে চিঠি পাঠানো হয়।
এদিকে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ফেসবুক বন্ধ হলে সবার জন্যই বন্ধ করা হবে, সিলেকটিভলি সেটা করা হবে না। অর্থাৎ কে তরুণ কে প্রাপ্তবয়স্ক সুনির্দিষ্টভাবে কোনো ব্যবহারকারীর জন্য বন্ধ করা সম্ভব নয়। কারিগরিভাবে এটা করা সম্ভব কিনা সেটা এখন যাচাই করে দেখবে বিটিআরসি। তিনি বলেন, যেহেতু এটি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা কেবিনেট ডিভিশনের মাধ্যমে এসেছে তাই খুব তাড়াতাড়ি এটি কার্যকর হতে পারে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে প্রায় ৭ কোটি ইন্টারনেট গ্রাহকের মধ্যে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩ কোটির বেশি। এর আগে ২০১৫ সালের ১৮ই নভেম্বর থেকে ফেসবুক-ভাইবার-হোয়াটসঅ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগের কয়েকটি মাধ্যম বন্ধ করে দেয় সরকার। দুটি আলাদা নির্দেশনায় এসব মাধ্যম বন্ধ করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। নিরাপত্তাজনিত কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুরোধে এ নির্দেশনা জারি করা হয় বলে ওই সময় বিটিআরসির কর্মকর্তারা জানান।
এদিকে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ফেসবুক বন্ধ হলে সবার জন্যই বন্ধ করা হবে, সিলেকটিভলি সেটা করা হবে না। অর্থাৎ কে তরুণ কে প্রাপ্তবয়স্ক সুনির্দিষ্টভাবে কোনো ব্যবহারকারীর জন্য বন্ধ করা সম্ভব নয়। কারিগরিভাবে এটা করা সম্ভব কিনা সেটা এখন যাচাই করে দেখবে বিটিআরসি। তিনি বলেন, যেহেতু এটি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা কেবিনেট ডিভিশনের মাধ্যমে এসেছে তাই খুব তাড়াতাড়ি এটি কার্যকর হতে পারে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে প্রায় ৭ কোটি ইন্টারনেট গ্রাহকের মধ্যে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩ কোটির বেশি। এর আগে ২০১৫ সালের ১৮ই নভেম্বর থেকে ফেসবুক-ভাইবার-হোয়াটসঅ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগের কয়েকটি মাধ্যম বন্ধ করে দেয় সরকার। দুটি আলাদা নির্দেশনায় এসব মাধ্যম বন্ধ করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। নিরাপত্তাজনিত কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুরোধে এ নির্দেশনা জারি করা হয় বলে ওই সময় বিটিআরসির কর্মকর্তারা জানান।