ঠাকুরগাঁওয়ের নারী জাগরণে এক মহীয়সীর গল্প

Slider নারী ও শিশু

rani-2-696x557

এস. এম. মনিরুজ্জামান মিলন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ভারতী রানী, ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ১০নং জাবরহাট ইউনিয়ন ৪ নং ওয়ার্ড এর বাসিন্দা। জনমানুষের নেত্রী, বিশিষ্ট সমাজসেবিকা হিসেবেই বেশি পরিচিত।

ভারতী রানী একাধারে পীরগঞ্জ উপজেলা মহিলা লীগের সাধারন সম্পাদক, উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা সদস্য, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির মহিলা সদস্য, পূজা উদযাপন কমিটি ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের উপজেলা উপদেষ্টা মন্ডলির মহিলা সদস্য, কৃষক সমবায় সমিতির সভাপতি। এছাড়াও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন সেবা মূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।

ভারতী রানীকে অনেকদূর দেখতে চায় এলাকাবাসী। তিনি তার এলাকায় বাল্য বিবাহ রোধ, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনমান সুনিশ্চিতকরণে বিশেষ অবদান রাখায় এলাকাবাসীর এ চাওয়া।

ভারতী রানীর অবদানে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বাল্য বিবাহ রোধ করা সম্ভব হয়েছে। যারা বর্তমানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে। এছাড়াও নারী নির্যাতন প্রতিরোধে তার রয়েছে বিশেষ অবদান। তার এলাকার অনেক নারী ছিল নির্যাতিত, কিন্তু ভারতী রানী সেসব নির্যাতিত নারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের অধিকার ফিরিয়ে আনতে সর্বদা সহযোগিতা করেছেন।

এছাড়াও সমাজের পিছিয়ে পড়া নিরীহ সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তাদের জীবনমান সুনিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ গ্রহনের মাধ্যমে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এই নারী। তাদের সন্তানদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করতে প্রতিটি সন্তানকে স্কুলে পাঠানোর জন্য পরামর্শ দেন তিনি। প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে তার সহায়তায় পড়াশোনা করছেন শিক্ষার্থীরা।

বর্তমানে তার এলাকায় প্রায় সকল ছেলেমেয়ে স্কুলমুখী হয়েছে। এলাকার বেশ কিছু শিক্ষাথী জানিয়েছে, পড়াশোনার ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মা-বাবার একটু অসচেতনতায় যখন পড়াশোনা করা সম্ভব হচ্ছিল না তখন ভারতী রানীর সুপরামর্শে এখন পড়াশোনা করছে তারা। তাছাড়া প্রসূতি মায়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা, মা ও শিশুর সু-স্বাস্থ্য লাভের জন্য নানা প্দক্ষেপ ও দিক নিদেশনা দিয়ে তাদের সেবার মান নিশ্চিত করা ছাড়াও নানা মানবিক কাজে অংশ নেন তিনি।

তার এলাকায় পূর্বে নিযাতিত এক নারীর কাছ থেকে জানা যায়, পূর্বে সে স্বামীর বাড়িতে অনেক নিযাতনের স্বীকার হয়েছে। কিন্ত বর্তমানে ভারতী রানীর সহযোগীতায় সে এখন ভালোভাবে স্বামীর সংসারে বসবাস করছে।

এলাকার সফল ব্যবসায়ী মোঃ রেজাউল করিম ভারতী রানীর সম্পর্কে বলেন, তিনি অত্যন্ত ভালো মনের মানুষ। এলাকার উন্নায়নে তিনি যেভাবে অবদান রেখে চলেছেন, আশা করছি অদূর ভবিষ্যতে তিনি দেশবাসীর নিকট রোল মডেলে পরিণত হয়ে উঠবেন।

ভারতী রানীর কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছোট বেলা থেকেই মানুষের পাশে দাড়াতে আমার ভালো লাগে। সমাজে খেটে খাওয়া নিরীহ মানুষগুলোর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করার চেষ্টা করি। আমার সফল উদ্যোগে এলাকায় বাল্য বিবাহ ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছি। আমি জনসাধারনের জন্য কাজ করতে চাই। এজন্য দুই দু’বার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হয়ে ১ম বার মাত্র ২৫ ভোট ও ২য় বার শুধু ২ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হই। সাধারন জনগন আমাকে ভালোবেসে ভোট দিয়েছে। আগামী উপজেলা নির্বাচনে জয়ী হলে এভাবেই মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে চান এই মহীয়সী নারী।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এই মহীয়সী নারীর প্রতি রইলো হাজারো শ্রদ্ধা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *