আমার কন্যাকে কি তবে ধর্ষকের কাছে বিয়ে দিতে হবে?

Slider টপ নিউজ

9235e0018c54dbfdd19e81095765ce0b-58b81fa6ecbba

ঢাকা; তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় নারী শ্রমিক কণ্ঠের আহ্বায়ক ও সাংসদ শিরীন আখতার বলেছেন, ‘আমার কন্যাকে কি তবে ধর্ষক, অপহরণকারীর কাছে বিয়ে দিতে হবে? ধর্ষণ করে বিয়ে করলে কি আর সাজা হবে না?’
শিরীন আখতার আরও বলেন, ‘তবে’ যুক্ত আইন না করে, যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে, সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে হবে।বৃহস্পতিবার রাজধানীতে ‘২০৩০ সালে নারী-পুরুষের সমতা অর্জন: ট্রেড ইউনিয়নসহ সব ক্ষেত্রে এখনই এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে বাস্তবতা ও করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। কর্মজীবী নারী ও জার্মান সংস্থা ফ্রিড্রিখ ইবাট স্টিফটোংয়ের সহযোগিতায় এ সভার আয়োজন করে নারীশ্রমিক কণ্ঠ।বাল্যবিবাহের মূল আইনে গুরুত্ব না দিয়ে সবাই বিশেষ ধারার প্রতি নজর দিচ্ছেন বলে মতবিনিময় সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তথ্যমন্ত্রী। এ সময় তিনি বিশেষ ধারা রাখার যৌক্তিকতা তুলে ধরতে বলেন, একটি মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর সে যদি অন্তঃসত্ত্বা হয়, তখন মেয়েটির কী করবে। এ রকম ক্ষেত্রে আদালতের আদেশে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়েই সমাধান। তথ্যমন্ত্রীর এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের কাছে সাংসদ শিরীন আখতার ওই মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশ শ্রমশক্তি জরিপ ২০১৩ অনুযায়ী, শ্রমশক্তিতে ২০০২-০৩ সালে নারী শ্রমিকের অংশগ্রহণ ছিল ২৬ দশমিক ১ শতাংশ; ২০১৩ সালে সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ। এমনকি পোশাকশিল্প খাতে আয়ের ৮৫ শতাংশেই নারীর অবদান। অথচ এখনো তাঁদের সুরক্ষায় কোনো শ্রম আইন হয়নি।

উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানিয়া হক বলেন, ‘নারীরা শ্রমবাজারে নিযুক্ত হচ্ছেন; কিন্তু সেই হারে পুরুষ ঘরের কাজে যুক্ত হচ্ছেন না। ফলে নারীকে দ্বিগুণ পরিশ্রম করতে হচ্ছে। পাশাপাশি সন্তান পালন আমাদের দেশে কেবল নারীর কাজ হিসেবে দেখা হয়; পরিবার ও সমাজে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে এসব মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত নারীরা তাঁদের প্রতি নানা ধরনের বৈষম্য ও নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন। পোশাকশ্রমিক নিপা বলেন, ‘একদিন কাজ নিয়া ঝামেলা হইলে লাইন চিফ আমারে ধাক্কা দিয়ে ফালাই দিছে।’ কারচুপি শ্রমিক নাছিমা বলেন, ‘একে তো আমারে মজুরি কম দেয়। আবার ঠিকমতো ট্যাকাও দেয় না।’

কর্মজীবী নারীর নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া রফিক বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বস্তরে নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণের জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে ন্যূনতম এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রতিনিধিত্বের দরকার। ট্রেড ইউনিয়নেও এর বিকল্প নেই। পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে নারীবান্ধব পরিবেশ থাকতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *