ঢাকা; পুলিশের উত্তর বিভাগে উপ-কমিশনার বিধান ত্রিপুরা জানিয়েছেন, উত্তরা ও এর আশপাশের এলাকায় যারা স্কুল ফাঁকি দিয়ে ইউনিফর্মে ঘোরাফেরা করবে তাদের থানায় আনা হবে। মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।
ডিসি বিধান ত্রিপুরা জানিয়েছেন, স্কুল চলাকালীন বেশ কয়েকটি স্পটে ইউনিফর্ম পরা শিক্ষার্থীদের ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। এ বিষয়ে পুলিশ নিবিড় নজরদারি করছে। তিনি জানান, আমি নিজেও দিয়াবাড়িসহ উত্তরার বেশ কয়েকটি স্পটে স্কুল টাইমে শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্মে ঘোরাফেরা করতে দেখেছি। স্কুল চলাকালীন যারা এ ধরনের কাজ করবে তাদের ধরে থানায় আনা হবে। পরে তাদের বাবা-মা এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা আসলে ছেড়ে দেয়া হবে।
গত ৬ জানুয়ারি উত্তরায় হকিস্টিক ও রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় স্কুল ছাত্র আদনান কবিরকে। কিশোরদের গ্যাং কালচারের কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। তাই তারা যাতে বিপথে না যায় সেজন্য এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উত্তরার ডিসি।
বিধান ত্রিপুরা জানান, উত্তরা এলাকার স্কুল-কলেজ ও কোচিং সেন্টারের এক শ্রেনীর উঠতি তরুণ ছাত্ররা ডিসকো বয়েজ উত্তরা, নাইট স্টার গ্রুপ, সেভেন স্টার গ্রুপ, নাইন এএম বয়েজ উত্তরা, বিগবস ইত্যাদি ফেসবুক পেজ খুলে নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে। যা অনেক সময় সংঘর্ষে রূপ নেয়। কিশোর ছাড়াও তাদের মধ্যে মিস্ত্রিসহ নানা পেশার লোক রয়েছে। এসব গ্রুপের মাধ্যমে এ পর্যন্ত কোন ে চাঁদাবাজির তথ্য আমরা পাইনি। তবে তারা বিভিন্ন স্কুলের সামনে ও ফেসবুকে নিজেদের হিরোইজম দেখানোর চেষ্টা করে।
আদনান কবির হত্যাকাণ্ডের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে ডিসি বিধান ত্রিপুরা জানান, এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১০-১২ জনকে এজাহারভুক্ত করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তদন্ত ও বিভিন্ন অভিযানে র্যা ব সাতজনকে এবং পুলিশ সাতজনকে গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে পাঁচজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের কথায় মোট ১২ জনের নাম উঠে এসেছে। তবে আদালতে জবানবন্দি দেয়া পাঁচজনের কেউই এজাহারভুক্ত আসামি নয়। বিধান ত্রিপুরা জানান, মামলার এক নম্বর আসামি নাইমুর রহমান অনিক এখনও পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। তরুণ সমাজের এ ধরনের সামাজিক বিচ্যুতি প্রতিরোধে উত্তরা এলাকার ছাত্র-অভিভাবক, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ সব স্তরের লোকজনকে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।