কে হচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার?

Slider জাতীয়

52098_f1

 

ঢাকা; সময় ফুরিয়ে আসছে। সহসাই চূড়ান্ত হবে তালিকা। সার্চ কমিটির আগামীকালের বৈঠকেই যা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এরপর তালিকা চলে যাবে বঙ্গভবনে। তিনটি প্রশ্ন এখন খুব বড় হয়ে উঠছে- ১. প্রধান নির্বাচন কমিশনার হবেন কে? ২. সার্চ কমিটির তালিকায় থাকবেন কারা? ৩. প্রেসিডেন্ট কি সার্চ কমিটির তালিকা থেকেই নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন? নাকি বাইরে থেকেও অন্তর্ভুক্ত হবে নাম।
এরই মধ্যে দাবি উঠেছে, স্বচ্ছতার স্বার্থে সার্চ কমিটির নিজেদের প্রণীত তালিকা প্রকাশ করা উচিত হবে। তাহলে জনগণ বুঝতে পারবে, প্রেসিডেন্ট সার্চ কমিটির তালিকা কতটা আমলে নিয়েছেন। বিশিষ্ট নাগরিকরাও বলেছেন, প্রেসিডেন্ট যেন সার্চ কমিটির তালিকা থেকেই নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। যদিও সাংবিধানিকভাবে এ ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা নেই। তবে প্রেসিডেন্ট নিজে যে সার্চ কমিটি গঠন করেছেন ওই কমিটির সুপারিশ তার অগ্রাহ্য করার কথা নয়। এখন পর্যন্ত খবর হচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে পাওয়া নামগুলোর মধ্য থেকে সার্চ কমিটি যে ২০ জনের তালিকা তৈরি করেছিল, সে তালিকা নিয়েই চলছে বিচার-বিশ্লেষণ। তাদের সম্পর্কে নেয়া হচ্ছে খোঁজখবর। বিশেষ করে তাদের অতীত ব্যাকগ্রাউন্ড পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই চলছে। সার্চ কমিটির সদস্যরা নিজেদের মতো বিষয়টি বিশ্লেষণ করছেন। আগামীকাল সোমবার বিকালে আবারও বৈঠকে বসছে সার্চ কমিটি। ওই বৈঠকে তালিকা চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তা না হলে আরেকটি বৈঠকের প্রয়োজন হতে পারে।
বিএনপির পক্ষ থেকে শুরুতে সার্চ কমিটির ৫ সদস্যের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলেও কমিটির আহ্বানে সাড়া দিয়েছে দলটি। এছাড়া শুরুতে সংশয় থাকলেও ২৫টি রাজনৈতিক দলের সার্চ কমিটির কাছে তালিকা দেয়া কমিটির গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টিই প্রমাণ করে। এছাড়া বিশিষ্ট নাগরিকদের কাছ থেকেও মতামত নিয়েছে কমিটি। যাদের কারো কারো দলীয় আনুগত্যের পরিচয় থাকলেও বেশির ভাগই নিরপেক্ষ, নির্দলীয় ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। এখন এসব মতামত সার্চ কমিটি কীভাবে আমলে নেয়, তাই হবে দেখার বিষয়।
নতুন ইসি গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর দেয়া নামের তালিকার বাইরে কারও নাম থাকবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে সার্চ কমিটির একজন সদস্য মানবজমিনকে বলেন, ‘এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া। আর আমরা এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছি, যেখানে এ বিষয়ে কথা বলা সমীচীন হবে না। তবে এটা বলতে পারি, নির্ধারিত সময়ের (৮ই ফেব্রুয়ারি) আগেই আমরা প্রেসিডেন্টের কাছে তালিকা জমা দেবো।’ অনুসন্ধানের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য যোগ্য ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের বাছাইপ্রক্রিয়ার বিষয়ে সার্চ কমিটির একজন সদস্য মানবজমিনকে বলেন, ‘এটা এমন বিভক্ত এক সমাজ, যেখানে সর্বজন গ্রহণযোগ্য বলে আসলে কেউ নেই। ওই (ইসি) দায়িত্বের জন্য আমরা যদি পাঁচজন ফেরেস্তাকেও বসাই, তাহলে সেই ফেরেস্তারাও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবেন বলে মনে হয় না। তবে, আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা ও খোলা মন নিয়ে কাজ করছি। আর আমরা (সার্চ কমিটি) এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছি, যা তাৎপর্যপূর্ণ। তাই, একটা ভালো জিনিস করতে গিয়ে নিজেদের বিতর্কিত করতে চাই না।’
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নির্বাচন কমিশনার কারা হবেন তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে হবেন। কারণ অতীতে দেখা গেছে প্রধান নির্বাচন কমিশনারই নির্বাচন কমিশনের ক্যারেক্টার ঠিক করে দেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পরিচয়েই পরিচিত হয় কমিশন। এখন দেখার বিষয় এবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে হন। এখন পর্যন্ত এ পদে কয়েকটি নাম আলোচিত হচ্ছে। লক্ষণীয় হচ্ছে তাদের প্রায় সবাই সাবেক আমলা। সম্ভাব্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হচ্ছে সাবেক মুখ্য সচিব মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামানের নাম। আলোচনায় এগিয়ে রয়েছেন আরেক সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবদুল করিম। এছাড়াও আলোচনায় রয়েছেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সাদত হুসাইন, আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক মুখ্য সচিব শেখ ওয়াহিদুজ্জামান প্রমুখ।
তবে পর্যবেক্ষকদের কেউ কেউ বলছেন, নিরপেক্ষ ব্যক্তি যতই খোঁজা হোক না কেন রাজনৈতিক শক্তি না চাইলে নির্বাচন কমিশন কখনো নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে না। সাবেক এক মন্ত্রিপরিষদ সচিব প্রায়শই বলে থাকেন, স্বাধীন বাংলাদেশে একমাত্র সরকার ছাড়া কেউই স্বাধীন নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *