মাহমুদ আব্বাস ঢাকায়; বিপুল অভ্যর্থনা

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

51756_b2

 

কূটনৈতিক রিপোর্টার; তিন দিনের সরকারি সফরে এখন ঢাকায় ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। গতকাল বিকাল পাঁচটায় এক বিশেষ বিমানে মাহমুদ আব্বাস ও তার সফরসঙ্গীরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে ঢাকায় আসা ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে প্রেসিডেন্ট নিজে বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।
সেখানে লালগালিচায় তাকে অভিবাদন জানানো হয়। প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সফরসঙ্গীদের মধ্যে আছেন ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল মালকি, প্রধান বিচারপতি মাহমুদ আল-হাব্বাস, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেনি প্রমুখ। সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী প্রেসিডেন্ট আব্বাসের সঙ্গে তার হোটেলে গিয়ে সাক্ষাৎ করেন। আজ দুপুরে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। বেলা তিনটার দিকে তিনি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনে যাবেন। বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে একান্ত বৈঠক করবেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ৩ দিনের সরকারি সফরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুদিন আগেই বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি, প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ছাড়াও কূটনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মাজদি খালদি সহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ মাহমুদ আব্বাসের প্রতিনিধি দলে অন্তর্ভুক্ত থাকছেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- সফরকালে মাহমুদ আব্বাস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ছাড়াও প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হবেন। সকল বৈঠকে মাহমুদ আব্বাস দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বাংলাদেশের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এ সময়ে দু’দেশের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে যৌথ কমিশন গঠন সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দুদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদ্বয় সৌজন্য বৈঠকে মিলিত হয়ে দু’দেশের প্রাধিকারপ্রাপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতবিনিময় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং ধানমন্ডি ৩২ নম্ব্বর সড়কে অবস্থিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন ছাড়াও সফরকালে তার সম্মানে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ আয়োজিত স্টেট ব্যাঙ্কুয়েট বা ভোজসভায় অংশ নেবেন। এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস একাধিকবার ঢাকায় যাত্রা বিরতি করলেও বাংলাদেশে এটাই তার প্রথম আনুষ্ঠানিক সফর। প্রেসিডেন্টের সফর বিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ইউসেফ রামাদান সাংবাদিকদের জানান, প্রেসিডেন্টের সফরে অন্তত দুটি চুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলছে। সেগুনবাগিচার কর্মকর্তারা জানিয়েছে, ফিলিস্তিন স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে সব সময় ছিল বাংলাদেশ, এছাড়া দেশটির রাজধানী জেরুজালেমে স্থাপনের পক্ষেও বাংলাদেশের অবস্থান। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট এমন এক সময়ে বাংলাদেশ সফরে আসছেন, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইসরাঈলকে জোরালো সমর্থন দিচ্ছে। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসনেরও ইসরাঈলের প্রতি সমর্থন ছিল। কিন্তু শেষ সময়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনে ইসরাঈলের অবৈধ বসতি স্থাপনের নিন্দা প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র বা ওবামা ভেটো দেয়নি। হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে, ইসরাঈলের তেলআবিবে থাকা মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে জেরুজালেমে নেয়ার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের অঙ্গীকারের বিষয়ে আলোচনা ‘শুরু’ হয়েছে। সেগুনবাগিচা সূত্র জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ঢাকা সফরে এসব বিষয় আলোচনায় আসতে পারে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়েও বাংলাদেশের নেতৃত্বের সঙ্গে তার আলোচনা হতে পারে। বাংলাদেশ সফর শেষে প্রেসিডেন্ট আব্বাস আগামীকাল অপরাহ্নে ঢাকা ছেড়ে যাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *