খুনিরা এমপি লিটনকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে”

Slider টপ নিউজ

ig-01

গাইবান্ধা থেকে: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গায় এক আইন শৃংখলা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় আইজিপি একেএম শহিদুল হক বলেন, খুনিরা এমপি লিটনকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। একজন জনপ্রতিনিধির এই হত্যাকান্ড কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বাংলাদেশের পুলিশ স্বাধীনতার চেতনা নিয়ে কাজ করছে। সুতরাং পুলিশ সর্ব শক্তি দিয়ে তারা এমপি লিটন হত্যাকারিদের অবিলম্বে খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনবে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীরা যে এলাকায় সক্রিয় হয়ে ওঠে সেই এলাকায় সন্ত্রাসী জনপদে পরিণত হয়। সুতরাং স্বাধীনতা বিরোধীদের অপতৎপরতার কারণেই সুন্দরগঞ্জ আজ সন্ত্রাসী জনপদে পরিণত হয়েছে। ২০১৩ সালে এই সুন্দরগঞ্জে সন্ত্রাসীরা নাশকতা ও তান্ডব চালিয়ে ৪ পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে। থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়েছে, রেল স্টেশন, বাড়িঘর, দোকানপাট আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। গোটা উপজেলায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিসহ করে তুলেছিল। এই অশান্তির জনপদকে শান্তির জনপদে পরিণত করতে হবে। এ দায়িত্ব আমাদের সকলের।

তিনি বলেন, এমপি লিটনের হত্যাকারিদের চিহ্নিত করতে পুলিশের সবগুলো স্পেশালাইসড টিম কাজ করছে। তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া হবে। খুনিদের কেউ রেহাই পাবে না। অচিরেই তারা ধরা পড়বে। তিনি এজন্য জনগণের কাছে সঠিক তথ্য দিয়ে অপরাধীদের গ্রেফতারে সহায়তা করার জন্য আহবান জানান।

জঙ্গিবাদ সম্পর্কে আইজিপি বলেন, জঙ্গিরা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সব জাতির লোককেই হত্যা করছে। তাদের কোন ধর্ম নেই। মানুষকে জিম্মি করে তারা তাদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে। তবে পুলিশের ভূমিকায় এ দেশে অনেক জঙ্গি ধরা পড়েছে। তাদেরকে আইনের আওতায় নেওয়া হয়েছে আবার কেউ নিহত হয়েছে। বাকিরাও অচিরে ধরা পড়বে। এ দেশে জঙ্গিবাদের কোন স্থান হবে না।

এমপি লিটনের বড় বোন আফরোজা বানু বলেন, এমপি লিটন ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন সাহসী সৈনিক। যে গ্রামের মানুষের কল্যাণে এলাকার উন্নয়নে ছিল নিবেদিত প্রাণ। তার হত্যাকান্ডের ১১ দিন অতিক্রান্ত হয়েছে। আমরা এক অনিশ্চয়তার মধ্যে জীবন যাপন করছি। পুলিশের সর্বোচ্চ কর্মকর্তার কাছে তাই আমাদের আবেদন হত্যাকারিদের অবিলম্বে সনাক্ত করুন এবং তাদের শাস্তি দিন। যেন আমরা আমাদের ভাই হত্যার বিচার পেতে পারি।

এমপি লিটনের স্ত্রী সৈয়দ খুরশিদ জাহান স্মৃতি বলেন, সবার প্রতি আমার আবেদন আমার স্বামীর হত্যাকারিদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করুন। যে মানুষটি সবসময় মানুষের কল্যাণ কামনা করতো, তাকে খুনিরা কিভাবে হত্যা করতে পারে। আমি সেই বর্বর খুনি হায়নাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।

গাইবান্ধা জেলা পুলিশের উদ্যোগে বামনডাঙ্গা আব্দুল হক মহাবিদ্যালয় মাঠে মঙ্গলবার বিকেলে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে ওই সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ, জেলা পুলিশ ও কমিউনিটি ফোরামের আহব্বায়ক আব্দুস সালাম, জেলা আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক প্রমুখ। জেলা উপজেলার কমিউনিটিং পুলিশিং কমিটির সদস্যরা ছাড়াও সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক মানুষ এতে উপস্থিত ছিলেন। পরে আইজিপি মো. শহীদুল হক প্রয়াত এমপি লিটনের বামনডাঙ্গার শাহবাজ মাস্টারপাড়া গ্রামে গিয়ে কবর জিয়ারত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *