রাষ্ট্রদূত তলব

Slider জাতীয়

46906_lead

 

ঢাকা; মিয়ানমারের রাখাইনে হত্যা-নির্যাতন থেকে প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশে অস্থায়ী আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফিরিয়ে নেয়ার দাবি এবং বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় দেশটির নৌবাহিনীর গুলিবর্ষণের প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা। বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত মিও মিন্ট থান্টকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক প্রতিবাদ ও দাবি জানায়। এ সময় প্রতিবেশী দেশটির রাষ্ট্রদূতের হাতে ঢাকার অসন্তোষবিষয়ক দুটি কূটনৈতিক পত্র বা নোটভারবাল ধরিয়ে দেয়া হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি এবং কর্মকর্তাদের ভাষ্য মতে, বৃহস্পতিবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বিপক্ষীয় ও কনস্যুলার) কামরুল আহসানের দপ্তরে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অনুবিভাগের মহাপরিচালক মঞ্জুরুল করিম খানও উপস্থিত ছিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তলব পেয়ে দুপুর ১টার দিকে রাষ্ট্রদূত মিও মিন্ট থান্ট সেগুনবাগিচায় যান। মন্ত্রণালয়ের সচিবের কক্ষে প্রায় আধঘণ্টার বেশি সময় বৈঠক করে রাষ্ট্রদূত প্রায় নিঃশব্দে সেগুনবাগিচা ছেড়ে যান। পরে সচিব কামরুল আহসান উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে আমরা দু’টি বিষয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছি। রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে মিয়ানমারকে বাংলাদেশের অবস্থান সংক্রান্ত পৃথক দু’টি আনুষ্ঠানিকপত্র বা নোট ভারবাল দেয়া হয়েছে। প্রথম পত্রে বাংলাদেশে অবস্থিত নতুন-পুরাতন, নিবন্ধিত, অনিবন্ধিত সকল রোহিঙ্গা ও মিয়ানমার নাগরিককে যত দ্রুত সম্ভব ফেরত নেয়ার তাগিদ দেয়া হয়েছে। সচিব বলেন, দ্বিতীয় পত্রে গত মঙ্গলবার সেন্টমার্টিন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর এলাকায় বাংলাদেশের জলসীমায় মিয়ানমারের নৌবাহিনীর গুলিতে চার বাংলাদেশি জেলের আহত হওয়ার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। ওই ঘটনার পূর্ণ তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ দিতে দেশটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
৫০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে- বিবিসি বাংলাকে পররাষ্ট্র সচিব: এদিকে রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুতে কথা বলতে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর নেত্রী অং সান সূচির বিশেষ দূত ঢাকা আসছেন। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হককে উদ্ধৃত করে বৃহস্পতিবার বিবিসি বাংলা এই তথ্য জানায়। বিবিসিকে সচিব বলেন, ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে পাঠানো হলে রাষ্ট্রদূত তার দেশের একজন বিশেষ দূত পাঠানোর কথা বাংলাদেশকে জানান। সচিব বলেন, ‘উনি (রাষ্ট্রদূত) আমাদের বলেছেন তাদের একজন স্পেশাল এনভয় (দূত) আসবেন। তারা শিগগিরই আমাদের জানাবেন কবে আসবেন।’ শহীদুল হক বিবিসিকে বলেন, মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থা মূল্যায়নে ওই দূত পাঠাচ্ছেন সূচি। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের হত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতন বন্ধে কোনো ভূমিকা না রাখায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো অং সান সূচির কড়া সমালোচনা করছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়- রাখাইন রাজ্যে গত কয়েক মাসে রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-নিপীড়নের ঘটনায় প্রায় ৫০ হাজার মিয়ানমারের নাগরিক বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছে, তাদের দেশ থেকে পালিয়ে আসা নাগরিকদের অবশ্যই ফিরিয়ে নিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *