কুড়িগ্রামে জমে উঠেছে জেলা পরিষদ নির্বাচন

Slider গ্রাম বাংলা

15492499_582572965270107_48

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগে জমে উঠেছে জেলা পরিষদ নির্বাচন। ক্ষামতাসীন দল আওয়ামীলীগের দুই প্রার্থীর একজন হলেন মোঃ জাফর আলী আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। তিনি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুড়িগ্রাম-২ আসনের সাবেক এমপি। অপরজন জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট শিল্পপতি পনির উদ্দিন আহমেদ কাপ-পিরিচ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।

জেলা পরিষদ নির্বাচনে মোঃ জাফর আলী আওয়ামীগের সমর্থন পাওয়ায় নির্বাচনে দলীয় প্রভাব খাটানোর অভিযোগ করছেন অপর প্রার্থী পনির উদ্দিন আহমেদ।

পনির উদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করেন, জেলা পরিষদ নির্বাচন দলীয় নির্বাচন না হলেও দলের প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচনের শুরু থেকেই গাড়ী ভাংচুর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, সমর্থকদের মারধর, বাড়ি-ঘর ভাংচুর, নির্বাচনী পোষ্টার ছেড়াসহ নানা রকম হুমকী-ধামকী দিয়ে আসছেন জাফর আলীর সমর্থকরা।

অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ, নাজিমখাঁ, উলিপুর উপজেলার এম.এস হাইস্কুল এবং কুড়িগ্রাম সদরের মোগলবাসা ইউনিয়ন পরিষদ চত্ত্বরে লাগানো পনির উদ্দিন আহমেদ এর পোস্টার (কাপ-পিরিচ প্রতীক) ছিড়ে ফেলা হয়েছে।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার মটর শ্রমিক অফিস এলাকায় পনির উদ্দিন আহমেদের দুই কর্মী আঃ জলিল এবং আল আমিন নামের দুই যুবক পোস্টার লাগাতে গেলে রাজারহাট উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নুরের নেতৃত্বে চিহ্নিত দলীয় ক্যাডার জাহিদুল ইসলামসহ আরো অনেকে ওই দুই কর্মীকে বেদম মারপিট করে এবং তাদের সাথে থাকা সমস্ত পোস্টার ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

আহত যুবক আব্দুল জলিল জানান, আমি দোষীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে রাজারহাট থানা কর্তৃপক্ষ অভিযোগ নিতে অস্বীকৃতি জানায়।

এ বিষয়ে রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোখলেছুর রহমানের কথা হলে তিনিি অভিযোগ গ্রহণ না করার বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান।

অন্যদিকে রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নে পনির উদ্দিন আহমেদের কর্মী শামীম পোস্টার ও ব্যানার লাগাতে যায়। এসময় স্থানীয় যুবলীগ নেতা মোঃ আলমগীর হোসেন এবং ছাত্রলীগ নেতা এরশাদুল হক তাদের ক্যাডার বাহিনী নিয়ে তার উপর হামলা চালায়। সে পাশ্ববর্তী একটি বাড়িতে আশ্রয় নিলে তারা আশ্রয় নেয়া ঐ বাড়ি ভাংচুর করে এবং পোস্টার ও ব্যানার কেড়ে নিয়ে যায়। এসময় বাদল নামের এককর্মীকে ব্যাপক মারপিট করে।

সদরের মোগলবাসা ইউনিয়নের স্থানীয় গ্রাম পুলিশ বাহার উল্লাহ্ জানান, শনিবার গভীর রাতে একদল মুখোশধারী ব্যক্তি মই নিয়ে এসে একে একে কাপ-পিরিচ প্রতীকের সব পোস্টার ছিড়ে ফেলে। তাদেরকে বাঁধা দিতে গেলে তারা আমাকে হুমকি দেয়।
কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী পনির উদ্দিন আহমেদ আরো অভিযোগ করে বলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ জাফর আলী নিজের নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। যা নির্বাচন আচরণবিধির লংঘন। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

এব্যাপারে জেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পনির উদ্দিন আহমেদ তার নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে আমার বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ করে আসছেন। বরং স্থানীয় সংসদ সদস্যদের দিয়ে সে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। যা নির্বাচনী আচরন বিধি’র চরম লংঘন।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ দেলওয়ার হোসেন জানান, পনির উদ্দিন আহমেদের কর্মীর বাড়িঘর ভাংচুর এবং পোস্টার ছিড়ে ফেলার লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *