চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ৫৭ শতাংশ ব্যবসায়ী

Slider ফুলজান বিবির বাংলা সারাদেশ

49273e377d7dc799cdaa509f098f388b-sujan

ঢাকা; জেলা পরিষদে নির্বাচন অংশ নেওয়া চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে প্রায় ৫৭ শতাংশের পেশা ব্যবসা। আশাব্যঞ্জক হচ্ছে, প্রায় ৭০ শতাংশ প্রার্থী স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পাস। তবে প্রার্থীদের মধ্যে প্রায় এক-চতুর্থাংশের বিরুদ্ধে কোনো না-কোনো সময় মামলা ছিল বা আছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়। জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নিয়ে তথ্য উপস্থাপন উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৪৯ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেও লালমনিরহাট জেলার তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর তথ্য ওয়েবসাইটে না পাওয়ায় ১৪৬ জনের তথ্য বিশ্লেষণ করেছে সুজন।

প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার ব্যাপারে লিখিত বক্তব্য দিলীপ কুমার সরকার বলেন, ১৪৬ প্রার্থীর মধ্যে ১০২, অর্থাৎ প্রায় ৭০ শতাংশ প্রার্থী স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পাস করেছেন। এসএসসি বা এর কম শিক্ষাগত যোগ্যতা ২২ জনের। তবে প্রার্থীদের মধ্যে ১৫ জন বিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হতে পারেননি। প্রার্থীদের পেশা ব্যবসার পরেই আছেন আইনজীবীরা। মোট প্রার্থীর ২৩ জনই আইনজীবী। আর কৃষিকাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন ১৩ জন। জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে ১৫ জনের বিরুদ্ধে বর্তমানে মামলা রয়েছে। আর ৩৬ জনের বিরুদ্ধে অতীতে মামলা ছিল। আটজনের বিরুদ্ধে উভয় সময়েই মামলা ছিল।

লিখিত বক্তব্য দিলীপ কুমার সরকার বলেন, প্রার্থীদের মধ্যে ৭৬ জন বছরে পাঁচ লাখ টাকার নিচে আয় করেন। ছয়জনের বার্ষিক আয় এক কোটি টাকারও বেশি। বছরে দুই লাখ টাকার কম আয়কারী প্রার্থী রয়েছেন ১৫ জন। সুজন বলছে, নির্বাচনী হলফনামায় প্রার্থীরা যে তথ্য দিয়েছেন, তা কোনোভাবেই বর্তমান সম্পদের প্রকৃত চিত্র নয়। কারণ, প্রার্থীদের অনেকেই সম্পদের মূল্য উল্লেখ করেননি। আবার যা উল্লেখ করেছেন, সেটা অর্জনকালীন মূল্য বর্তমান বাজারমূল্য নয়।

সুজনের দেওয়া প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ১৪৬ জন প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ৫০ জন প্রার্থী আয়কর দিয়েছেন।

দিলীপ কুমার সরকার লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, স্বল্পসংখ্যক প্রার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনকে ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বলার সুযোগ নেই। ইতিমধ্যে ২২টি জেলার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বিগত পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ব্যাপকসংখ্যক মেয়র ও চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে বিভিন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে ধরনের উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়, সে ধরনের উৎসাহ-উদ্দীপনা না থাকলেও আমরা চাই, এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হোক।’

সংবাদ সম্মেলনে সুজনের সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘কয়েকজন সংসদ সদস্য ইতিমধ্যে জেলা পরিষদ নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। পত্রিকায় তাঁদের ছবিও এসেছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’

সংবাদ সম্মেলনেও আরও উপস্থিত ছিলেন সুজনের নির্বাহী সদস্য হামিদা হোসেন, সহসম্পাদক জাকির হোসেন প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *