হোয়াইট হাউজের সামনে বাংলাদেশী হিন্দুদের বিক্ষোভ

Slider গ্রাম বাংলা সারাবিশ্ব

44427_pti

 

ঢাকা; যুক্তরাষ্ট্রে হোয়াইট হাউজের সামনে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করেছেন বাংলাদেশী হিন্দুরা। এ সময়ে তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রতি বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ও তাদের বিরুদ্ধে ‘নিপীড়ন’ (পারসিউকিশন) বন্ধের আহ্বান জানান। রোববার তারা ওই বিক্ষোভ থেকে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কাছে একটি স্মারকলিপি দেন।
এতে তারা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি আপনি মহৎ এক সংবেদনশীল মানুষ। সমস্যা সমাধানের একজন মহান ব্যক্তি। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা শোচনীয় অবস্থার শিকার এ বিষয়টিতে তিনি নজর দেবেন। স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, আমরা আপনাকে অনুরোধ করে বলছি, যদি সম্ভব হয় তাহলে পরবর্তী প্রশাসনের কাছে বাংলাদেশের অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কথা পৌঁছে দেবেন। ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআইকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে দ্য ইকোনমিক টাইমস। এতে বলা হয়, ওই প্রতিবাদ বিক্ষোভের আয়োজন করে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র শাখা। এতে কয়েক ডজন প্রতিবাদকারী অংশ নিয়ে তাদের গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়ে দেন। আক্রান্তদের উদ্ধার বা অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ সরকার নিষ্ক্রিয় বলে অভিযোগ করা হয়। স্মারকলিপিতে বলা হয়, বর্তমান বাংলাদেশে হিন্দুদের বাড়িঘর, মন্দির, জমি দখল, মাঝে মাঝে হত্যা, ধর্ষণ এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলেতে পূর্ব পরিকল্পিত আরও দুটি হামলার ঘটনা প্রামাণ্য হিসেবে তলে ধরা হয়েছে। এতে ক্ষমতাসীন দলের সদস্য জড়িত। ঘটনার শিকার ব্যক্তি বা তাদের পরিবারকে কোনো সহযোগিতা বা সমর্থন দিতে কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপই নেয় নি। উল্লেখ্য, গত মাসে নিউ ইয়র্কে ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে একই সংগঠন একই রকম বিক্ষোভ করেছে। প্রতিবাদকারী শীতাংশু গুহ বলেছেন, নির্বাচনের আগে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তহবিল সংগ্রহ করা হয়েছে। এমন একটি দাতব্য সংস্থার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডনাল্ড ট্রাম্প। সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশের হিন্দুরা। আমি নিশ্চিত তিনি (ট্রাম্প) বিষয়টি আমলে নেবেন। হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশনের জয় কানসারা বলেছেন, বাংলাদেশকে আইসিসের ফাঁদে পড়া থেকে রক্ষা করা হবে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। উল্লেখ্য, ওই স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার মাঝে মাঝে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে। কিন্তু তারা প্রকৃতপক্ষে জাতি নির্মূলের পথ অনুসরণ করছে। এ ধারা প্রায় ৭০ বছর আগে চালু করেছে পাকিস্তান। স্মারকলিপিতে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়, তাই আমরা আপনার কাছে আবেদন করছি যাতে সংখ্যালঘুদের নির্মূল করে দেয়ার পথ বন্ধ করতে ও তাদের নিপীড়ন বন্ধ করার পথ অনুসরণ করে বাংলাদেশ, আপনি সে পদক্ষেপ নেবেন। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র শাখার প্রেসিডেন্ট নবেন্দু বিকাশ দত্ত বলেছেন, মহৎ আশা নিয়ে পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। আশা ছিল কোনো সাম্প্রদায়িকতা থাকবে না। কিন্তু গত ৭ বছরে আমরা বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে এ রকম ২৭৩টি ঘটনা দেখতে পেয়েছি। বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ, উদার ব্যক্তি ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর বেশ কিছু হত্যাকা- হয়েছে। সন্দেহজনক ইসলামপন্থিদের হাতে এমন শিকারে পরিণত হয়েছেন ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগার, সমকামী অধিকারকর্মী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু। জুলাইয়ে বাংলাদেশে একটি ক্যাফেতে সন্ত্রাসী হামলায় ভারতীয় একটি মেয়ে সহ মোট ২২ জন নিহত হয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *