গ্রাম বাংলা ডেস্ক: সদ্য প্রয়াত পিয়াস করিমের পক্ষ নিয়ে কথা বলার অভিযোগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে চারটি সংগঠন। একই সঙ্গে আইনমন্ত্রীকে আজ মঙ্গলবার রাতের মধ্যে ক্ষমা চাইতে বলেছে। নইলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ, কাজী আরেফ ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম ও বাংলাদেশ কৃষক পার্টি। মানববন্ধনের ব্যানারে লেখা ছিল ‘নব্য রাজাকার, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিকারী পিয়াস করিমের পক্ষ অবলম্বন করার প্রতিবাদে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কুশপুত্তলিকা দাহ’। মানববন্ধনে বক্তৃতা শেষে আইনমন্ত্রীর কুশপুত্তলিকা দাহ করেন সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা।
মানববন্ধনে কাজী আরেফ ফাউন্ডেশনের সভাপতি কাজী মাসুদ আহমেদ বলেন, ‘আইনমন্ত্রী যেভাবে কথা বলেছেন, তাতে মনে হয় পিয়াস বড় মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর বক্তব্য শুধু প্রত্যাহার করলেই চলবে না, তাঁকে জাতির কাছে আজ রাতের মধ্যেই ক্ষমা চাইতে হবে।’
অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের সভাপতি কবির চৌধুরী আইনমন্ত্রীকে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণের দাবি জানান। আর জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগের সভাপতি এম এ জলিল বলেন, ‘আইনমন্ত্রী যদি জাতির কাছে ক্ষমা না চান, তাহলে আমরা আরও কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
গত রোববার রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে ‘জুডিশিয়াল মেডিয়েশন স্কিল ট্রেনিং ফর অ্যাকটিভ জাজেস’ অনুষ্ঠান উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন আনিসুল হক। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমার জানা মতে, পিয়াস করিমের বাবা কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। স্বাধীনতার পক্ষে লিফলেট বিতরণ করায় পিয়াস করিমকে ১৯৭১ সালের মাঝামাঝি সময়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ধরে নিয়ে কুমিল্লা সার্কিট হাউসে আটকে রেখেছিল। তখন তাঁর বয়স ছিল ১৩ বছর। পরে পিয়াস করিমের বাবা আইনজীবী এম এ করিম পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শর্ত মেনে বন্ড সই দিয়ে তাঁকে ছাড়িয়ে আনেন। পাকবাহিনীর শর্ত ছিল, তারা পিয়াস করিমকে মুক্ত করে দেবে। তবে সে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কোনো কাজ করতে পারবে না, কোনো বৈঠক করতে পারবে না।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘২০-২১ বছর আগে একজন মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে এ ধরনের কথা শুনলে আমার খুব কষ্ট লাগে। পিয়াস করিম সম্পর্কে আমি যা বলেছি তা সত্য।’
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিয়াস করিম মারা যাওয়ার পর তাঁর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া ঠেকাতে আন্দোলন শুরু করে কয়েকটি সংগঠন। এ নিয়ে চরম বিতর্কের মধ্যে আইনমন্ত্রী কী কারণে এমন বক্তব্য দিলেন, তা নিয়েও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।