গাজীপুরের রাজনীতিতে হান্নান ও মান্নান কি মাইলফলক!

Slider গ্রাম বাংলা ঢাকা রাজনীতি

dsc01627

 

গাজীপুর; গাজীপুর জেলার ইতিহাসে রাজনৈতিক স্বহিংসতা, হিংসা, হানাহানি, আক্রমন, পাল্টা আক্রমন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নিকট অতীতে তেমন ছিল না। আওয়ামীলীগ সরকারের আগের মেয়াদেও তেমন কিছু ঘটিনি। তবে  চলতি মেয়াদে যা ঘটছে তা গাজীপুরের রাজনীতিতে ভবিষৎ বিপদের অশনি সংকেত বলে অনেকের ধারণা। বিশেষ করে একজন জনপ্রতিনিধি সাবেক এমপি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও একজন মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানের ক্ষেত্রে যা হচ্ছে তা যদি মাইলফলক হয় তাহলে  মান্নান গাজীপুরের আতঙ্ক হতে পারে। তা যদি হয় তবে, গাজীপুরের রাজনীতিতে ভবিষৎ শান্তিপূর্ন পরিবেশ বজায় নাও থাকতে পারে এমন ধারণা রাজনীতিকদের।

অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটিকরপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থীকে বিপুল ভোটে হারিয়ে মেয়র হন বিএনপির নেতা অধ্যাপক এম এ মান্নান। কিছুদিন পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে তাকে একের পর এক মামলা দেয়া হচ্ছে। একবার জামিনে মুক্তি পেলেও আবার তাকে গ্রেফতার করা হয়। উচ্চ আদালতে জামিন আর পুলিশেল মামলা দেয়ার প্রতিযোগিতা চলছে এখন। জামনি হওয়ার পর আবারো মামলা দেয়ায় মুক্তি মিলছে না অধ্যাপক মান্নানের। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে ২৯টি মামলা দেয়া হয়েছে।

অধ্যাপক মান্নানের পরিবার ও তার দল বলছে, জামিন দিয়েও মুক্তি না দেয়ায় কারাগারে গুরুতর অসুস্থ অধ্যাপক এম এ মান্নান জীবন শংকায় পড়েছেন।  এই অবস্থা চলতে থাকলে কারাগারে তার অকাল মৃত্যু হতে পারে বলে আশংকা করছেন তারা।

ইতিহাস বলছে, বিগত সময়ে গাজীপুরে রাজনৈতিক মামলা হামলা ও হয়রানী হয়েছে। সরকারী দল বিরোধী দলের উপর নির্যাতন  নীপিড়ন করেছে। বর্তমান অবস্থার মত হয়নি অতীতে। জেলার প্রথম সারির নেতারা মামলা ও কারাবাস করেছেন কম।অতীতে গাজীপুর জেলায় আওয়ামীলীগ ও বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে জেল খেটেছেন অনেক কম। কিন্তু বিএনপি নেতাদের মধ্যে প্রথম সারির প্রায় অনেক নেতাই জেল খাটছেন।

বিএনপির আমলে আহসান উল্লাহ মাষ্টার নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন। এই খুনের নেপথ্যে রাজনৈতিক কারণ না অন্য কোন কারণ তা নিয়ে জল্পনা কল্পনাও আছে।  যাই হউক , আহসান উল্লাহ মাষ্টারের খুনীরা বিচারের অপেক্ষায় কারাগারে রয়েছেন এটা গাজীপুরের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি ভাল লক্ষন। যত দ্রুত সম্ভব এই রায় কার্যকরা হওয়া উচিত। তবে  আওয়ামীলীগের আমলে বিএনপির এমন কোন নেতা খুন হয়নি এটাও সঠিক।

বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনায়  রাজনৈতি নেতারা বলছেন,  অধ্যাপক মান্নান জনপ্রিয় হওয়ায় তাকে যে ভাবে মেয়রের চেয়ার ছাড়া করে জেল খাটানো হচ্ছে এটা গাজীপুরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নজীর। এই নজীর যদি মাইলফলক হয়, তাহলে  গাজীপুরের রাজনীতি ভবিষৎ এরচেয়েও খারাপ হয়ে যেতে পারে।

এ ছাড়া গাজীপুরের সাবেক এমপি, সাবেক মন্ত্রী ব্রি; জে; আ স ম হান্নান শাহর মৃত্যু নিয়েও রাজনৈতিক টানাপোড়েন রয়েছে। দল ও তার পরিবার বলছে, হাজিরা দিতে যাওয়ার সময় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ঘটনা সঠিক হউক বা না হউক হান্নান শাহর মৃত্যুতে রাজনৈতিক স্পর্শ পড়ে গেলো এটা সঠিক। ফলে আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে গাজীপুর জেলা বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেলেন ও আর একজন শীর্ষ নেতা কারাগারে অসুস্থ হয়ে আছেন। আল্লাহ না করুক যদি হান্নান শাহ’র মত মান্নানেরও এই অবস্থা হয়, তাহলে গাজীপুরের রাজনীতি ভবিষৎ বিপদের অশনি সংকেতে পড়ে থাকবে এমন অভিমত রাজনীতি সচেতন মানুষদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *