গণভোটে হেরে পদত্যাগের ঘোষণা ইতালির প্রধানমন্ত্রী রেনজির

Slider সারাবিশ্ব

43342_lead

 

 

ডেস্ক রিপোর্ট; যেমনটি ভাবা হয়েছিল তা-ই ঘটলো। সংবিধান সংস্কার নিয়ে গণভোটে হেরে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী ম্যাথিও রেনজি।

বাংলাদেশের স্থানীয় সময় আজ সোমবার ভোরে এক সংবাদ সম্মেলনে পরাজয় স্বীকার করে নেন রেনজি। তার দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থকদের উদ্দেশে বললেন, এ পরাজয় শুধুই আমার। এটা আপনাদের পরাজয় নয়। এক্সিট পোল বা বুথ ফেরত ভোটের রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডলারের বিপরীতে পড়ে গেছে ইউরোর দাম। নির্বাচনে শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ ভোট পড়েছে। এর মধ্যে সংবিধান সংস্কারের পক্ষে অর্থাৎ ‘হ্যাঁ’ ভোট পড়েছে শতকরা ৪০ ভাগ। ‘না’ ভোট পড়েছে শতকরা ৬০ ভাগ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়, তিনি স্থানীয় সময় আজ বিকালে মন্ত্রীপরিষদের একটি বৈঠক ডাকবেন। সেখানে তাদেরকে জানাবেন তিনি পদত্যাগ করছেন। এরপর তিনি ইতালির প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। তিনি আরও বলেছেন, তিনি যে সংস্কার প্রস্তাব করেছিলেন সেটা পাস হলে ইতালিতে আমলাতান্ত্রিকতা কমে যেতো। ইতালি হতো আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি দেশ। কিন্তু গণভোটের ফল তার সে স্বপ্নকে ধুলিস্মাৎ করে দিয়েছে। ইতালির রাজধানী রোম থেকে বিবিসির ইউরোপ বিষয়ক সম্পাদক কাতিয়া আদলার বলছেন, রোববারের রাতটি ইতালির নেতাদের কাছে ছিল নির্ঘুম। ইতালির এ পরিস্থিতি তাদের মধ্যে এক কঠিন অস্বস্তিকর অবস্থা সৃষ্টি করেছে। গণভোটের ফল নিয়ে তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। বিশেষ করে ব্রাসেলসের তো আছেই। ইউরোপের ভবিষ্যতদর্শী বলে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অবশিষ্ট ছিলেন রেনজি। এখন কে বা কারা ইউরোপের এককত্বের হাল ধরে রাখবেন তা দেখার বিষয়। ফ্রান্সের পরিস্থিতিও ঘোলাটে। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল নানামুখি সঙ্কট ব্যবস্থাপনা নিয়ে ব্যস্ত। এ সময়ে ম্যাথিও রেনজি আর ক্ষমতায় থাকছেন না। ফলে আজ সকালটায় ইতালির মানুষ এক আতঙ্ক নিয়ে ঘুম থেকে উঠবেন। তাদের সামনে ব্যাংকিং খাত নিয়ে সঙ্কট, রাজনৈতিক টালমাতাল পরিস্থিতি, সরকার বিরোধী একটি গ্রুপ সরকারযন্ত্রে কলকাঠি নাড়বে। এখানে পপুলিস্ট বা জনপ্রিয় হিসেবে উঠে এসেছে ফাইভ স্টার মুভমেন্ট নামে একটি দল। তারা বলেছে, রেনজি পদত্যাগ করলে সরকার চালাতে প্রস্তুত তারা। এ দলের এক নেতা লুইগি ডি মাইও বলেছেন, আগামি দিন থেকেই ফাইভ স্টার সরকার কাজ করবে। এ দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন কমেডিয়ান বেপ্পে গ্রিলো। তার নেতৃত্বেই গণভোটে ‘না’ শিবির প্রচারণা চালিয়েছিল। নর্দার্ন লিগ নামে অভিবাসন বিরোধী নেতা ম্যাথিও সালভিনি গণভোটকে বলেছেন, জনগণের বিজয়। এরই মধ্যে ইউরোপের ডানপন্থি নেতারা তাদের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন। ফ্রান্সের ফ্রন্ট ন্যাশনাল নেতা মেরি লি পেন টুইটে নর্দার্ন লিগকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ওদিকে, ইউরোজোন সতর্ক। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্ক। অভিন্ন মুদ্রা হিসেবে ইতালিতে ব্যবহার করা হয় ইউরো। এক্ষেত্রে ইউরোর তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি ইতালিতে। কি হবে ওই অঞ্চলের অর্থনীতির চেহারা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভবিষ্যতই বা কি তা নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বিশ্লেষণ শুরু করে দিয়েছে। এর মধ্যে আগামী বছর ফ্রান্স, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসে নির্বাচন। বৃটেনের পর ইতালিতে যে ‘পপুলিস্ট’দের উত্থান দেখা যাচ্ছে তা যদি বাকি দেশগুলোতে দেখা দেয় তাহলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *