শ্রীপুরে বেপরোয়া ড্রাম ট্রাকের তা-বে অতিষ্ট এলাকাবাসী

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

dsc_0959

 

রাতুল মন্ডল, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটীর তালতলী, টেংরা,সাইটালিয়া,ছাতির বাজারসহ কয়েকটি গ্রামে অধিক ওজনের মাটি বোঝাই ড্রাম ট্রাকের তা-বে অতিষ্ট এলাকাবাসী।

সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সরকারি বনের মাটি তাদের নিজেস্ব পরিবহন যোগে উপজেলার বিভিন্ন শিল্পকারখানায় সাপ্লাই দিয়ে থাকে। একালার মেঠো পাকা সড়কে যেখানে দু’টি রিক্সাই ক্রস করতে পারে না। সেখানে তারা ১২ টন ওজনের ড্রাম ট্র্রাক দিয়ে মাটির রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে এলজিইডির গ্রামের পাকা সড়ক গুলো এখন মাটির সড়কে পরিণত হয়েছে। টেংরা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের রাস্তা থেকে ছাতির বাজার, সাইটালিয়ার প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা, অধিক ওজনের ড্রাম ট্রাকের কবলে পরে পাকা স্লিপার উঠে মাটির আর ইটের খোয়ায় ভরে গেছে। হরহামেশাই ড্রাম ট্রাকের বেপরোয়া চলাচলে ধুলোবালি উড়ে রাস্তার পাশে থাকা সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ির ভিতরে ঢুকে আসবাব পত্র থেকে শুরু করে বিছানা, খাবার জিনিস পত্রেও বালি ভরে একাকার হয়ে যায়। রাস্তায় চলাচলকারী কলকারখার শ্রমিক, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রসূতি নারীসহ সাধারণ মানুষের ভূগান্তির যেন শেষ নেই। এমন ভূগান্তি পোহাচ্ছে বহুদিন ধরে ওই গ্রামের মানুষ গুলো। এর কোন প্রতিকার নেই বললেই চলে। প্রশাসনের দিক থেকে তেমন কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে যায় মাটি ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তালতলী গ্রামের জয়নাল হাজারী মাটি ব্যবসায়ী এবং তার ড্রাম ট্রাকের তা-বেই এসব ভূগান্তি। উল্লেখ্য: তার কাছে নাকি বন কর্মকর্তারাও তুচ্ছ। কারণ বনের মাটি চুরি করার সময় স্থানীয় সাতখামাইর বিট কর্মকর্তা বাধা দিলে তাকেও ব্যধম পারপিট করে সে। এ বিষয়ে ওই বিট কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করে। তাতেও সে থেমে নেই ঠিকই মাটির রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এমন আরেক ব্যবসায়ী সাইটালিয়া গ্রামের শহীদ মিয়া সে জয়নালের সহযোগী।

টেংরা গ্রামের নূরে আলমের ছেলে হাবিবুর রহমান জানান, সকালের নাস্তা খাওয়ার সময় হঠাৎ করে একটি ড্রাম ট্রাক এসে আমার বাসার পাশ দিয়ে বেপরোয়া ভাবে চলে যায়। পরে দেখি আমার ভাতের প্লেটে ধুলোবালি দিয়ে ভরে গেছে। এখন আমাদের এই এলাকায় থাকায় মশকিল হয়ে পরেছে।
রাস্তায় চলাচল করা পোশাক কারখানার শ্রমিক ছালমা আক্তার জানান, ডিউটিতে যাওয়ার সময় ট্রাকের বেপরোয়া চলাচলে ধুলোবালি দিয়ে জামা কাপড় নোংরা হয়ে যায়। পেটের ভেতর ঢুকে যায় সব বালি কণা।

এধরণের বালিকণা মানুষের ফুসফুস জনিত জঠিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে বলে জানান শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. এসএম মাহমুদুল হাসান। তিনি আরো বলেন, নিউমোসিয়া, নিউমোনিয়াসহ আরো অনেক রোগে আক্রান্ত হতে পারে এই ধুলি কণার জন্য।
এ বিষয়ে জয়নাল হাজারীর সাথে মোঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আপনাদের সাথে দেখা করবো। ড্রাম ট্রাক আর অবৈধ মাটি ব্যবসার কথা এড়িয়ে যান তিনি। তার সহযোগী শহীদের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।

এবিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. সুজায়েত হোসেন বলেন, আমরা অধিক ওজনের ড্রাম ট্রাক বন্ধের জন্য অভিযান চালানোর জন্য সব প্রস্তুতি নিয়েছি। কোন ব্যক্তি নির্দিষ্ট ভাবে এলজিইডির রাস্তা ঘাট নষ্ট করার সাথে জড়িত থাকলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে।

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, এলইজিডি বা সংশ্লিষ্ট কোন দপ্তর থেকে কোন নির্দেশনা আসলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *